উত্তর আমেরিকা
বিতর্কের মুখে সরে গেলেন বোয়িংয়ের প্রধান নির্বাহী
নানা সমালোচনা আর বিতর্কের মুখে অবশেষে গেলেন উড়োজাহাজ নির্মাতা সংস্থা বোয়িংয়ের এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেভ ক্যালহাউন। সুরক্ষা ও মান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়ায় তিনি পদত্যাগ করেছেন। শুধু তাই নয়, বোয়িং নিয়ে বিতর্ক এড়াতে বেশ বড় ধরণের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সংস্থাটি। এরই ধারাবাহিকতায় বোয়িংয়ের বাণিজ্যিক এয়ারলাইন্স বিভাগের প্রধান খুব শিগগির অবসর নিতে চলেছেন। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক সংস্থাটির চেয়ারম্যানও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি আর নির্বাচনে দাঁড়াবেন না। চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি আলাস্কা এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৩৭-৯ ম্যাক্স বিমানটি ১৭১ জন যাত্রী এবং ৬ বিমানকর্মীকে নিয়ে অন্টারিয়োতে যাচ্ছিল। পোর্টল্যান্ড বিমানবন্দর থেকে উড়াল দেওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে উড়োজাহাজের দরজা ভেঙে ছিটকে পড়ে। বিমানটি তখন ১৬,৩২৭ ফুট উঁচুতে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা। কিন্তু পাইলট দক্ষতার সঙ্গে সেই অবস্থাতেই বিমানটিকে পোর্টল্যান্ড বিমানবন্দরে নিরাপদে নামিয়ে আনেন। এই ঘটনার পর আলাস্কা এয়ারলাইন্সের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন যাত্রীরা।
এ ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও সংস্থাটির সুরক্ষা ও মান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। ওইসময় সিইও ডেভ ক্যালহাউন উড়োজাহাজের দরজা উড়ে যাওয়ার ঘটনায় পুরো দায় স্বীকার করে বলেছিলেন, তাদের বড় ভুল হয়েছিল। প্রতিটি পদক্ষেপে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেই পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে যাচ্ছি। তদন্তের ফলাফলকে গুণগত মান নিশ্চিতের ইস্যু হিসেবে দেখতে হবে।’ ভবিষ্যতে যাতে মাঝ আকাশে এ ধরনের ঘটনা আর কখনোই না ঘটে, তা নিশ্চিত করা হবে।নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই এর পরের প্রতিটি উড়োজাহাজকে আকাশে ওড়ানো হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, এমন পরিস্থিতিতে বোয়িংয়ের নেতৃত্বে পরিবর্তন জরুরি হয়ে পড়েছে। শীর্ষ নেতৃত্বে ঝাঁকুনি দেওয়া প্রয়োজন। তাদের অনেকেই মনে করছেন, সংস্থাটির বর্তমান সংকট এর করপোরেট সংস্কৃতির সমস্যা থেকে উদ্ভূত হয়েছে। আর এর সমাধান কেবল নতুন অন্তর্দৃষ্টি দিয়েই সম্ভব।
২০২০ সালের শুরুর দিকে বোয়িংয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারির জেরে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেনিস মুয়েলেনবার্গ পদচ্যুত হন। তার স্থলাভিষিক্ত হন ক্যালহাউন। ওইসময় মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবধানে প্রায় একই ধরনের দুর্ঘটনায় পতিত হয় দুটি নতুন ৭৩৭ ম্যাক্স প্লেন। এতে প্রাণ হারান ৩৪৬ জন যাত্রী ও ক্রু।
এমন বিপর্যয়কালীন পরিস্থিতিতে বোয়িংয়ের বোর্ড সদস্য থেকে সিইও পদে উঠে আসেন ক্যালহাউন। প্রধান নির্বাহী হয়েই সংস্থাটির নিরাপত্তা সংস্কৃতি জোরদার এবং মানুষের আস্থা পুনঃস্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি।কিন্তু এ বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের পোর্টল্যান্ড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পরপরই আলাস্কা এয়ারলাইনসের একটি নতুন বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স প্লেনের জরুরি বহির্গমন দরজা উড়ে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানানো হয়, দরজাটিতে চারটি বোল্ট লাগানো ছিল না। এ ঘটনায় বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত হচ্ছে। পাশাপাশি, প্লেনটিতে থাকা যাত্রীদের কাছ থেকেও আইনি ব্যবস্থার মুখে পড়ছে সংস্থাটি।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
উত্তর আমেরিকা
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীকে চাপ দিলেন কামলা হ্যারিস
গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কামলা হ্যারিস।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ( ২৫ জুলাই) হোয়াইট হাউজে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ বিষয়ে নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেন। এর মধ্য দিয়ে কামলা প্রেসিডেন্ট হলে ইসরাইল ইস্যুতে কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে পরিবর্তন আনবেন তা স্পষ্ট হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কামলা বলেন, ‘ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। কিন্তু সেটি কীভাবে করা হচ্ছে তা গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘আমি গাজায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আমার উৎকণ্ঠা জানিয়েছে। আমি চুপ করে থাকব না।’
হ্যারিসের এই তীক্ষ্ণ ও জোরালো মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি কিভাবে নেতানিয়াহুকে মোকাবেলা করছেন সে বিষয়ে বাইডেনের সঙ্গে তার পার্থক্য পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।
এর কয়েক ঘন্টা আগে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন নেতানিয়াহুর সঙ্গে হোয়াইট হাউজে বৈঠক করেন। গেলো ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর বাইডেনের ইসরাইলে সফর শেষে এটিই নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার প্রথম মুখোমুখি আলোচনা। এই আলোচনায় গাজায় ৯ মাস ধরে চলা সংঘাতে একটি যুদ্ধবিরতির জন্য নেতানিয়াহুকে চাপ দেন বাইডেন।
এদিকে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এখনও ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে ব্যবধান রয়ে গেছে তবে আমরা আগের চেয়ে এখন চুক্তির কাছাকাছি আছি। যা আগে কখনও ছিলাম না।
নেতানিয়াহুর এই সফর এমন সময় হলো যখন মার্কিন রাজনীতিতে পরিবর্তন এসেছে। রোববার ( ২১ জুলাই) ৮১ বছরের বাইডেন ডেমোক্র্যাটদের চাপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন এবং দলের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট মনোনয়নের জন্য হ্যারিসকে সমর্থন করেন।
জেএইচ
উত্তর আমেরিকা
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌঁড়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকছেন বাইডেন
২০২৪ সালের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে জো বাইডেন সরে যাচ্ছেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনী দৌঁড় থেকে কেউ তাকে বাইরে ঠেলে দিচ্ছে না। তিনি দলের মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। সব চাপ উপেক্ষা করে লড়াইয়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমেরিকার এই প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় সময় বুধবার (৩ জুলাই) ডেমোক্রেটিক দলের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে থাকা কিছু কর্তা ব্যক্তির সঙ্গে এক ফোনালাপে তিনি এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
জো বাইডেন গেলো সপ্তাহে তার দুর্বল বিতর্কের জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। নির্বাচনী দৌঁড় থেকে সরে যেতে তার ওপর চাপ কার্যত বেড়েই চলেছে। এমনকি নিজের দল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতর থেকেও চাপের মুখে পড়েছেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতেই বাইডেনের এই ফোনকল।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার তার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে ফোন কলে কথা বলেন এবং ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসময় আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আসন্ন এই নির্বাচনকে সামনে রেখে গেলো বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় সিএনএনের স্টুডিওতে ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।
বিতর্কে পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, সীমান্ত ইস্যু, সামাজিক নিরাপত্তা, চাইল্ড কেয়ার, কংগ্রেস ভবনে হামলার ঘটনা এবং গর্ভপাতসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই বিতর্কে বাইডেনের পারফরম্যান্স ছিল অত্যন্ত দুর্বল। অনেকেই বলছেন, ৮০ বছরের বেশি বয়সী বাইডেনের এবার আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত নয়। কারণ, তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। বিতর্কের সময় প্রতিপক্ষের কথার জবাবও দিতে পারছেন না।
নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকেই বাইডেনের বয়স এবং কর্মক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
এমন অবস্থায় বুধবার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাইডেন। এর মাধ্যমে তিনি মূলত গেলো সপ্তাহের বিতর্কে নড়বড়ে পারফরম্যান্সের পরে তাকে নির্বাচনী লড়াই বাদ দেয়ার আহ্বানগুলো ঝেড়ে ফেলেন।
তবে ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেকেই মনে করছেন, দলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জো বাইডেনের আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত হবে না।
টিআর/