আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে ৫০০ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের ওপর
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের দ্বিতীয় বার্ষিকী উপলক্ষ্যে রাশিয়ার ৫০০টিরও বেশি ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার সামরিক শিল্প কারখানা ও সেগুলোর সঙ্গে জড়িত অন্যান্য দেশের বিভিন্ন কোম্পানিও এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে।
গেলো বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ডেপুটি মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি ওয়ালি অ্যাডেইমো এই তথ্য জানান।
তিনি জানান, রাশিয়ার সামরিক শিল্প কারখানা ও সেগুলোর সঙ্গে জড়িত অন্যান্য দেশের বিভিন্ন কোম্পানিও এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। এসব কোম্পানি রাশিয়াকে তার চাহিদা অনুযায়ী পণ্য পেতে সহায়তা করে বলেও দাবি করে যুক্তরাষ্ট্র।
রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির মৃত্যুর জন্যও দেশটির জবাবদিহি চায় বলে ওয়ালি অ্যাডেইমো বলেন, শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্র শত শত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। তবে আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে যে যুক্তরাষ্ট্র একা এসব পদক্ষেপ নিচ্ছে না। নিষেধাজ্ঞা ও রফতানি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রাশিয়ার অর্থনীতির গতিকে বাধাগ্রস্ত করা হবে, যাতে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে রাশিয়াকে বেগ পেতে হয়। ইউক্রেন যুদ্ধ ও রুশ বিরোধী দলীয় নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনির মৃত্যুতে রাশিয়াকে জবাবদিহি করতে চায় ওয়াশিংটন।’
ডেপুটি মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি বলেন, ইউক্রেনের শক্তি ও তাদের আত্মরক্ষার ক্ষমতা বাড়াতে কংগ্রেসের উচিত ইউক্রেনকে অস্ত্রসহ প্রয়োজনীয় সহায়তার বিষয়টি নিশ্চিত করা। ২০২২ সালে ইউক্রেনে ‘সামরিক অভিযান’ শুরু করার পর যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো রাশিয়ার ওপর কয়েক হাজার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এবারের নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজটি তার সর্বশেষ ধাপ।
মার্কিন কংগ্রেস কিয়েভের জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তা সহায়তা অনুমোদন করবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা রাশিয়ার ওপর চাপ বজায় রাখার সিদ্ধান্তে অটল। আর সে জন্যই নতুন এ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা।
বাইডেন প্রশাসন এরইমধ্যে ইউক্রেনের জন্য পূর্বের অনুমোদিত সব অর্থ শেষ করে ফেলেছে। তাছাড়া, রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে ইউক্রেনের জন্য অতিরিক্ত তহবিল গঠনের অনুরোধ স্থগিত রয়েছে। মস্কোর আক্রমণ বন্ধ করার জন্য নিষেধাজ্ঞাগুলো যথেষ্ট নয় সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে গত বছরের ডিসেম্বরে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট দাবি করেছিল, নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০২২ সালে রাশিয়ার অর্থনীতি ২ দশমিক ১ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাবিষয়ক প্রধান অর্থনীতিবিদ র্যাচেল লিঙ্গাস ট্রেজারির ওয়েবসাইটে বলেছেন, আগের পূর্বাভাসের চেয়েও ৫ শতাংশ কমেছে রাশিয়ার অর্থনীতি।
তবে অন্যান্য পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রত্যাশার চেয়েও ভালো চলছে রাশিয়ার অর্থনীতি। ২০২৩ সালে ৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির পর গত বছরের অক্টোবর থেকে ১ দশমিক ৫ শতাংশ পয়েন্ট বেড়েছে রাশিয়ার। এসব পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে ২০২৪ সালে রাশিয়ার ২ দশমিক ৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
এএম/
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//