অর্থনীতি
গরুর মাংসের দাম কেজি প্রতি পৌনে ৬ লাখ টাকা!
একটি গরুর দাম সাড়ে তিন কোটি টাকারও বেশি। এই জাতীয় গাভীর মাংসের দাম আরও বেশি। বেশ সুস্বাদু এবং নরম মাংসও থাকে বেশি। এর মাংস এতো নরম যে মুখে দিলেই গলে যাবে। বাংলাদেশে যেখানে ৭০০ টাকায় মিলে এক কেজি গরুর মাংস, সেখানে ওই গুরুর মাংস কিনতে পকেট থেকে চলে যাবে অর্ধলক্ষ টাকা। আর ফ্রান্সে ওই গরুর এক কেজির দাম একসময় ছিলো ৫৩০০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় পৌনে ৬ লাখ টাকার বেশি। বলা হচ্ছে জাপানের ওয়াগিউ গরুর মাংসের কথা।
ওয়াগিউ শব্দটির অর্থ হচ্ছে জাপানের গরু। জাপানি ভাষায়, ‘ওয়া’ মানে জাপান এবং ‘গিউ’ হলো গরু। সারাবিশ্বে ওয়াগিউ বলতে এক বিশেষ প্রজাতির গরুর মাংসকে বোঝায়। যা অন্যান্য মাংসের তুলনায় ভিন্ন। শুধু স্বাদের দিক থেকেই নয়, এই ভিন্নতা রয়েছে রঙ আর ঘ্রানের দিক দিয়েও। মাংসের পরতে পরতে ফ্যাট, নরম ও তুলতুলে মাংস। স্বাদের জন্য ওয়াগিউ মাংস সারাবিশ্বে খুবই সমাদৃত একটি খাবার।
ওয়াগিউর চারটি প্রধান গরুর মাংসের ব্র্যান্ড হল মাতসুসাকা গরুর মাংস, কোবে গরুর মাংস, ইয়োনেজাওয়া এবং ওমি গরুর মাংস। এসব গরুর সবগুলোই জাপানি কালো জাতের। এসব গরু জাপানের কিয়োশো দ্বীপের মিয়াজাকি অঞ্চল থেকে আসে।
ওয়াগিউ গরুর একটি বিশেষ বৈশিষ্ঠ্য হলো এর মাংসের মধ্যেই চর্বিগুলো সংযুক্ত থাকে। অনেকটা গাছের শিকড়ের মতো। একে ইন্ট্রা-ম্যাসকুলার ফ্যাট বলা হয়। মাংসে থাকা চর্বিগুলো এতই নরম যে হাতের স্পর্শেই গলে যায়। মাংসের ধরন ও কাটার ধরনের ওপর আদর্শ তাপমাত্রা ভিন্ন হয়ে থাকে। অন্যান্য গরুর মাংসের স্টিক বা রোস্ট রান্নার জন্য যেখানে আদর্শ তাপমাত্রা ১৪৫ ডিগ্রি ফারেহাইট বা ৬৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস প্রয়োজন হয়। সেখানে মাতসুসাকা ওয়াগিউ গরুর মাংস রান্না করা যায় মাত্র ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়।
জাপানে সাধারণত এ বি সি-এই তিনটি মানের উপর ভিত্তি করে ওয়াগিউ মাংস নির্ধারণ করা হয়। চর্বির পরিমাণ, স্বাদ ও গন্ধের উপর ভিত্তি করে এই মানগুলো নির্ধারিত হয়। এ-ফাইভ ওয়াগিউকে সবচেয়ে উঁচু মানের ওয়াগিউ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। জাপানের বাইরে প্রথম বারের মতো ফ্রান্সের প্যারিসে ওয়াগিউ মাংস রপ্তানী করা হয়। সেখানে ১০০ গ্রাম এ-ফাইভ ওয়াগিউ মাংস বিক্রি হয়েছিলো ৫৩০ মার্কিন ডলার। এই হিসেবে এক কেজি মাংসের দাম উঠেছিলো বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকার বেশি। ওয়াগিউ গরু এতোই মূল্যবান যে, ২০০২ সালে জাপানের এক নিলামে একটি ওয়াগিউয়ের দাম ৫ কোটি ইয়েন বা ৩ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার দাম উঠে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৩ কোটি ৬২ লাখ ৫৪ হাজার টাকা।
ওয়াগিউ মাংসের দাম বেশি হওয়ার কারণ এসব গরু প্রতিপালনের খরচ অনেক বেশি। ওয়াগিউ মাংস হিসেবে গণ্য হওয়ার জন্য সরকারি কঠোর নিয়ম-নীতি মেনে এই গরুগুলোকে লালন-পালন করতে হয়। গরুগুলোর পেশীর পরতে পরতে যাতে চর্বি জমে। এরজন্য সারাবছর বাছুরগুলোকে বিশেষ ধরনের খাবার খাওয়ানো হয়। একটিপ্রাপ্তবয়ষ্কওয়াগিউ দৈনিকপ্রায়বিশথেকেত্রিশকেজিখাবার খায়। পেশীতেচর্বিবাড়ানোরজন্য এসব খাবার সহায়ক ভূমিকা্ রাখে। এছাড়াও ওয়াগিউ গরুর খাবারের মেন্যু হিসেবে থাকে পুষ্টিকরঘাস, খেড়, গম, ভুট্টাও অন্যান্য উপাদানমিশ্রিত খাবার। কিছু অঞ্চলে গরুকে রাইস ওয়াইন বা চাল দিয়ে বানানো মদ খেতে দেয়া হয়। গরুর রুচি বাড়াতে এটি করা হয়।
তবে জাপান ছাড়াও আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশ ওয়াগিউ গরু উৎপাদনে চেষ্টা চালাচ্ছে।প্রতি কেজি অস্ট্রেলিয়ান ওয়াগিউ বিক্রি হয় ৫ থেকে ৯হাজার টাকায়।অন্যদিকে, ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে মার্কিন ওয়াগিউ মাংস। তবে স্বাদ ও মানের দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া চেয়ে অনেক অনেক পিছিয়ে। তাই আসল ওয়াগিউ মাংসের স্বাদ পেতে নির্ভর করতে হবে জাপানের উপর।
অর্থনীতি
বাংলাদেশের পাশে থাকবে আইএমএফ
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। দেশের এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে শপথ নেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। চলমান পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের পাশে থাকতে আইএমএফ ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘প্রাণহানি ও মানুষের আহত হওয়ার ঘটনায়’ আইএমএফ গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে। তারা বাংলাদেশ ও দেশটির মানুষের প্রতি সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে সংস্থাটি পাশে থাকবে।
এর আগে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি ডলারের একটি ঋণ অনুমোদন দেয় আইএমএফ। ইতোমধ্যেই তিন কিস্তিতে ২৩০ কোটি ৮২ লাখ ডলার ছাড় করেছে আইএমএফ। আর ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে সংস্থাটির।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেশের জিডিপির প্রায় এক-চতুর্থাংশের সমতুল্য। সুতরাং, তাদের সমর্থন বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এসি//
অর্থনীতি
আজ ব্যাংক থেকে এক লাখের বেশি টাকা তোলা যাবে না
শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠান আজ (০৮ আগস্ট)। সে জন্য নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের সীমা আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক হিসাব থেকে এক লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না। তবে এ সিদ্ধান্ত শুধু আজকের জন্য প্রযোজ্য হবে।
বুধবার (০৭ আগস্ট) রাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা এমডিদের এক জরুরি বার্তায় এ নির্দেশনা দিয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) এক হিসাব থেকে এক লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না। তবে যেকোনো পরিমাণ নগদ টাকা স্থানান্তর ও ডিজিটাল লেনদেন করা যাবে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক আজকের জন্য প্রধান কার্যালয় থেকে শাখায় টাকা দেয়া বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি গ্রাহকদের চেকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সরকার পরিবর্তনের পর নগদ টাকা উত্তোলনের চাপ বেড়েছে। এসব অর্থ যাতে কোনোভাবেই সন্ত্রাসী বা অবৈধ কাজে ব্যবহৃত না হয়, সে জন্য নগদ টাকা উত্তোলন কিছুটা নিরুৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ধারাবাহিকতায় গত রাতে এ সিদ্ধান্ত জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশে কোনো সরকার নেই এবং আজ নতুন সরকার গঠিত হচ্ছে। এই সময়ে কেউ যাতে নগদ টাকা নিয়ে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে না পারে, সে জন্যই এই সিদ্ধান্ত।’
এসি//
অর্থনীতি
এনবিআর চেয়ারম্যানকে বরখাস্তের দাবিতে বিক্ষোভ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে বরখাস্তের দাবিসহ ৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।আর বিক্ষোভের মধ্যেই চেয়ারম্যানের পদত্যাগের গুঞ্জন চলছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকেই এনবিআর এর প্রধান কার্যালয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
এনবিআরের কর্মচারীরা জানান, তারা দীর্ঘ দিন থেকে তাদের নানা দাবি ও অসুবিধা এনবিআর চেয়ারম্যানকে জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এসব দাবি তিনি পূরণ করেন নাই। বাইরের ক্যাডারের কর্মকর্তারা এনবিআর কর্মচারীদের কষ্ট বুঝতে চান না। তাদের ইচ্ছে মত করে চালাতে চান, সেটা কতটা যৌক্তিক তা ভেবে দেখার এটাই উপযুক্ত সময়।
এসময়ে আন্দোলনরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ৯ দফা দাবি জানান।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১। প্রশাসন ক্যাডার থেকে কোনো কর্মকর্তা প্রেষণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পদায়ন করা যাবে না।
২। স্বৈরাচারী শাসকের ঘনিষ্ঠ সহচর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে অবিলম্বে পদ থেকে বরখাস্ত করে আয়কর/কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ক্যাডার থেকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দিতে হবে।
৩। অবিলম্বে স্বৈরাচারী চেয়ারম্যানের দোসর এবং প্রিয়পাত্র প্রথম সচিব (কর প্রশাসন) মো. শাহিদুজ্জামানকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করে কর ক্যাডারের কর্মকর্তা পদায়ন করতে হবে।
৪। দুই বছর পর পর বদলি বাণিজ্য বন্ধ করে আয়কর আইন-২০২৩ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং আয়কর আদায়ের স্বার্থে অতীতের মতো রাজস্ব বান্ধব এবং প্রযোজ্যতা সাপেক্ষে বদলি করতে হবে।
৫। অবৈধ নিয়োগ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।
৬। সব কর্মচারীদের পদায়ন কর্মচারীদের জন্য প্রণীত জ্যেষ্ঠতা বিধিমালা ও আইন অনুযায়ী করতে হবে।
৭। আয়কর অনুবিভাগের ১০তম-২০তম গ্রেডের সব শূন্য পদে পদোন্নতি দিতে হবে এবং সব পদ পদোন্নতিযোগ্য হতে হবে, কোনো পদ ব্লক রাখা যাবে না।
৮। কর্মচারীদের নিজ নিজ অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে পরামর্শ করে কর্মচারীদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে, অন্যথায় কোনো সিদ্ধান্ত মানা হবে না।
৯। সর্বশেষে আয়কর অনুবিভাগের সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ের সিদ্ধান্ত শুধু আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা/কর্মচারীরা নেবে।
আই/এ