আন্তর্জাতিক
ইউক্রেনের অস্তিত্ব হুমকির মুখে, হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের
ইউক্রেনের টিকে থাকা বা অস্তিত্ব হুমকির মুখে রয়েছে। এমনকি আমেরিকার নিরাপত্তা হুমকির মুখে রয়েছে। বললেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
বুধবার (২০ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেনের অস্তিত্ব হুমকির মুখে রয়েছে। একইসঙ্গে তিনি মিত্রদের বোঝাতে চেয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি এমন এক সময়ে এই মন্তব্য করলেন যখন ওয়াশিংটনের কাছে ইউক্রেনের বাহিনীকে অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার জন্য অর্থের অভাব রয়েছে।
মূলত ইউক্রেনের জন্য আরও ৬০ বিলিয়ন ডলার সরবরাহ করবে এমন একটি বিলের ওপর ভোট ডাকতে অস্বীকার করছেন রিপাবলিকান হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকার মাইক জনসন এবং এই পরিস্থিতিতে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়ান বাহিনীর সাথে লড়াই চালিয়ে যাওয়া কিয়েভকে সহায়তা পাঠানোর উপায় খুঁজছে হোয়াইট হাউস।
রয়টার্স বলছে, ইউক্রেনকে সমর্থনকারী প্রায় ৫০টি মিত্র দেশের অংশগ্রহণে জার্মানির রামস্টেইন বিমান ঘাঁটিতে অনুষ্ঠিত ইউক্রেন প্রতিরক্ষা কন্টাক্ট গ্রুপ (ইউডিসিজি) নামে পরিচিত একটি মাসিক বৈঠকের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অস্টিন।
বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে অস্টিন বলেন, ‘আজ ইউক্রেনের অস্তিত্ব হুমকির মুখে এবং আমেরিকার নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মার্কিন নিরাপত্তা সহায়তা এবং গোলাবারুদ সরবরাহ সচল রাখার জন্য আমি আজকে এখানে এসেছি। এবং এটি ইউক্রেনের জন্য টিকে থাকা এবং তাদের সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখার বিষয় এবং একইসঙ্গে এটি আমেরিকার জন্য সম্মান ও নিরাপত্তার বিষয়।’
অবশ্য ওয়াশিংটন কীভাবে অতিরিক্ত তহবিল ছাড়া ইউক্রেনকে সহায়তা করবে তা বলেননি অস্টিন।
কর্মকর্তারা বলছেন, সহায়তার জন্য তহবিলের অভাব ইতোমধ্যেই ইউক্রেনের যুদ্ধে প্রভাব ফেলছে। সেখানে রাশিয়ান সৈন্যরা অগ্রসর হচ্ছে এবং ইউক্রেনীয় বাহিনীকে দুষ্প্রাপ্য সম্পদ ব্যবহার ও পরিচালনা করতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের মিত্ররা আমাদের তহবিল পরিস্থিতি সম্পর্কে এবং ইউক্রেনীয়রা অন্যের চেয়েও বেশি সচেতন, কারণ ঘাটতির কারণে আমরা তাদের সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করতে পারছি না।’
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মঙ্গলবার মিত্রদের কাছে আরও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহের আবেদন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রাশিয়া কেবল এই মাসে আক্রমণে ১৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র, ৩২০টিরও বেশি আক্রমণকারী ড্রোন এবং প্রায় ৯০০টি গাইডেড বোমা নিক্ষেপ করেছে।
পরে রাতের ভিডিও ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই ইউক্রেনের কাছে এখন প্রধান গুরুত্ব হিসেবে রয়ে গেছে। একইসঙ্গে অংশগ্রহণকারীদের তাদের প্রচেষ্টার জন্য তিনি ধন্যবাদও জানিয়েছেন, ‘যাতে তাদের অগ্রাধিকারটি যথাযথভাবে পূরণ করা হয়’।
এদিকে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ টেলিগ্রামে বলেছেন, (জার্মানিতে সম্মেলনে) অংশগ্রহণকারীরা ‘ইউক্রেনকে সাহায্য করার জন্য তাদের ঐক্য এবং সংকল্প প্রদর্শন করেছে। আমাদের বাহিনীর গোলাবারুদের খুবই প্রয়োজন। গোলাবারুদ সরবরাহ করা হবে!’
এর আগে গত সপ্তাহে রাশিয়ার আগ্রাসন মোকাবিলায় যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে আবারও বিপুল অংকের অস্ত্র সহায়তা প্যাকেজ পাঠানোর ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। নতুন এই সহায়তা প্যাকেজের পরিমাণ ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এই সহায়তা প্যাকেজের অধীনে গোলাবারুদ, রকেট এবং বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের মতো অস্ত্রও ইউক্রেনে পাঠানো হবে।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//