চট্টগ্রাম
নিজ বিছানায় নারীর গলাকাটা দেহ, মেঝেতে রক্তাক্ত দা
নিজ ঘরের বিছানায় পড়ে ছিল নারীর গলাকাটা দেহ। ঠিক তার পাশে মেঝেতে ছিল রক্তাক্ত দা। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করলেও হত্যাকাণ্ডে রহস্য তাৎক্ষণিক উদঘাটন করতে পারেনি। মঙ্গলবার দিনগত রাতে কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়ার চেয়ারম্যান ঘাটা এলাকায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিহত নারী রিনা আক্তার (৪০) কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ রুমালিয়ারছয়ার চেয়ারম্যান ঘাটা এলাকার হাফেজ আবু নাছের সিদ্দিকীর স্ত্রী। রাতেই নিহত নারীর স্বামী আবু নাছেরসহ চার জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়ার চেয়ারম্যান ঘাটা এলাকায় রাত ১২টায় ৩য় তলা একটি ভবনের সামনে উৎসুক জনতার ভিড়। সবার মধ্যে উৎকণ্ঠা। এতে রয়েছে পুলিশের কয়েকটি ইউনিটের অবস্থানও।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি রকিবুজ্জামান জানান, কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়ায় নিজ বাড়িতে এক নারীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে মুঠোফোন এমন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। ঘটনাস্থলে বিছানায় গলাকাটা অবস্থায় এক নারীর মরদেহ পড়ে ছিল। মরদেহের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি রক্তাক্ত দা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বজনরা জানায়, ঘরের দরজা খোলা ছিল আর আলমারি ভেঙ্গে লুট করা হয়েছে মূল্যবান স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা। তবে পুলিশের দাবি, এ ধরনের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ বলেন, গলা কেটে নারীকে হত্যার ঘটনা শুনে দ্রæত ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি স্বামী আবু নাছের রয়েছে। বিছানায় নারীর লাশ পড়ে রয়েছে, গলায় একটি ওড়না রয়েছে এবং মুখ রক্তাক্ত।
স্থানীয় বাসিন্দা টিপু বলেন, এখানে সন্দেহ করার মতো কোনো কারণ দেখছি না। সম্ভবত কোনো দুর্বৃত্তের দল কৌশলে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা নুরুল হক চকোরি বলেন, নারীর স্বামী আবু নাছের তারাবির নামাজ পড়ে বাসায় এসে দেখতে পান দরজা খোলা। আর বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় তার স্ত্রী লাশ পড়ে রয়েছে। একই সঙ্গে আলমারি ও লকার সব ভাঙ্গা ছিল এবং ওখানে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা ছিল না।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক মো. রকিবুজ্জামান বলেন, আলমারি ও লকার ভাঙ্গা ছিল এবং স্বর্ণালঙ্কার বা নগদ টাকা লুট করা হয়েছে এ ধরনের কিছু পাওয়া যায়নি। আর ঘটনার ব্যাপারে বেশ কয়েকজন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে আরও অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের ৪ জনকে থানায় আনা হয়েছে। ঘটনার পর আলামত সংগ্রহ করার জন্য সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট, পিবিআই ও র্যাবের টিম আসছে। তারাও আলামত সংগ্রহের পাশাপাশি তথ্য সংগ্রহ করে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এক নারীর গলাকাটা লাশ পাওয়া গেছে। এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশ কাজ করছে। সিআইডির টিম এসেছে তারা আলামত সংগ্রহ করছে। পরবর্তী তদন্ত সাপেক্ষে হত্যাকাণ্ডে রহস্য উন্মোচন করা হবে।
চট্টগ্রাম
কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন দুই সাইকেল আরোহী
কর্ণফুলীতে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দুই সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা একটার দিকে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর বাংলাবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নন্দনালী গ্রামের কামাল মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল মণ্ডল (১৮) ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট পাগলা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল জলিলের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (১৬)। তারা কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চরপাথরঘাটার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে তারা তিনজন সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
এএম/
চট্টগ্রাম
রাতেও ট্রাফিক সামলাচ্ছেন ছাত্রীরা
সরকার পতনের পরে চট্রগ্রামে নগরীর থানাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। এ অবস্থায় নগরীর রাস্তায় নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ। দিনভর রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন সরকার পতনের আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা। তবে দিন পেরিয়ে রাত হলেও, রাস্তায় ছাত্রদের পাশপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় ছাত্রীদেরও।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার অলী খা মসজিদ মোড় এলাকায় এমন চিত্র দেখতে পায় গণমাধ্যম।
নগরীর অলী খা মসজিদ মোড়ে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইজা তাবাসসুম বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এখানে আসা। সকালে শুনেছি সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই তারা কাজ করতে এসেছেন।
আসিফুর রহমান নামে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানান, শিফট সিস্টেম করে ছাত্ররা কাজ করছে। এখন তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের ইচ্ছায় তারা এখানে এসেছেন।
আই/এ
চট্টগ্রাম
‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিম ও তার ছেলে গণপিটুনিতে নিহত
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত ‘বালুখেকো’ খ্যাত চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তার ছেলে নায়ক শান্ত খান গনপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বালিয়া ইউনিয়নের ফরক্কাবাদ বাজারে এসে জনগণের তোপের মুখে পড়েন তারা। এরপর সেখানে নিজের পিস্তল থেকে গুলি করে উদ্ধার হয়ে আসতে পারলেও পার্শ্ববর্তী বাগাড়া বাজারে এসে জনতার মুখোমুখি হয়। তারপর সেখানে জনগণের পিটুনিতে নিহত হোন সেলিম খান ও তার ছেলে শান্ত খান।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম গণমাধ্যমে বলেন, তাদের মৃত্যুর বিষয় জেনেছি। তবে কেউ খবর দেয়নি। আর জানমালের নিরাপত্তার কারণে সেখানে কাউকে পাঠানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেলিম খান চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীতে শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। এসব ঘটনায় সে কারাভোগ করেন এবং দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। সেলিম খান একজন আলোচিত প্রযোজকও। তিনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার।
এছাড়া সেলিম খানকে পদ্মা-মেঘনার চর থেকে বিভিন্ন সময় বালু তোলাসহ নানা কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
এএম/