খুলনা
অভিমান করে দুই মাস আত্মগোপনে ছিলেন গৃহবধূ
ঝিনাইদহে গেলো ২৭ ডিসেম্বর ইভা খাতুন (২০) নামে এক গৃহবধূ স্বামী ও বাবা-মায়ের ওপর অভিমান করে বাড়ি ছাড়েন। টানা ২ মাস জেলা শহরে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন। এদিকে মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে প্রথম থানায় লিখিত অভিযোগ, পরে মামলা করেন ইভার বাবা। পরে তথ্য-প্রযুক্তিসহ নানা উপায় ব্যবহার করেও ওই নারীকে খুঁজে পায়নি পুলিশ। শেষ পর্যন্ত অভিমান ভেঙে নিজেই নিজের অবস্থান জানান ইভা। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
গতকাল রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে ঝিনাইদহ শহরের কাঞ্চনপুর এলাকা থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়।
ইভা হরিণাকুণ্ডু উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের তরিকুল ইসলামের স্ত্রী এবং শৈলকুপা উপজেলার গোয়ালখালি গ্রামের আলমগীর হোসেনের মেয়ে।
জানা গেছে, গেলো ২৭ ডিসেম্বর ভোরে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় ইভা। এ ঘটনায় পরদিন (২৮ ডিসেম্বর) ইভার বাবা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এ ছাড়া গেলো ৫ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইভার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়িসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মেয়েকে গুম করা হয়েছে দাবি করে মামলাও দায়ের করেন।
ইভার বাবা আলমগীর হোসেন বলেন, ঘটনার আগের দিন রাতে ইভা মোবাইল ফোনে আমার এবং ওর মায়ের সঙ্গে কথা বলে। সে বাড়িতে যেতে চাইলে আমরা তাকে না করি। এ নিয়ে তার সঙ্গে আমাদের মনোমালিন্য হয়। পরদিন ভোরে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। এরপর দীর্ঘদিন খুঁজেও তাকে পাওয়া যায়নি। এরই মধ্যে রোববার সন্ধ্যায় ইভা আমাকে মোবাইল ফোনে জানায়, সে ঝিনাইদহ শহরের একটি বাসায় আছে। আমি বিষয়টি পুলিশকে জানাই।
হরিণাকুণ্ডু থানার এসআই মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, ওই গৃহবধূ স্বামী ও বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে অভিমানে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরে পুলিশ নানাভাবে তাকে খুঁজেছে। রোববার তার বাবার মাধ্যমে খোঁজ পেয়ে ঝিনাইদহ শহরের একটি বাসা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
ওসি মো. জিয়াউর রহমান বলেন, ওই গৃহবধূ শ্বশুরবাড়ি থেকে বেরিয়ে ঝিনাইদহ শহরে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ওঠে। সেখানে গত দুই মাস ধরে কাজ করত।
তিনি আরও বলেন, স্বামী ও বাবা-মায়ের ওপর অভিমান করে সে নিজেই আত্মগোপনে ছিল। তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারসহ নানা উপায়ে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছে পুলিশ। পরে তার বাবার মাধ্যমে খোঁজ পেয়ে রাতে তাকে উদ্ধার করা হয়। মামলা থাকায় তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
খুলনা
কুষ্টিয়া কারাগার থেকে পালাল অর্ধশতাধিক আসামি
কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে অন্তত অর্ধশতাধিক আসামি পালিয়েছে গেছেন বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শতাধিক রাউন্ড গুলি ছোড়েন কারারক্ষীরা। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন কারারক্ষী আহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে এই ঘটনার পর সেনাসদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন।
তবে জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা গণমাধ্যমে বলছেন, ১২-১৩ জনের মতো আসামি পালিয়েছেন। পলাতকদের তালিকা করার পর বিস্তারিত জানানো যাবে।
কারা সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী জামিন পান। দুপুর আড়াইটার দিকে বের হওয়ার কথা ছিল। তাদের সঙ্গে বের হতে হট্টগোল শুরু করেন কারাবন্দীরা। এ সময় কারারক্ষীরাও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি চালান। তবে এর আগেই অর্ধশত আসামি পালিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কুষ্টিয়া কারাগারের জেলার আবু মুসা গণমাধ্যমে জানান, কারাগার থেকে ঠিক কত জন কয়েদি পালিয়ে গেছে তা সঠিক হিসাব জানা যায়নি।
এএম/
খুলনা
মাগুরায় ছাত্রদল নেতা নিহত, আহত ১০
কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে মাগুরা শহরের ঢাকা রোড়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় জেলা শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী নিহত হয়েছেন। এছাড়াও আহত হয়েছেন পুলিশের তিন সদস্যসহ ১০ জন।
রোববার সকাল ১১টার দিকে এ সংঘর্ষে ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সকাল ১১টার দিকে পারনান্দুয়ালী এলাকা থেকে বিএনপি একটি মিছিল নিয়ে শহরে ঢুকতে গেলে পুলিশি বাধার সম্মুখিন হয়। ঘটনাস্থলে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইট পাটকেট নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশ তাদের ধাওয়া করে রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও গুলি করলে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদেী হাসান রাব্বী নিহত হন।
জেলা শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুর রহিম গণমাধ্যমকে জানান, ‘রাব্বি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। তার বুকে গুলি লেগেছে।’
মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আমর প্রশাদ বিশ্বাস জানান, আহত তিন পুলিশ সদস্যসহ ১০ জনকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেডএস/
খুলনা
কনস্টেবল সুমন হত্যায় মামলা, অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামি ১২০০
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় খুলনায় পুলিশ কনস্টেবল সুমন ঘরামী হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
লবণচরা থানার এসআই মোস্তফা সাকলাইন বাদী হয়ে শুক্রবার (২ আগস্ট) রাতে লবণচরা থানায় মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার নেই বলে জানান লবণচরা থানার ওসি মমতাজুল হক।
এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে শুক্রবার বিকেলে ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানায় আলাদা দুটি মামলা হয়েছে।
নিহত সুমন ঘরামীর বাড়ি বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলায়। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন নগরীর বয়রা এলাকায়। তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী কমিশনার সৌমেন বিশ্বাসের দেহরক্ষী ছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনার মোহাম্মদনগর এলাকায় পিটুনিতে নিহত হন তিনি। সমুনের স্ত্রী মিতু বিশ্বাস। তাদের ৬ বছর বয়সি স্নিগ্ধা নামে এক মেয়ে রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত্তি দিয় পুলিশ জানায়, বিকেলে খুলনায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। সন্ধ্যার পরে আবার সোনাডাঙ্গা এলাকায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা।
সংঘর্ষের এ ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল সুমন গুরুতর আহত হন। পরে রাতে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। জানা গেছে, এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশের আরও ৩০ সদস্য।
এসি//