অপরাধ
কুড়িবার জামিন পেয়েও ডাকাতি, একুশবারে গ্রেপ্তার সাতক্ষীরা থেকে
শুরুটা ২০১৭ সালে। সে বছর মাদারিপুরে প্রথম ডাকাতি করতে যেয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়। জেলেও যায় যথারীতি। জামিনে এসে আগের চেয়ে কৌশলী ও অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে সে। ২০২১ সালে তার গ্যাং ১৭ টি ডাকাতির ঘটনা ঘটায়। ২০২৩ সালে ৭টি ডাকাতি করে। প্রায় প্রতিবারই গ্রেপ্তার হয়ে আদালতে সোপর্দ হয়েছে। পেয়েছে জামিনও। আবারও ফিরেছে অন্ধকারের চোরা গলিতে। বলছিলাম ৩২ বছর বয়স্ক ডাকাত সরদার রিপন খান ওরফে জাফরের কাহিনী। ২৪ বছর বয়স থেকে শুরু করে গেলো ৮ বছরেই এতো সংখ্যক ডাকাতি, ছিনতাই ইত্যাদি কুখ্যাত অপরাধ ঘটিয়েছে ফেলেছে সে। সম্প্রতি তার নেশা হয়ে দাড়িয়েছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার স্বপ্ন সুপারশপে ডাকাতি করা। সর্বশেষ ৮ ডাকাতিই করেছে স্বপ্ন সুপারশপের বিভিন্ন আউটলেটে।
ডাকাতির পদ্ধতিটিও খুবই আদিম ও বর্বরোচিত। টার্গেট আউটলেটে আগে থেকে রেকি করে তার দল। পরিকল্পনা মোতাবেক নির্দিষ্ট সময়ে চাপাতি, মুগুরসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঝাপিয়ে পরে। দলের একজন অথবা দুজন সদস্য ভদ্রভাবে কথা বলে আউটলেটের নিরাপত্তাকর্মীর সাথে। অন্য সদস্য অতি সন্তপর্নে নিরাপত্তাকর্মীর ঘাড়ের পেছনে মুগুরের এক আঘাতে বেহুশ করে ফেলে। তারপর হাত-পা বেঁধে নিজেদের পিক-আপে বসিয়ে রাখে ওই নিরাপত্তাকর্মীকে। নির্বিঘ্নে ডাকাতি শেষে নিরাপত্তাকর্মীকে ফেলে রেখে চলে যায়।
কুখ্যাত এই জাফরবাহিনীর পুরো দলকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রামপুরা থানা পুলিশ। সাবইন্সপেক্টর কামরুল ইসলাম জিহানের টিম বাগেরহাটের ফকিরহাট থেকে ডাকাতি প্রস্তুতিকালে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে। টিম লিডার রামপুরা থানার ইন্সপেক্টর(তদন্ত) গোলাম মাওলা পিপিএম জানান, গেলো ২০ মার্চ আনুমানিক রাত ৩টায় রামপুরা থানাধীন বনশ্রী বি ব্লক মেইন রোডের স্বপ্ন সুপার শপে একটি ডাকাত দল তালা কেটে ভিতরে প্রবেশ করে এবং ডাকাত দলের সদস্যরা বিদেশী ব্যান্ডের বিভিন্ন পারফিউম, বিভিন্ন ব্যান্ডের স্যাম্পুসহ কসমেটিকস আইটেম ০২টি বস্তায় ভর্তি করে পিকআপ গাড়িতে উঠায় এবং ০২ জন গার্ডকে গুরুতর আহাত করে পিকআপে উঠিয়ে নিয়ে বিটিভি ট্রাফিক পুলিশ বক্সের পাশে রাস্তায় ফেলে চলে যায়। ঘটনার তদন্তে প্রথমেই ডাকাত সরদার এবং মূল হোতা রিপন খান জাফরকে সনাক্ত করে এবং অভিযান পরিচালনা করে গেলো বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে মেইন রাস্তা হতে গ্রেপ্তার করে। পরে রিপন খান জাফরের স্বীকারোক্তি মোতাবেক স্বপ্ন সুপার শপের লুণ্ঠিত মালামাল ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন বলিভদ্র বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন গফুর মন্ডল মার্কেটের আশা কসমেটিকস এবং গোপালগঞ্জ কসমেটিকসের দোকান হতে উদ্ধার করে। একই সাথে, ডাকাতির লুণ্ঠিত মালামাল ক্রয়ের অপরাধে মোঃ তারেক হাসান (৩৬) এবং মোঃ তালহা নামের ০২ জন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে।
পরবর্তীতে, ডাকাত সরদার রিপন খান জাফরের দেয়া তথ্যে বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট থানার বড় খাজুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে স্থানীয় থানা পুলিশের সহায়তায় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের আরও ০৩ সদস্য সোহেল খান(২২), মোঃ নজরুল ইসলাম(৫০) এবং মোঃ জুয়েল ইসলাম(৩০)-কে গ্রেপ্তার করে এবং রামপুরা থানার স্বপ্ন সুপার শপের ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত পিকআপ (রেজিঃ নং-খুলনা মেট্রো ন-১১-১৪৭৩) উদ্ধার করে।
মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার হায়াতুল ইসলাম খান জানান, ডাকাতেরা প্রতিবার পিকআপের নাম্বার প্লেট পরিবর্তন করে ডাকাতিতে যায়। তিনি আরও জানান, ডাকাত সরদার রিপন খান জাফরের নামে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, বগুড়া, মাদারীপুর, মুন্সিগঞ্জ, বরিশালসহ বিভিন্ন থানায় ডাকাতি, খুনসহ ডাকাতি ও দস্যুতার ২২টি মামলা রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ডাকাত দলের টিম লিডার রিপন খান জাফর এর নেতৃত্বে ধৃত ডাকাত দলের সদস্যরা ডিএমপির কাফরুল, বাড্ডা, শেরে বাংলানগর থানা সহ ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী এবং নীলফামারী জেলা সৈয়দপুরে স্বপ্নের একাধিক সুপার শপে চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে।
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ