রংপুর
ফুলবাড়ীতে জেলে পরিবারদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে সাধারণ জেলেদের অজান্তে মৎস্যজীবী সমিতি নিবন্ধন, সরকারী জলাশয় ইজারা এবং ওই সমিতির সভাপতি সম্পাদক কর্তৃক ইজারার টাকা পরিশোধ না করায় সভাপতি সম্পাদকসহ ২৬ জেলের নামে সার্টিফিকেট মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে সভাপতি ও সম্পাদক বাঁধ দিয়ে ২৪ টি জেলে পরিবারের সদস্য সহ প্রায় দুই শতাধিক জেলে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
রোববার (১৭ মার্চ) দুপুর ১২ টায় ফুলবাড়ী টু নাগেশ্বরী সড়কের উপজেলা পরিষদ মুল ফটকের সামনে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ক্ষীরোদ চন্দ্র বিশ্বাস, লক্ষী রানী বিশ্বাস, নয়ন বালা দেবী বিশ্বাস ও কামাক্ষা চন্দ্র বিশ্বাস প্রমূখ । পরে মানববন্ধনকারীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করে। লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার দক্ষিণ কুটিচন্দ্র খানা গ্রামের ২৪ জন জেলের অজান্তে ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে ওই গ্রামের ধরনী চন্দ্র বিশ্বাস ন্যাঙ্গা (সভাপতি) এবং কবিরমামুদ গ্রামের মজিদুল হক মফি (সাধারণ সম্পাদক) ফুলবাড়ী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের নিবন্ধন করেন। এরপর ফুলবাড়ী উপজেলার সরকারী জলাশয় ‘ফুলসাগর লেক’ (বাংলা ১৪২৭ থেকে ২৪২৯) তিন বছরের জন্য ৪৮ লক্ষ ৬০ হাজার টাকায় ইজারা নেন।
কিন্তু ইজারা মেয়াদ শেষ হলেও ইজারা পাওনা বাবদ প্রাপ্য টাকা সরকারী কোষাগারে জমা না দিয়ে কালক্ষেপণ করেন। এদিকে দীর্ঘ সময়েও সরকারী বকেয়া পাওনা পরিশোধ না হওয়ায় কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জেনারেল সার্টিফিকেট শাখা সকল সদস্যের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট মামলা দায়ের করে ২ মার্চ নোটিশ প্রদান করে৷ নোটিশে জনপ্রতি ১ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা ৩০ দিনের মধ্যে পরিশোধের সময়সীমা বেধে দেয়া হয়। নোটিশ পেয়ে সাধারণ জেলেরা জানতে পারেন যে মৎস্যজীবী সমিতিতে তারাও যুক্ত আছেন এবং বকেয়া টাকার দায় তাদেরকেই বহন করতে হবে।
এঘটনায় সাধারণ জেলেরা সভাপতি ও সম্পাদকের সাথে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় আপোষ মিমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে বিচারের দাবীতে মানববন্ধন সমাবেশ ও বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
মৎস্যজীবী ক্ষীরোদ চন্দ্র বিশ্বাস, লক্ষী রানী বিশ্বাস, নয়ন বালা দেবী বিশ্বাস ও কামাক্ষা বিশ্বাস জানান, সাহায্য দেয়ার কথা বলে আমাদের ছবি ও ভোটার কার্ড নিয়ে প্রতারক ন্যাঙ্গা ও মফি সমিতি গঠন করে জলাশয় লিজ নিয়েছে। আমরা কিছুই জানিনা। তারা তিন বছর জলাশয়ের মাছ বিক্রি করে সমস্ত টাকা আত্নসাত করেছে। আর ইজারার টাকা পরিশোধ না করায় আমাদের নামে মামলা হয়েছে। আমরা এ প্রতারণার উপযুক্ত বিচার চাই।
ফুলবাড়ী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সাধারণ সস্পাদক মজিদুল হক মফি জানান, সঠিক সময়ে ইজারারের টাকা পরিশোধ না করায় আমিসহ ২৬ জন জেলের নামে সার্টিফিকেট মামলা দায়ের হয়েছে। সেই মামলার বিষয়ে আগামী ৫ এপ্রিল সার্টিফিকেট শাখায় গিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
ফুলবাড়ী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি ধরণী কান্ত বিশ্বাস জানান, মোটা ৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে। একটি প্রভাবশালী মহলের চাপে সময় মতো টাকা পরিশোধ করতে পারিনি। আমি নামমাত্র সভাপতি ছিলাম। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ করতে হবে। জানিনা আমাদের কি হবে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সিব্বির আহমেদ জানান, ইজারা মুল্য পরিশোধ না করায় নিরীহ জেলেদের নামে সার্টিফিকেট মামলা দায়েরের ব্যাপারে একটি স্মারকলিপি পেয়েছি। এ ব্যাপারে আমার তেমন করনীয় কিছুই নাই। কারন এটি আদালতের বিষয়। তারপরও জেলা প্রশাসক স্যার জানতে চাইলে তাকে প্রকৃত ঘটনা গুলো জানানো হবে।
জাতীয়
রংপুরে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে কাউন্সিলরসহ নিহত ৫
রংপুরে অসহযোগ আন্দোলনে সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে রংপুর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। সাংবাদিকসহ প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে কয়েকজন গুরুতর অবস্থায় মেডিকেলে ভর্তি রয়েছেন।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরের দিকে রংপুর নগরীতে সংঘর্ষ চলাকালে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত হারাধন রায় হারা রংপুর সিটি করপোরেশনের ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, পশুরাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি। নিহতের বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন রসিক কাউন্সিলর শাহাজাদা আরমান শাহাজাদা।
নিহত অন্য চারজন হলেন নগরীর গুড়াতিপাড়ার স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা খরশু মিয়া, যুবলীগ নেতা মাসুম, হারাধন রায়ের ভাগ্নে এবং অপরজনের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
জানা যায়, সকাল থেকেই লাঠিসোটা নিয়ে রংপুর মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ঘিরে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ অবস্থান নেন নগরীর টাউনহল চত্বরে। এতে মুখোমুখি সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘটনাস্থলে কয়েকজন গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
পরে জাহাজ কোম্পানি মোড় থেকে পায়রা চত্বরে পুনরায় অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করতে গিয়ে আটকে পড়েন পশুরাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কাউন্সিলর হারাধন রায় হারা। পরে পায়রা চত্বর থেকে পালিয়ে কালিবাড়ি মন্দিরে প্রবেশ করার সময় আন্দোলনকারীদের হাতে ধরা পড়েন হারাধন রায় হারা। সেখানেই এলোপাতাড়ি দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে কোপাতে শুরু করেন। একপর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত হলেও পুনরায় এলোপাতাড়ি আঘাত করেন তারা। পরে পরিবারের লোকজন ঘটনা জানার পর হারাধনের মরদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান।
এদিকে রংপুর সিটি করপোরেশনের সামনে অবস্থান করা এনটিভির ক্যামেরাপারসন আরমান, চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরের রিপোর্টার ফখরুল শাহীন, নিউজ টোয়েন্টিফোরের রিপোর্টার রেজাউল ইসলাম মানিক, একুশে টিভির ক্যামেরাম্যান আলী হায়দার রনি, ইত্তেফাকের ফটো সাংবাদিক রাশেদ রাব্বি, অনলাইনের মিজানসহ ১০ জন গণমাধ্যম কর্মীকে মারধর করেছেন আন্দোলনকারীরা।
উল্লেখ্য, রংপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রংপুর-২ (বদরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের এমপি ডিউক চৌধুরীর বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ও পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আগুন, গংগাচড়া আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও আগুন, মিঠাপুকুর উপজেলার পরিষদ চত্বরে ইউএনও অফিস, বেগম রোকেয়া অডিটোরিয়াম, আনসার ভিডিপিসহ বিভিন্ন দফতরে ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমানের বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
এএম/
দেশজুড়ে
রংপুরে আ.লীগের এমপির বাসায় আগুন, লুটপাট
রংপুরের বদরগঞ্জে আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী (ডিউক) ও পৌরসভার মেয়র আহসানুল হক চৌধুরীর (টুটুল) বাসায় আগুন দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। আগুন দেওয়ার পর লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
প্রথমে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা ও ধাওয়া দিয়েছেন। পরে বিক্ষোভকারীরা একত্রিত হয়ে স্থানীয় দুপুর ১২টার দিকে আগুন দেয়। বিক্ষোভকারীরা লাঠি হাতে ওই দুই বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ করছে।
অন্যদিকে রংপুর শহরের সুপার মার্কেটের সামনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। রোববার (৪ আগস্ট) সকালে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (রমেক) উপ-পরিচালক আক্তারুজ্জামান গণমাধ্যমকে নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, সকালে আন্দোলনকারীরা শহরের সুপার মার্কেট এলাকায় জড়ো হন। এ সময় আকস্মিকভাবে আওয়ামী লীগের ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া দেন। আন্দোলনকারীরাও তাদের পাল্টা ধাওয়া দিলে শুরু হয় সংঘর্ষ। এতে উভয়পক্ষের ৩২ জন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আবু মারুফ হোসেন (অপরাধ) গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।
এনএস/
দেশজুড়ে
সংঘর্ষে রণক্ষেত্র রংপুর, নিহত ২
রংপুরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন।
রোববার (৪ আগস্ট) সকালে শহরের সুপার মার্কেটের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহত ও নিহতদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায় নি।
রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (রমেক) উপ-পরিচালক আক্তারুজ্জামান গণমাধ্যমকে নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, সকালে আন্দোলনকারীরা শহরের সুপার মার্কেট এলাকায় জড়ো হন। এ সময় আকস্মিকভাবে আওয়ামী লীগের ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া দেন। আন্দোলনকারীরাও তাদের পাল্টা ধাওয়া দিলে শুরু হয় সংঘর্ষ। এতে উভয়পক্ষের ৩২ জন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আবু মারুফ হোসেন (অপরাধ) গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।
এনএস/