জাতীয়
পদ্মা সেতু চালু হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বন্দরে বহির্বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে
২৫ জুন দীর্ঘ-প্রতিক্ষিত পদ্মা সেতু চালু হতে যাচ্ছে। এর ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বন্দরগুলোর মাধ্যমে বহির্বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও সুন্দরবন একাডেমির পরিচালক প্রফেসর আনোয়ারুল কাদির গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পদ্মাসেতু চালু হলে মোংলা সমুদ্রবন্দর আরও কর্মতৎপর হবে।’ পদ্মা সেতু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিনিয়োগে ব্যাবসায়ীদেরও আকৃষ্ট করবে।
তিনি বলেন, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং বেনাপোল ও ভোমরা স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণও বাড়বে। এছাড়াও পদ্মা সেতু অঞ্চলটিতে নতুন শিল্প স্থাপনে ব্যবসায়ীদের প্রলুব্ধ করবে।
এই শিক্ষাবিদ বলেন, ‘একইসঙ্গে খুলনা অঞ্চল অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠবে। এখন এই অঞ্চলের বিদ্যমান সড়কগুলোকে পরিকল্পিতভাবে সম্প্রসারিত করতে হবে।’
খুলনা নগরীর ময়নাপোতা এলাকার পোলট্রি ব্যবসায়ী মানিক শেখ বলেন, পদ্মাসেতু দেশের শ্রেষ্ঠ অর্জন। এই সেতু নির্বাণের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জনগণকে, বিশেষত দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় বাসিন্দাদের তাঁর কাছে ঋণী করে গেলেন। মানিক আশা করেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনা অঞ্চলের অপ্রশস্ত রাস্তাগুলো সম্প্রসারিত করে পরিকল্পিত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। এই অঞ্চলের মানুষ শেখ হাসিনার উপর আস্থাশীল। তিনি নিজেও এই অঞ্চলের উন্নয়নের ব্যাপারে আন্তরিক।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সাদিয়া আফরিন বলেন, পদ্মাসেতু চালু হলেও খুলনায় একটি বিমানবন্দরের দাবি শেষ হয়ে যায়নি। আর অধিকসংখ্যক দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারী ও পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে রামপালে নির্মাণাধীন বিমানবন্দরের কাজ চালিয়ে যাওয়া উচিৎ।
খুলনা শপিং কমপ্লেক্সের মোবাইল যন্ত্রাংশ বিক্রেতা খাইরুজ্জামান সজিব বলেন, পদ্মাসেতুকে কেন্দ্র করে খুলনা অঞ্চলে একটি শিল্প-বিপ্লব হতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকারের এখন খুলনায় বন্ধ থাকা পাট, টেক্সটাইল, নিউজপ্রিন্ট ও হার্ডবোর্ড মিলগুলো পুনরায় চালু করতে পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও খুলনা জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের পূর্বাঞ্চলকে এর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় অংশের সঙ্গে যুক্ত করবে। পদ্মা সেতুর টোল পুনর্বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, একবার সেতু চালু হয়ে গেলে, এ অঞ্চলের বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন সহজ হবে ও ট্রানজিট সুবিধা বাড়বে। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করতে এখানে আসবেন। তিনি বলেন, খুলনায় এখন একটি বিমান বন্দর স্থাপন করা জরুরি, কারণ তাতে সুন্দরবন-কেন্দ্রিক পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে এবং বিদেশিরা মংলা ইপিজেডে বিনিয়োগ করতে আসবে। পদ্মা সেতু নিয়ে দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র রয়েছে উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, দেশের মেগা প্রকল্পগুলো নিয়ে কারো রাজনীতি করা উচিত নয়।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ