চট্টগ্রাম
পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজের পাশাপাশি পড়াশোনা করে হলেন আইনজীবী
সমাজে পিছিয়ে পড়া হরিজন জনগোষ্ঠীর একজন সদস্য কৃষ্ণ দাশ। বা-মা দুজনেই কাজ করতেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে। ছোটবেলা থেকে মা-বাবার সঙ্গে তিনি ওই কাজে জড়িয়ে পড়েন। তবে এর পাশাপাশি পড়ালেখা চালিয়ে যান।
২০১৮ সালে চট্টগ্রামের বেসরকারি প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি (সম্মান) পাস করেন কৃষ্ণ দাশ। সম্প্রতি বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় অ্যাডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন তিনি। । আর হরিজন সম্প্রদায়ের অনেকে বলছেন, হরিজনদের মধ্য থেকে কৃষ্ণই প্রথম আইনজীবী।
গেলো বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বিকালে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত কৃষ্ণ দাশকে গাউন পরিয়ে দিলেন চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঁইয়া। চট্টগ্রাম আদালত ভবনের জেলা ও দায়রা জজ আদালত মিলনায়তনে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তাকে গাউন পরিয়ে দেওয়া হয়। জেলা পিপি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর কার্যালয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ‘পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর হয়েও কৃষ্ণ দাশ যে দৃষ্টান্ত রেখেছেন, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। তার এই একাগ্রতা ও কঠোর পরিশ্রম সফলতা এনে দিয়েছে। কৃষ্ণ দাশের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়া অত্যন্ত আনন্দ ও গর্বের। মানুষের মধ্যে কোনও প্রকার ভেদাভেদ, উঁচু-নিচু জাত বলতে বিভাজন করা কারও কাজ নয়। প্রত্যেক মানুষ সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে পৃথিবীতে আসেন। তিনি যাকে যে পরিবার, গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ে পাঠান সেখানেই লালিত-পালিত হন। আমরা জন্মসূত্রে মুসলিম। অন্যজন জন্মসূত্রে হরিজন। পার্থক্য এইটুকু।’
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, ‘কৃষ্ণ দাশকে সংবর্ধনা দিতে পেরে আমরা আনন্দিত। আশা করবো, তিনি নিজেকে একজন প্রকৃত আইনের সেবক হিসেবে বিচারপ্রার্থীদের ন্যায়বিচার এনে দিতে কাজ করে যাবেন। একাগ্রতার মধ্য দিয়ে তার সম্প্রদায়কে সমৃদ্ধ এবং প্রজন্মকে উজ্জীবিত করেছেন। এই সফলতার জন্য তাকে অভিনন্দন।’
অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি আজহারুল হকের সঞ্চালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, প্রথম যুগ্ম জেলা জজ খাইরুল আমিন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফ হোসেন চৌধুরী ও জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ইব্রাহিম খলিল প্রমুখ।
চট্টগ্রাম
কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন দুই সাইকেল আরোহী
কর্ণফুলীতে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দুই সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা একটার দিকে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর বাংলাবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নন্দনালী গ্রামের কামাল মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল মণ্ডল (১৮) ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট পাগলা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল জলিলের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (১৬)। তারা কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চরপাথরঘাটার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে তারা তিনজন সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
এএম/
চট্টগ্রাম
রাতেও ট্রাফিক সামলাচ্ছেন ছাত্রীরা
সরকার পতনের পরে চট্রগ্রামে নগরীর থানাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। এ অবস্থায় নগরীর রাস্তায় নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ। দিনভর রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন সরকার পতনের আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা। তবে দিন পেরিয়ে রাত হলেও, রাস্তায় ছাত্রদের পাশপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় ছাত্রীদেরও।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার অলী খা মসজিদ মোড় এলাকায় এমন চিত্র দেখতে পায় গণমাধ্যম।
নগরীর অলী খা মসজিদ মোড়ে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইজা তাবাসসুম বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এখানে আসা। সকালে শুনেছি সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই তারা কাজ করতে এসেছেন।
আসিফুর রহমান নামে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানান, শিফট সিস্টেম করে ছাত্ররা কাজ করছে। এখন তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের ইচ্ছায় তারা এখানে এসেছেন।
আই/এ
চট্টগ্রাম
‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিম ও তার ছেলে গণপিটুনিতে নিহত
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত ‘বালুখেকো’ খ্যাত চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তার ছেলে নায়ক শান্ত খান গনপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বালিয়া ইউনিয়নের ফরক্কাবাদ বাজারে এসে জনগণের তোপের মুখে পড়েন তারা। এরপর সেখানে নিজের পিস্তল থেকে গুলি করে উদ্ধার হয়ে আসতে পারলেও পার্শ্ববর্তী বাগাড়া বাজারে এসে জনতার মুখোমুখি হয়। তারপর সেখানে জনগণের পিটুনিতে নিহত হোন সেলিম খান ও তার ছেলে শান্ত খান।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম গণমাধ্যমে বলেন, তাদের মৃত্যুর বিষয় জেনেছি। তবে কেউ খবর দেয়নি। আর জানমালের নিরাপত্তার কারণে সেখানে কাউকে পাঠানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেলিম খান চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীতে শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। এসব ঘটনায় সে কারাভোগ করেন এবং দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। সেলিম খান একজন আলোচিত প্রযোজকও। তিনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার।
এছাড়া সেলিম খানকে পদ্মা-মেঘনার চর থেকে বিভিন্ন সময় বালু তোলাসহ নানা কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
এএম/