অর্থনীতি
দুই ঘণ্টায় শেষ সরকারি বিক্রয় কেন্দ্রের পণ্য
সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রের দুধ, মাংস ও ডিম সহ্য নিত্যপণ্য দুই ঘণ্টার মধ্যে বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষ্যে নিম্ন আয়ের মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে রাজধানীর ৩০টি স্থানে বাজারের চেয়ে কম মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রি করছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। রোজার আগের দিন থেকে শুরু হওয়া এ কার্যক্রম চলবে ২৮ রমজান পর্যন্ত।
শনিবার (১৬ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বর ও কালশীতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্র পিকআপ ভ্যানের দুধ-ডিম-মাংস দুই ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়ে যায় বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছে ক্রেতারা।
ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রের ক্যাশিয়ার মো. রহিম বলেন, তাঁরা প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬০০ টাকা, খাসি ৯০০ টাকা, ড্রেস্ড ব্রয়লার মুরগী ২৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। দুধ ৮০ টাকা লিটার এবং ডিম এক ডজন ১১০ টাকা বিক্রি করছি। রোজার আগের দিন থেকে শুরু হয়েছে আমাদের এই কার্যক্রম। শুরুর কয়েকদিন সব পণ্য বিক্রি করতে বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করা লাগত। এখন দেড় থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।
ইয়াকুব নামে এক ক্রেতা জানান, সরকারি ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রের পণ্যের দাম যে অনেক কম বিষয়টি সেরকম নয়। তবে যেহেতু এগুলো সরকারি কর্তৃপক্ষ বিক্রি করছে সেহেতু পণ্য খাঁটি হওয়ার কথা। এজন্যই তিনি এর আগে দুইবার নিয়েছেন। আজও নিতে এসেছিলেন কিন্তু আগেই সব পণ্য শেষ হয়ে যাওয়ায় তিনি কিনতে পারেন নি ।
কালশীর ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, মিরপুরের অন্যান্য স্থানের চেয়ে কালশীতে চাহিদা বেশি। আজ এখানে ১০০ কেজি গরুর মাংস, ৫০ কেজি ব্রয়লার, ১০ কেজি খাসির মাংস, ২৪শ ডিম এবং ১০০ লিটার দুধ বিক্রি করেছেন তাঁরা। বাজারের সাথে তাদের পণ্যের মান ও দামে তফাৎ আছে বলেই চাহিদা বাড়ছে।
তিনি আরও জানান, মানুষের অভিযোগ আছে। সবচেয়ে বড় অভিযোগ হচ্ছে একজন ক্রেতা তিন থেকে চার কেজি গরুর মাংস চায়। কিন্তু তাঁরা দিতে পারেন না। কারণ তাদের উদ্দেশ্য ছিল নিম্ন আয়ের মানুষরা যেন রমজানে স্বল্পমূল্যে দুধ-ডিম-মাংস খেতে পারে। কিন্তু অনেক সময় ধনী মানুষরাও আসছেন। ধনী-গরীব যেই হোক, লাইন দাঁড়ালে তাদের দিতে হয়।
বর্তমানে তাঁরা এক কেজির বেশি গরুর মাংস বিক্রি করছেন না। এছাড়া ডিম ও দুধ চাহিদা অনুযায়ী পাচ্ছেন ক্রেতারা।
উল্লেখ্য, তুনবাজার (বাড্ডা), কড়াইল বস্তি (বনানী), খামারবাড়ি (ফার্মগেট), আজিমপুর মাতৃসদন (আজিমপুর), গাবতলী, দিয়াবাড়ী (উত্তরা), জাপান গার্ডেন সিটি (মোহাম্মদপুর), ষাটফুট রোড (মিরপুর), খিলগাঁও (রেল ক্রসিংয়ের দক্ষিণে), সচিবালয়ের পাশে (আব্দুল গনি রোড), সেগুনবাগিচা (কাঁচাবাজার), আরামবাগ (মতিঝিল), রামপুরা, কালসী (মিরপুর), যাত্রাবাড়ী (মানিকনগর গলির মুখে), বসিলা (মোহাম্মদপুর), হাজারীবাগ (শিকশন), লুকাস (নাখালপাড়া), আরামবাগ (মতিঝিল), কামরাঙ্গীর চর, মিরপুর ১০, কল্যাণপুর (ঝিলপাড়া), তেজগাঁও, পুরান ঢাকা (বঙ্গবাজার) কাকরাইল। আর স্থায়ী পাঁচটি বাজারগুলো হলো; মিরপুর শাহ আলি বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, নতুন বাজার (১০০ ফুট), কমলাপুর, কাজি আলাউদ্দিন রোড (আনন্দবাজার) এ ৩০ টি স্থানে বিক্রি হচ্ছে ৫ ধরণের পণ্য।
অর্থনীতি
বাংলাদেশের পাশে থাকবে আইএমএফ
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। দেশের এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে শপথ নেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। চলমান পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের পাশে থাকতে আইএমএফ ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘প্রাণহানি ও মানুষের আহত হওয়ার ঘটনায়’ আইএমএফ গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে। তারা বাংলাদেশ ও দেশটির মানুষের প্রতি সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে সংস্থাটি পাশে থাকবে।
এর আগে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি ডলারের একটি ঋণ অনুমোদন দেয় আইএমএফ। ইতোমধ্যেই তিন কিস্তিতে ২৩০ কোটি ৮২ লাখ ডলার ছাড় করেছে আইএমএফ। আর ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে সংস্থাটির।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেশের জিডিপির প্রায় এক-চতুর্থাংশের সমতুল্য। সুতরাং, তাদের সমর্থন বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এসি//
অর্থনীতি
আজ ব্যাংক থেকে এক লাখের বেশি টাকা তোলা যাবে না
শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠান আজ (০৮ আগস্ট)। সে জন্য নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের সীমা আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক হিসাব থেকে এক লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না। তবে এ সিদ্ধান্ত শুধু আজকের জন্য প্রযোজ্য হবে।
বুধবার (০৭ আগস্ট) রাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা এমডিদের এক জরুরি বার্তায় এ নির্দেশনা দিয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) এক হিসাব থেকে এক লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না। তবে যেকোনো পরিমাণ নগদ টাকা স্থানান্তর ও ডিজিটাল লেনদেন করা যাবে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক আজকের জন্য প্রধান কার্যালয় থেকে শাখায় টাকা দেয়া বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি গ্রাহকদের চেকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সরকার পরিবর্তনের পর নগদ টাকা উত্তোলনের চাপ বেড়েছে। এসব অর্থ যাতে কোনোভাবেই সন্ত্রাসী বা অবৈধ কাজে ব্যবহৃত না হয়, সে জন্য নগদ টাকা উত্তোলন কিছুটা নিরুৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ধারাবাহিকতায় গত রাতে এ সিদ্ধান্ত জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশে কোনো সরকার নেই এবং আজ নতুন সরকার গঠিত হচ্ছে। এই সময়ে কেউ যাতে নগদ টাকা নিয়ে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে না পারে, সে জন্যই এই সিদ্ধান্ত।’
এসি//
অর্থনীতি
এনবিআর চেয়ারম্যানকে বরখাস্তের দাবিতে বিক্ষোভ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে বরখাস্তের দাবিসহ ৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।আর বিক্ষোভের মধ্যেই চেয়ারম্যানের পদত্যাগের গুঞ্জন চলছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকেই এনবিআর এর প্রধান কার্যালয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
এনবিআরের কর্মচারীরা জানান, তারা দীর্ঘ দিন থেকে তাদের নানা দাবি ও অসুবিধা এনবিআর চেয়ারম্যানকে জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এসব দাবি তিনি পূরণ করেন নাই। বাইরের ক্যাডারের কর্মকর্তারা এনবিআর কর্মচারীদের কষ্ট বুঝতে চান না। তাদের ইচ্ছে মত করে চালাতে চান, সেটা কতটা যৌক্তিক তা ভেবে দেখার এটাই উপযুক্ত সময়।
এসময়ে আন্দোলনরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ৯ দফা দাবি জানান।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১। প্রশাসন ক্যাডার থেকে কোনো কর্মকর্তা প্রেষণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পদায়ন করা যাবে না।
২। স্বৈরাচারী শাসকের ঘনিষ্ঠ সহচর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে অবিলম্বে পদ থেকে বরখাস্ত করে আয়কর/কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ক্যাডার থেকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দিতে হবে।
৩। অবিলম্বে স্বৈরাচারী চেয়ারম্যানের দোসর এবং প্রিয়পাত্র প্রথম সচিব (কর প্রশাসন) মো. শাহিদুজ্জামানকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করে কর ক্যাডারের কর্মকর্তা পদায়ন করতে হবে।
৪। দুই বছর পর পর বদলি বাণিজ্য বন্ধ করে আয়কর আইন-২০২৩ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং আয়কর আদায়ের স্বার্থে অতীতের মতো রাজস্ব বান্ধব এবং প্রযোজ্যতা সাপেক্ষে বদলি করতে হবে।
৫। অবৈধ নিয়োগ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।
৬। সব কর্মচারীদের পদায়ন কর্মচারীদের জন্য প্রণীত জ্যেষ্ঠতা বিধিমালা ও আইন অনুযায়ী করতে হবে।
৭। আয়কর অনুবিভাগের ১০তম-২০তম গ্রেডের সব শূন্য পদে পদোন্নতি দিতে হবে এবং সব পদ পদোন্নতিযোগ্য হতে হবে, কোনো পদ ব্লক রাখা যাবে না।
৮। কর্মচারীদের নিজ নিজ অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে পরামর্শ করে কর্মচারীদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে, অন্যথায় কোনো সিদ্ধান্ত মানা হবে না।
৯। সর্বশেষে আয়কর অনুবিভাগের সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ের সিদ্ধান্ত শুধু আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা/কর্মচারীরা নেবে।
আই/এ