জাতীয়
সমুদ্রপথে জাহাজ পরিচালনায় নতুন নির্দেশনা
ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। দৃশ্যমান আর্মস গার্ড না থাকার সুযোগে অন্তত সাড়ে ৫০০ নটিক্যাল মাইল দূরে এসে জাহাজটি দখলে নেয় সোমালিয়ান জলদস্যুরা। আর এ কাজে ব্যবহার করা হয় আগে ছিনতাই করা ইরানি ছোট ফিশিং বোট। এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথে জাহাজ পরিচালনায় নতুন নির্দেশনা দিলো নৌ-বাণিজ্য অধিদপ্তর। এখন থেকে ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রপথে চলাচলকারী ৯৭টি বাংলাদেশি মালিকানাধীন জাহাজে নিয়োগ দিতে হবে অস্ত্রধারী নিরাপত্তারক্ষী। মানতে হবে আন্তর্জাতিক নিয়মও।
এতোদিন কোনো কোনো জাহাজ অস্ত্র নিরাপত্তা নিতো, আবার কোনো কোনো জাহাজ নিতো না। আর এমভি আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, ভারত মহাসাগর পাড়ি দিলেও খরচ কমাতে তারা নিরাপত্তা নেয়নি। যার সুযোগ নিয়েছে সোমালিয়ান জলদস্যুরা।
ফলে এখন থেকে লোহিত সাগরের পাশাপাশি ভারত মহাসগর পাড়ি দেয়ার সময় আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, অস্ত্রধারী নিরাপত্তারক্ষী রাখতে হবে বলে নির্দেশনা দিয়েছে নৌ-বাণিজ্য অধিদফতর।
নৌ-বাণিজ্য অধিদপ্তরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন সাব্বির মাহমুদ গণমাধ্যমে বলেন, আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী জাহাজ চলাচলে মালিকরা নিয়ম মানলে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করলে এমন ঘটনা ঘটবে না। তাই এখন থেকে ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রপথে চলাচলকারী ৯৭টি বাংলাদেশি মালিকানাধীন জাহাজে অস্ত্রধারী নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
যদিও জাহাজ পরিচালনায় যুক্ত ব্যবসায়ীরা বলছেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে গেলে জাহাজ পরিচালনার খরচ অনেক বেড়ে যাবে।
বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ড অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান খায়রুল আলম সুজন বলেন, দস্যুতা মোকাবিলায় নিরাপত্তা জোরদার করতে হলে কোনো একটি সংস্থা থেকে নিরাপত্তারক্ষী ভাড়া করতে হবে। তখন অতিরিক্ত খরচ হবে। অনেক জাহাজ মালিকই এই খরচটা করতে চান না। আর সেই গাফিলতি থেকেই এই জিম্মিদশা। ঘটনার আগ মুহূর্তে দূরে জাহাজ থেকে ক্যাপ্টেনরা সোমালিয়ান জলদস্যুদের দেখতে পান। কিন্তু জাহাজে কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় কোন ব্যবস্থা নিতে পারেননি।
জাহাজের নিরাপত্তা দুর্বলতাকেই দায়ী করেন যুক্তরাজ্যের মাস্টার মেরিনার ক্যাপ্টেন এম আনাম চৌধুরী বলেন, অটোমেটিক আইডেনটিফিকেশন সিস্টেম থাকলে আশপাশের কমপক্ষে ৫০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত কোনো জাহাজের কী অবস্থা তা জানা যাবে। ওই জাহাজে অস্ত্রধারী নিরাপত্তারক্ষী ছিল না। রেজার ওয়্যার দিয়ে একটা বেরিকেড সৃষ্টি করার কথা, সেটাও ছিল না। ফলে ওরা যখন এসেছে কোনো বাধা ছাড়াই জাহাজে ওঠে গেছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে সমুদ্রপথে চলাচলকারী ৯৭টি জাহাজ রয়েছে। যেগুলো আন্তর্জাতিক পথে পণ্য আনা-নেয়ার কাজ করতো। দিন দিন যখন জাহাজ বাড়ছিল; তখন এই ঘটনা সেই অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেবে বলে শঙ্কা জাহাজ ব্যবসায়ীদের।
উল্লেখ্য, গেলো দুই দশকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের ব্যাপক আধিপত্য ছিল। কিন্তু ইউরোপ-আমেরিকার কারণে সেই দস্যুতা অনেকাংশে কমে আসে। সম্প্রতি ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং লোহিত সাগরে হুতি বিদ্রোহীদের অবস্থানের কারণে যখন তাদের দৃষ্টি সেদিকে; সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সোমালিয়ান জলদস্যুরা আবার ভারত মহাসাগর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আগে কখনো উপকূল থেকে ৫০০ নটিক্যাল মাইল দূরে এ জলদস্যুরা আসতো না। কিন্তু নিরাপত্তা ব্যবস্থা শিথিল হওয়ায় সোমালিয়ান জলদস্যুরা বাংলাদেশি জাহাজ ছিনতাই করে আটকে রেখেছে। আর এমন করুণ দশা।
এএম/
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ