আন্তর্জাতিক
মার্কিন মুসলিমদের কষ্ট ‘বোঝেন’ বাইডেন
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অবিরাম হামলায় হাজার হাজার বেসামরিক ফিলিস্তিনির নিহত হওয়ায় মার্কিন মুসলিমরা যে খুবই মনোকষ্টে রয়েছেন, তা বোঝেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শুক্রবার (২৯ মার্চ) এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছেন তিনি।
শনিবার (৩০ মার্চ) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স’র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর ২০২১ সালে এপ্রিল মাসকে ‘আরব আমেরিকান হেরিটেজ মান্থ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। আর দু’দিন পরেই শুরু হচ্ছে এপ্রিল মাস। দরজায় কড়া নাড়তে থাকা ‘আরব আমেরিকান হেরিটেজ মান্থ’কে সম্মান জানিয়ে শুক্রবার এক লিখিত বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, ‘গাজায় চরম মানবিক বিপর্যয় চলছে। প্রতিদিন শত শত বেসামরিক মানুষেল সেখানে নিহত হওয়া এবং সহিংসতার জেরে মার্কিন মুসলিমরা যে নিদারুন মানসিক কষ্টে আছেন তা আমরা বুঝতে পারি। ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজেও এ ইস্যুতে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত।’
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, বাইডেন এই বার্তা দেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলের কাছে বোমা ও যুদ্ধবিমান বিক্রয় সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাইডেন প্রশাসন। যুক্তিতে যত সংখ্যক বোমা ও যুদ্ধবিমানের উল্লেখ রয়েছে, বর্তমান বাজারে সেসবের দাম শত কোটি ডলারের ওপর।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েলের সবচেয়ে পুরোনো, বিশ্বস্ত ও প্রভাবশালী মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিশ্বের এই একমাত্র ইহুদি রাষ্ট্রটিকে আর্থিক, সামরিক, রাজনৈতিক ও গোয়েন্দা সহায়তা দিয়ে আসছে ওয়াশিংটন।
সেই ধারাবাহিকতায় গাজায় হামাস ও ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান যুদ্ধের শুরু থেকেই ইসরায়েলকে সমরাস্ত্র ও রাজনৈতিক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি এ পর্যন্ত জাতিসংঘে গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত যত প্রস্তাব উঠেছে, সেগুলো মধ্যে সর্বশেষ প্রস্তাবটি ব্যতীত বাকি সবগুলো ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে বাতিল করেছে ওয়াশিংটন।
এদিকে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রেও দিন দিন তীব্র হয়ে উঠছে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি। বাইডেন প্রশাসনের ওপর দেশটির মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন যে ক্ষুব্ধ-হতাশ— তা প্রকাশ্যেই বলেছেন মার্কিন মুসলিম নেতারা।
চলতি বছরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বাইডেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে জনসংযোগ ও তহবিল সংগ্রহের কাজও শুরু করেছেন তিনি।
তবে এ সংক্রান্ত তার প্রতিটি সমাবেশে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন মার্কিন মুসলিম ও ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্যরা।
গেলো ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে হামলা চলায় হামাস যোদ্ধারা। অতর্কিত সেই হামলায় ইসরায়েলে সেদিন নিহত হন ১ হাজার ২০০ মানুষ, সেই সঙ্গে ২৪০ জন মানুষকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা।
অভূতপূর্ব এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সেই দিন থেকেই গাজা উপত্যকায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। গত ছয় মাস ধরে চলমান সেই অভিযানে ইতোমধ্যে উপত্যকায় নিহত হয়েছেন ৩২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭৪ হাজার। সেই সঙ্গে বাড়িঘর হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//