চট্টগ্রাম
ব্ল্যাকমেইলে জড়িত সন্দেহে কক্সবাজারে ২৫ নারী-পুরুষ আটক
অবৈধ কার্যকলাপ ও পর্যটকদের ব্ল্যাকমেইল করে সর্বস্ব লুটের অভিযোগে কক্সবাজার শহরের কলাতলীর সাইনবোর্ডহীন তিনটি কটেজ থেকে ২৫ জন নারী-পুরুষকে আটক করেছে পুলিশ। তবে আটকদের মধ্যে কয়েকজন নিজেদের স্বামী স্ত্রী ও প্রেমিক প্রেমিকা হিসেবে পরিচয় দেয়ার পরেও পুলিশ তাদের আটক করেছে বলে অভিযোগ করেছেন।
গত শুক্রবার (১ মার্চ) গভীর রাতে কলাতলী হোটেল-মোটেল জোনের লাইট হাউস এলাকার ওই তিনটি কটেজে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। ২ মার্চ ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ জানায়, একটি দালাল চক্র বিভিন্ন কৌশলে পর্যটকদের কটেজ জোনের বিভিন্ন রুমে নিয়ে যায়। পরে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত নারীদের দিয়ে ভিডিও করে তাদের ব্ল্যাকমেইল করে সর্বস্ব লুটে নেয়। এসব জায়গায় মাদকেরও ছড়াছড়ি।
আপেল মাহমুদ বলেন, আটক নারীরা বোরকা পরে সমুদ্র সৈকতে ঘোরেন। সেখান থেকে পর্যটকদের রুমে নিয়ে যান। পরে তাদের কাছে থাকা টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নেন। আটকদের মধ্যে অনেকেই ভুয়া কাবিননামা তৈরি করে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলে ওঠেন। স্বামী পাহারায় থাকেন, স্ত্রী অন্য পুরুষের সঙ্গে থাকেন।
আটকদের মধ্যে কয়েকজন জানান, তাঁরা প্রেমিক-প্রেমিকা ঘুরতে এসেছেন। হোটেলে রুম না পেয়ে কটেজে উঠছেন। এটিই তাদের অপরাধ! অথচ বাংলাদেশের আইনে লেখা আছে- প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়েরা চাইলে তারা একান্ত সময় কাটাতে পারবে। কিন্তু এখানে তাঁরা সেটি পারছেন না বলে দাবি করেন।
আটকদের মধ্যে নূরজাহান নামে এক নারী বলেন, তাঁরা স্বামী-স্ত্রী হোটেলে উঠেছেন। তাদের কাবিননামাও আছে। তারপরও তাদের আটক করা হয়েছে। এখন তাদের ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে কীভাবে তাঁরা নিজেদের চেহারা সমাজে দেখাবেন বলেও প্রশ্ন তোলেন।
এদিকে ট্যুরিস্ট পুলিশের এসব অভিযান পর্যটক শিল্পে প্রভাব ফেলবে বলে দাবি করে কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সদস্য সচিব এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, এমনিতেই সমুদ্র সৈকত ছাড়া কক্সবাজারে বিনোদনের বাড়তি আর কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই বললে চলে। তার মধ্যে যুক্ত হয়েছে রোহিঙ্গা সমস্যা। সব মিলিয়ে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প ধ্বংসের পথে। যে যার মতো করে পর্যটন শিল্পের নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্যস্ত। কথায় কথায় হোটেল মোটেল কটেজ জোনে অভিযান চালিয়ে পর্যটন শিল্পে নতুন আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে। কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়া অনেক সময় স্বামী-স্ত্রীসহ আটক করে নিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে, যা দুঃখজনক। মূলত এসব অভিযানে শৃঙ্খলা ফেরে না মাসিক মাসোহারা বাড়ে কেবল।
উল্লেখ্য, আটকদের মধ্যে ১৬ জন পুরুষ ও ৯ জন নারী। আটককৃতরা কক্সবাজারের মহেশখালী, ঈদগাঁও, সাতকানিয়া ও লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা।
চট্টগ্রাম
কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন দুই সাইকেল আরোহী
কর্ণফুলীতে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দুই সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা একটার দিকে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর বাংলাবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নন্দনালী গ্রামের কামাল মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল মণ্ডল (১৮) ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট পাগলা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল জলিলের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (১৬)। তারা কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চরপাথরঘাটার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে তারা তিনজন সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
এএম/
চট্টগ্রাম
রাতেও ট্রাফিক সামলাচ্ছেন ছাত্রীরা
সরকার পতনের পরে চট্রগ্রামে নগরীর থানাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। এ অবস্থায় নগরীর রাস্তায় নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ। দিনভর রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন সরকার পতনের আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা। তবে দিন পেরিয়ে রাত হলেও, রাস্তায় ছাত্রদের পাশপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় ছাত্রীদেরও।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার অলী খা মসজিদ মোড় এলাকায় এমন চিত্র দেখতে পায় গণমাধ্যম।
নগরীর অলী খা মসজিদ মোড়ে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইজা তাবাসসুম বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এখানে আসা। সকালে শুনেছি সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই তারা কাজ করতে এসেছেন।
আসিফুর রহমান নামে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানান, শিফট সিস্টেম করে ছাত্ররা কাজ করছে। এখন তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের ইচ্ছায় তারা এখানে এসেছেন।
আই/এ
চট্টগ্রাম
‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিম ও তার ছেলে গণপিটুনিতে নিহত
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত ‘বালুখেকো’ খ্যাত চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তার ছেলে নায়ক শান্ত খান গনপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বালিয়া ইউনিয়নের ফরক্কাবাদ বাজারে এসে জনগণের তোপের মুখে পড়েন তারা। এরপর সেখানে নিজের পিস্তল থেকে গুলি করে উদ্ধার হয়ে আসতে পারলেও পার্শ্ববর্তী বাগাড়া বাজারে এসে জনতার মুখোমুখি হয়। তারপর সেখানে জনগণের পিটুনিতে নিহত হোন সেলিম খান ও তার ছেলে শান্ত খান।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম গণমাধ্যমে বলেন, তাদের মৃত্যুর বিষয় জেনেছি। তবে কেউ খবর দেয়নি। আর জানমালের নিরাপত্তার কারণে সেখানে কাউকে পাঠানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেলিম খান চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীতে শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। এসব ঘটনায় সে কারাভোগ করেন এবং দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। সেলিম খান একজন আলোচিত প্রযোজকও। তিনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার।
এছাড়া সেলিম খানকে পদ্মা-মেঘনার চর থেকে বিভিন্ন সময় বালু তোলাসহ নানা কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
এএম/