চট্টগ্রাম
চাকরি চেয়ে চবির সদ্যবিদায়ী উপাচার্যের পা ধরলেন ছাত্রলীগ নেতা
চাকরির জন্য চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের পায়ে পড়েন ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা। এঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটিতে থাকা ছাত্রলীগ নেতার নাম মইনুল ইসলাম রাসেল। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি। ক্যাম্পাসে মইনুল নিজেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন।
সোমবার (২৫ মার্চ) ভাইরাল হওয়া এই ভিডিও ফুটেজটিতে যে স্থান দেখানো হয়েছে তা চবির সাবেক উপাচার্য শিরীণ আখতারের চট্টগ্রাম শহরের কাজীর দেউরি লাইভলেন এলাকার বাসার নিচের। এতে দেখা যায় ছাত্রলীগের আরও কয়েকটি গ্রুপের নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত রয়েছেন।
ফুটেজটিতে দেখা যায়, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার লিফটে করে বাসার নিচে নামলে লিফটের সামনে থাকা চবি ছাত্রলীগের কয়েকটি গ্রুপের নেতা উপাচার্যের পথরোধ করে। এসময় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও একাকার গ্রুপের নেতা মইনুল ইসলাম রাসেল চাকরির জন্য উপাচার্য শিরীণ আখতারের পায়ে পড়েন। একই সময়ে আরেক সহ-সভাপতি মুজিবর রহমান পায়ে পড়েন।
ওই সময় সেখানে চাকরি প্রত্যাশী ছাত্রলীগের আরও কয়েকজন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে নীল রঙের গেঞ্জি পরিহিত ব্যক্তিটি ছাত্রলীগের ভিএক্স গ্রপের নেতা ও সাবেক সহ-সভাপতি রোমেল হোসেন এবং সাদা শার্ট পরিহিত ব্যক্তিটি একই গ্রুপের নেতা ও সাবেক সহ-সভাপতি মুজিবর রহমান।
মইনুল ইসলাম রাসেল পায়ে পড়লে এ সময় সাবেক উপাচার্য শিরীণ আখতারকে বলতে শোনা যায়, আমার চাকরি দেয়ার ক্ষমতা নাই। আমার পা ছাড়ো। এছাড়া তিনি তার বাসার নিচ থেকে চলে যেতে বলেন এবং পুলিশ ডাকবেন বলে জানান। শিরীণ আখতার গাড়িতে উঠে গেলে মইনুল ইসলাম রাসেল তার গাড়ির সামনে এসে পথরোধ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ভিডিও ফুটেজটি গত ২০ মার্চের। শহরের কাজীর দেউরি লাইভলেন এলাকার বাসার নিচে সকালের দিকে এই ঘটনাগুলো ঘটে। ওই সময় সাবেক উপাচার্য শিরীণ আখতার নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু তাহেরকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসছিলেন। আসার সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার গাড়ির পথরোধ করে এবং খুবই অনুনয় বিনয় করে।
এর আগের দিন অর্থাৎ, ১৯ মার্চ নিজের শেষ দিনে এসেও উপাচার্য নিয়োগ দেয়া থেকে নিজেকে দমিয়ে রাখতে পারেননি। সেদিন দৈনিক মজুরীর ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, হল ও দপ্তরে ৪০ জনের অধিক ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তাদের সবাইকে দৈনিক মজুরীর ভিত্তিতে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও একাকার গ্রুপের নেতা মইনুল ইসলাম রাসেল গণমাধ্যমকে বলেন, মেরিন সায়েন্সের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে ভিসি অফিস ভাঙচুর এবং ট্রেন অবরোধের ঘটনা নিয়ে আমাদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে ওই সময় উনার আমলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। আমাকে প্রধান দোষী সাব্যস্ত করে তদন্ত কমিটি করা হয়।
ওই তদন্ত কমিটি বাদ দেয়ার জন্য আমি সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর ড. শিরীণ আখতার ম্যাডামের কাছে গিয়েছিলাম এবং উনাকে মায়ের মতো অনুনয় বিনয় যেভাবে পারি, তার কাছে ওই ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছিলাম এবং বলেছিলাম যাওয়ার আগে যাতে তদন্ত কমিটি বাদ দেয়। এখন উনার অবৈধ নিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নিউজ হওয়ায় উনি ছাত্রলীগকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছেন। আমি যদি চাকরির জন্য যেতাম তাহলে ভিসিকে গত ১৯ মার্চ তার বাংলোতে আটকে স্বাক্ষর নিয়ে নিতে পারতাম। আমি যাওয়ার সময় আমার দুই বন্ধুকে নিয়ে গিয়েছিলাম যাতে তারাও ম্যাডামকে একটু অনুরোধ করে।
গত বছরের ৩০ জানুয়ারি ৫৪১তম সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন সায়েন্স বিভাগে পছন্দের প্রার্থীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ না দেয়ায় সাবেক সহ-সভাপতি মইনুল হক রাসেলের নেতৃত্বে উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর ও শাটল ট্রেন অবরোধ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যেখানে প্রধান করা হয় আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. খাইরুল ইসলাম। কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন ছাত্রদের আবাসিক আমানত হলের প্রাধ্যক্ষ নির্মল কুমার সাহা ও সহকারী প্রক্টর হাসান মোহাম্মদ রোমান। দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য কমিটিকে অনুরোধ করা হয়েছে।
সিন্ডিকেট সদস্য ও তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. খাইরুল ইসলাম তখন গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, তদন্ত কমিটির চিঠি এখনো তার হাতে পৌঁছায়নি। চিঠি পেলে বাকী সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন।।
চট্টগ্রাম
কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন দুই সাইকেল আরোহী
কর্ণফুলীতে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দুই সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা একটার দিকে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর বাংলাবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নন্দনালী গ্রামের কামাল মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল মণ্ডল (১৮) ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট পাগলা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল জলিলের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (১৬)। তারা কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চরপাথরঘাটার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে তারা তিনজন সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
এএম/
চট্টগ্রাম
রাতেও ট্রাফিক সামলাচ্ছেন ছাত্রীরা
সরকার পতনের পরে চট্রগ্রামে নগরীর থানাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। এ অবস্থায় নগরীর রাস্তায় নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ। দিনভর রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন সরকার পতনের আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা। তবে দিন পেরিয়ে রাত হলেও, রাস্তায় ছাত্রদের পাশপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় ছাত্রীদেরও।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার অলী খা মসজিদ মোড় এলাকায় এমন চিত্র দেখতে পায় গণমাধ্যম।
নগরীর অলী খা মসজিদ মোড়ে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইজা তাবাসসুম বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এখানে আসা। সকালে শুনেছি সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই তারা কাজ করতে এসেছেন।
আসিফুর রহমান নামে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানান, শিফট সিস্টেম করে ছাত্ররা কাজ করছে। এখন তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের ইচ্ছায় তারা এখানে এসেছেন।
আই/এ
চট্টগ্রাম
‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিম ও তার ছেলে গণপিটুনিতে নিহত
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত ‘বালুখেকো’ খ্যাত চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তার ছেলে নায়ক শান্ত খান গনপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বালিয়া ইউনিয়নের ফরক্কাবাদ বাজারে এসে জনগণের তোপের মুখে পড়েন তারা। এরপর সেখানে নিজের পিস্তল থেকে গুলি করে উদ্ধার হয়ে আসতে পারলেও পার্শ্ববর্তী বাগাড়া বাজারে এসে জনতার মুখোমুখি হয়। তারপর সেখানে জনগণের পিটুনিতে নিহত হোন সেলিম খান ও তার ছেলে শান্ত খান।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম গণমাধ্যমে বলেন, তাদের মৃত্যুর বিষয় জেনেছি। তবে কেউ খবর দেয়নি। আর জানমালের নিরাপত্তার কারণে সেখানে কাউকে পাঠানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেলিম খান চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীতে শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। এসব ঘটনায় সে কারাভোগ করেন এবং দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। সেলিম খান একজন আলোচিত প্রযোজকও। তিনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার।
এছাড়া সেলিম খানকে পদ্মা-মেঘনার চর থেকে বিভিন্ন সময় বালু তোলাসহ নানা কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
এএম/