লাইফস্টাইল
যেসব খাবার পানিতে ভিজিয়ে খেলে তবেই পাবেন পুষ্টিগুণ
শরীর সতেজ রাখতে কেবল শরীরচর্চার উপর নজর দিলে চলবে না, খাওয়াদাওয়াতেও রাখতে হবে কড়া নিয়ন্ত্রণ। স্বাস্থ্যকর খাদ্যের তালিকায় এমন কিছু খাবার আছে, যেগুলির সঠিক পুষ্টিগুণ পাওয়ার জন্য তাদের কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রেখে খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা। এই অভ্যাস মেনে চললে পেটের নানা রকম সমস্যা এড়িয়ে চলা সম্ভব। তাছাড়াও, সেই খাবারটির সঠিক পুষ্টিগুণও পাবে আপনার শরীর। এবার জেনে নেয়া যাক, কোন কোন খাবার সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে খাওয়াই ভাল-
আম
আম খেলেই অনেকের শরীর র্যাশ বেরিয়ে যায়, সেই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে হলে আম খেতে হবে জলে ভিজিয়ে। আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইটোকেমিক্যাল। যা শরীরে ফ্যাটের পরিমাণ বাড়ায়। আম খাওয়ার আগে কিছু ক্ষণ ভিজিয়ে রাখলে ফাইটোকেমিক্যালের ঘনত্ব তুলনায় কমে যায়। এতে শরীরে ফ্যাট জমার আশঙ্কাও থাকে না। ফাইটিক অ্যাসিড স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়। অ্যান্টিনিউট্রিয়েন্ট হিসাবে পরিচিত এই অ্যাসিড আমের খোসায় থাকে। এই অ্যাসিড শরীরে আয়রন, জিঙ্ক, ক্যালশিয়ামের মতো কিছু প্রয়োজনীয় উপাদান শোষণে বাধা দেয়। আম খাওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে তা পানিতে ভিজিয়ে রাখলে ফাইটিক অ্যাসিড ধুয়ে যায়।
ডাল জাতীয় খাবার
ডাল খেলে অনেকেরই বদহজম হয়। এর কারণ ছোলার ডাল, মটর, কাবলি ছেলা, মুগ ডালের মতো খাবারে থাকা লেকটিনস ও ফাইটিক অ্যাসিড নামের উপাদান। এই দুই উপাদান হজম হতে বেশি সময় নেয়। অম্বলের সম্ভাবনাও থাকে। ডাল খেতে ভাল লাগলেও তাই অনেকেই তা খেতে পারেন না গ্যাস-অম্বলের ভয়ে। ডাল রান্নার আগের দিন রাতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন ভাল করে ধুয়ে রান্না করলেই কিন্তু বদহজমের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
মেথি
ডায়াবিটিস, রক্তচাপ, ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ, চুল পড়া রোধ থেকে শুরু করে রক্তাল্পতার সমস্যা— নানাবিধ সমস্যার ঘরোয়া দাওয়াই হল মেথি। রান্নায় মেথি খাওয়ার চেয়ে মেথি ভেজানো পানি খাওয়া বেশি স্বাস্থ্যকর। মেথি পানিতে ভিজিয়ে খেলে তাতে ফাইবারের মাত্রা অনেকখানি বেড়ে যায়। আর পানিতে ভিজিয়ে মেথি খেলে তা হজম করতেও সুবিধা হয়।
কিশমিশ
আগের দিন রাতে পানিতে ভিজিয়ে রাখা কিশমিশ খাওয়ার উপকারিতা অঢেল। কিশমিশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন। নিয়মিত ভেজানো কিশমিশ খেলে ক্যানসারের আশঙ্কা অনেকটা কমে যায়। যাদের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম, রক্তাল্পতার সমস্যা এড়াতে তাদের সমান ভাবে সাহায্য করে ভেজানো কিশমিশ। সারা রাত ভিজিয়ে রাখা কিশমিশ খেলে গ্যাস-অম্বল, পেট ফাঁপার মতো সমস্যাও কমে।
কাঠবাদাম
পুষ্টিবিদেরা বলছেন, বাদামের মধ্যে যে ধরনের উৎসেচক রয়েছে সেগুলি সক্রিয় করতে ভিজিয়ে রাখা জরুরি। বাদামের খোসায় রয়েছে ফাইটিক অ্যাসিড, সেই অ্যাসিডকে ভাঙতে সাহায্য করে ওই উৎসেচকগুলি। আয়রন, জিঙ্ক, ক্যালশিয়ামের মতো খনিজগুলি শোষণে সহায়তা করে। তা ছাড়া যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে, তাদেরও বাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।
পরামর্শ
মুখে ঘা দূর করতে মেনে চলুন ৫ উপায়
খাওয়া দাওয়ার সময় বা কথা বলার সময়ে মুখে ঘা হলে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। এই সমস্যা দীর্ঘদিন সহ্য না করাই উত্তম। এই সমস্যা কিন্তু একসময় মুখে আলসারেরও লক্ষণ হতে পারে। মুখের আলসারকে সামান্য ঘা ভেবে অবহেলা করলেই বিপদে পড়বেন। কোষ্ঠকাঠিন্য, হরমোন জনিত সমস্যার কারণে মুখের ভিতরে আলসার হতে পারে। অনেকে আবার ব্রেসেস পড়েন, তাঁদেরও মাঝেমাঝে এই সমস্যা হয়। শরীরে ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি, আয়রন, জিঙ্ক, ফোলেটের ঘাটতির কারণেও মুখের ঘা থেকে আলসার হতে পারে।
মুখে ঘা হলে কিছুদিনের জন্য ঝাল, টক জাতীয় খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। না হলে মুখে জ্বালা অনুভূত হবে। মুখে ঘা হলে মুক্তি পেতে পারেন ৫ উপায়ে ।
১) মুখের ঘা কমাতে হালকা গরম পানিতে সামান্য লবন মিশিয়ে কুলকুচি করুন। এতে আরাম পাবেন। দিনে তিন থেকে চার বার করলে ব্যথা ও ঘা দুটোই কমে আসবে।
২) ঘায়ের জায়গায় সামান্য মধু লাগিয়ে রাখতে পারেন, ভালো উপকার পাবেন। কয়েক ঘণ্টা অন্তর অন্তর মধু লাগালে সুফল পাবেন।
৩) ঘায়ের জায়গায় বিশুদ্ধ নারিকেল তেল লাগিয়ে রাখলেও বেশ আরাম পাবেন।
৪) যে কোনও ঘায়ের জন্য ভালো প্রাকৃতিক ঔষধ হতে পারে হলুদ। মুখে যে জায়গায় ঘা হয়েছে, সেই স্থানে হলুদ বাটা লাগিয়ে রাখতে পারেন। কিছু দিন ব্যবহার করলেই ঘায়ের তীব্র জ্বালা-যন্ত্রণা কমে আসবে।
৫) বেকিং সোডা ঘা সারাতে দারুণ উপকারী একটি জিনিস। এক কাপ পানিতে এক চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে কুলকুচি করলে ঘা কমে যাবে। এছাড়া বেকিং সোডার সঙ্গে সামান্য পানি মিশিয়ে একটা ঘন পেস্ট তৈরি করে নিতে পারেন। সেই পেস্ট ক্ষতস্থানে লাগিয়ে রাখলেও বেশ উপকার পেতে পারেন।
জেডএস/
লাইফস্টাইল
জুতো-মোজার দুর্গন্ধ দূর হবে যেভাবে
এসে গেছে বৃষ্টির দিন। দিনভর ঘ্যানঘ্যানে বৃষ্টিতে বাড়ি থেকে বের হওয়াই সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। বাড়ি থেকে বেরিয়েই কাকভেজাহয়ে অফিসে যাচ্ছে মানুষ। জুতো থেকে মোজা, সব ভিজে একেবারে চুপচুপে। সেই জুতো-মোজা পরেই সারাদিন কাটিয়ে দেয়া।
সবশেষে ঘরে পৌছে জুতো খুলতেই বিকট গন্ধ! এই পরিস্থিতির সম্মুখীন অনেকেই হচ্ছেন নিশ্চয়ই? এই সমস্যা দূর করতে ঘরোয়া কিছু টিপসে খুব সহজেই দূর করতে পারবেন জুতো, মোজার এই বাজে গন্ধ।
আসুন জেনে নেই তাহলে –
১. ছোট্ট একটি কাপড়ে অল্প পরিমাণ বেকিং সোডা নিয়ে ছোট পুটলি বানিয়ে মোজার মধ্যে রেখে দিন। দেখবেন মোজা থেকে দুর্গন্ধ দূর হবে।
২. ন্যাপথোলিন গুঁড়ো করে নিয়ে ট্যালকম পাউডারের সঙ্গে তা মিশিয়ে জুতোর মধ্যে ছড়িয়ে দিন। দেখবেন জুতোয় আর দুর্গন্ধ হচ্ছে না।
৩. বাড়িতে ফিরেই ভিজে জুতো ভালো করে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন। তারপর জুতোর মধ্যে কিছু পরিমাণ বেকিং সোডা ছিটিয়ে দিন।
পরের দিন জুতোর ভিতর ভালো করে মুছে ফেলুন। দেখবেন গন্ধ দূর হয়েছে।
৪. জুতোর মধ্যে এক টুকরো ফেব্রিক সফটনার সিট রেখে দিন রাতে। পরদিন সেটি বের করে জুতো পরুন। বাজে গন্ধ একেবারে দূর হয়ে যাবে।
৫. বাড়িতে ফিরে জুতো ধুয়ে হেয়ার ড্রায়ার চালিয়ে হালকা শুকিয়ে নিন। এবার এক টুকরো কাপড় বা তুলো লবঙ্গ তেলে ভিজিয়ে জুতোর মধ্যে রেখে দিন সারারাত। জুতোর দুর্গন্ধ দূর হবে।
৬. ফুটন্ত জলে টি ব্যাগ ফেলে রাখুন ২ মিনিট। টি ব্যাগ ঠাণ্ডা হলে জুতোর মধ্যে রেখে দিন। এক ঘণ্টা পর তা সরিয়ে জুতোর ভেতরের অংশ ভাল করে মুছে নিন। দুর্গন্ধের পাশাপাশি দূর হবে তাতে থাকা ব্যাকটেরিয়াও।
জেডএস//
রেসিপি
ম্যাংগো পুডিং তৈরির রেসিপি
আমের সিজনে অনেকেই আমের পাল্প ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করেন। সেই ম্যাংগো পাল্প দিয়েই ম্যাংগো পুডিং বানানো যাবে। আর আমের সিজনে তো ফ্রেশ আমই ব্যবহার করতে পারবেন। ছোট বাচ্চাদের জন্য এটি বেশ হেলদি একটি ডেজার্ট আইটেম। মাত্র ৪টি উপাদান দিয়েই ইয়াম্মি ইয়াম্মি ম্যাংগো পুডিং বানিয়ে নেয়া যায়। চলুন দেরি না করে রেসিপিটি জেনে নেই এখনই।
উপকরণ
ঘন দুধ- ১ কাপ
চিনি- স্বাদ অনুযায়ী ( আমি হাফ কাপ দেই )
আম- ২টি
ডিম- ২টি
ম্যাংগো পুডিং তৈরির পুরো প্রণালী
১. প্রথমে আম ছোট ছোট করে কেটে নিন। দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করুন এবং ঠাণ্ডা করে নিন।
২. এবার ব্লেন্ডার জগে আম, চিনি, দুধ ও ডিম সবকিছু দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন।
৩) মিশ্রণটি মোটামুটি ঘন ও থকথকে হবে। যদি বেশি ঘন হয়ে যায়, লিকুইড দুধ মিশিয়ে নিতে হবে।
৪. এবার একটি স্টিলের টিফিন বক্সে পুডিংয়ের মিশ্রণ ঢেলে নিতে হবে।
৫. বড় সসপ্যানে পানি ফুটতে দিন। এবার একটি স্ট্যান্ড প্যানে সেট করে তার উপর স্টিলের টিফিন বক্সটি রাখুন।
৬. বাটির ঢাকনা ভালোভাবে আটকাবেন এবং পানি যেন ভেতরে না যেতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
৭. চুলার আঁচ মিডিয়াম রাখুন, ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করে চেক করুন পুডিং জমেছে কি না।
৮. পুডিং জমে গেলে চুলা নিভিয়ে দিন। এরপর রুম টেম্পারেচারে ঠাণ্ডা করে নিতে হবে।
ব্যস, আমের পুডিং বানানো হয় গেলো! চাইলে ফ্রিজে রেখে ম্যাংগো পুডিং ভালোভাবে সেট করে নিতে পারেন। সেট হয়ে গেলে টিফিন বক্স থেকে পুডিংটি একটি প্লেটে সাবধানে উল্টিয়ে ঢেলে নিন। এবার ছুরি দিয়ে পিস পিস করে কেটে সার্ভ করুন। আর এটি ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা খেতে কিন্তু বেশি মজা লাগে। সব উপকরণগুলো বাসাতে থাকলে আজই বানিয়ে নিন দারুন মজাদার ডেজার্টটি।
জেএইচ