রেসিপি
বৈচিত্র্য আনতে করল্লা দিয়ে রাঁধতে পারেন অন্য খাবার
আজকাল বাজার করে ফিরলেই ব্যাগ থেকে উঁকি মারে কচি কচি সবুজ করল্লা। গরমকাল মানেই নানা ধরনের সংক্রমণের ভয়। তাই বাঙালি গ্রীষ্মকালীন রোগবালাইয়ের সঙ্গে লড়াই করতে ভরসা রাখে করল্লার উপর। করল্লা ভাজা, করল্লা সেদ্ধ বাঙালির হেঁশেলে হয়েই থাকে। তবে পদে বৈচিত্র্য আনতে করল্লা দিয়ে রাঁধতে পারেন অন্য খাবার।
করল্লা-আলুর বাটি চচ্চড়ি
ডুমো ডুমো করে আলু আর করল্লাকেটে নিন। এবার কড়াইয়ে তেল গরম করে জিরে আর কাঁচা মরিচ ফোড়ন দিন। তারপরে আলু আর করল্লার টুকরোগুলি তাতে ছেড়ে দিন। হালকা ভাজা হলে তাতে পেঁয়াজ বাটা দিয়ে দিন। নাড়তে থাকুন ভাল ভাবে। তার ফাঁকেই স্বাদমতো লবন আর এক চামচ হলুদ গুঁড়ো দিন। সব্জিটা হালকা ভাজা হলে তাতে আধ কাপ পানি দিয়ে দিন। আর একটু নেড়েচেড়ে নিয়ে কড়াইটা ঢেকে রাখুন। ঢাকা সরিয়ে মাঝেমাঝেই নাড়তে থাকতে হবে, যাতে চচ্চড়িটা কড়াইয়ে লেগে না যায়। করল্লা-আলুর বাটি একেবারে শুকনো হয় না। একটু মাখা মাখা হতে হবে। ফলে সময় থাকতে নামিয়ে নিন। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।
করল্লার ডাল
পাতলা আর চাকা চাকা করে কেটে সামান্য লবন ও হলুদ দিয়ে ভেজে রাখুন। মুগ ডাল শুকনো খোলায় হালকা লালচে করে ভেজে নিন। প্রেশার কুকারে মুগ ডাল সামান্য লবন আর হলুদ দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। এবার কড়াইতে ঘি গরম করে শুকনো মরিচ, পাঁচফোড়ন আর রাঁধুনি ফোড়ন দিন। তাতে সেদ্ধ ডাল দিয়ে দিন। এবার ভাজা করল্লার টুকরো আর স্বাদ মতো লবন দিয়ে ডাল ফুটতে নিন। ডাল ফুটে উঠলে আর এক চামচ ঘি দিয়ে নামিয়ে নিন।
সর্ষে মাখা করল্লা
প্রথমে করল্লাগুলি ধুয়ে ছোট ছোট করে কেটে নিন। একই মাপমতো আলু এবং পটলও কেটে নিন। এবার কড়াইয়ে তেল দিয়ে পাঁচফোড়ন ও কাঁচালঙ্কা দিন। তারপর আলু, করল্লা এবং পটল দিয়ে নাড়াচাড়া করতে থাকুন। লবন আর হলুদ দিয়ে কম আঁচে ভাল করে নাড়ুন যত ক্ষণ না সব্জি থেকে জল বেরোয়। সব্জি সেদ্ধ হয়ে এলে নাড়াচাড়া করে সর্ষেবাটা দিয়ে উপর থেকে একটু তেল ছড়িয়ে ঢাকা দিয়ে রাখুন। মাখোমাখো হয়ে এলে নামিয়ে নিন।
রেসিপি
ম্যাংগো পুডিং তৈরির রেসিপি
আমের সিজনে অনেকেই আমের পাল্প ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করেন। সেই ম্যাংগো পাল্প দিয়েই ম্যাংগো পুডিং বানানো যাবে। আর আমের সিজনে তো ফ্রেশ আমই ব্যবহার করতে পারবেন। ছোট বাচ্চাদের জন্য এটি বেশ হেলদি একটি ডেজার্ট আইটেম। মাত্র ৪টি উপাদান দিয়েই ইয়াম্মি ইয়াম্মি ম্যাংগো পুডিং বানিয়ে নেয়া যায়। চলুন দেরি না করে রেসিপিটি জেনে নেই এখনই।
উপকরণ
ঘন দুধ- ১ কাপ
চিনি- স্বাদ অনুযায়ী ( আমি হাফ কাপ দেই )
আম- ২টি
ডিম- ২টি
ম্যাংগো পুডিং তৈরির পুরো প্রণালী
১. প্রথমে আম ছোট ছোট করে কেটে নিন। দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করুন এবং ঠাণ্ডা করে নিন।
২. এবার ব্লেন্ডার জগে আম, চিনি, দুধ ও ডিম সবকিছু দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন।
৩) মিশ্রণটি মোটামুটি ঘন ও থকথকে হবে। যদি বেশি ঘন হয়ে যায়, লিকুইড দুধ মিশিয়ে নিতে হবে।
৪. এবার একটি স্টিলের টিফিন বক্সে পুডিংয়ের মিশ্রণ ঢেলে নিতে হবে।
৫. বড় সসপ্যানে পানি ফুটতে দিন। এবার একটি স্ট্যান্ড প্যানে সেট করে তার উপর স্টিলের টিফিন বক্সটি রাখুন।
৬. বাটির ঢাকনা ভালোভাবে আটকাবেন এবং পানি যেন ভেতরে না যেতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
৭. চুলার আঁচ মিডিয়াম রাখুন, ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করে চেক করুন পুডিং জমেছে কি না।
৮. পুডিং জমে গেলে চুলা নিভিয়ে দিন। এরপর রুম টেম্পারেচারে ঠাণ্ডা করে নিতে হবে।
ব্যস, আমের পুডিং বানানো হয় গেলো! চাইলে ফ্রিজে রেখে ম্যাংগো পুডিং ভালোভাবে সেট করে নিতে পারেন। সেট হয়ে গেলে টিফিন বক্স থেকে পুডিংটি একটি প্লেটে সাবধানে উল্টিয়ে ঢেলে নিন। এবার ছুরি দিয়ে পিস পিস করে কেটে সার্ভ করুন। আর এটি ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা খেতে কিন্তু বেশি মজা লাগে। সব উপকরণগুলো বাসাতে থাকলে আজই বানিয়ে নিন দারুন মজাদার ডেজার্টটি।
জেএইচ
রেসিপি
নবাবী সেমাই রেসিপি
আমরা সবাই কম বেশি সেমাইয়ের সাথে পরিচিত। আমরা সবাই-ই সেমাই রান্না করতে জানি। কিন্তু আজ নিয়ে এলাম নবাবী সেমাই-এর রেসিপি। এটা এতটাই মজাদার যে, খেয়ে মনে হবে, আপনি যেন কোনো রাজাদের বাড়িতে রাজ ভোজনে আছেন! তাহলে চলুন যেনে নেই কী করে এই স্পেশাল নবাবীসেমাই-টি তৈরি করতে হয়।
উপকরণ
২ টেবিল চামচ ঘি
২ প্যাকেট লাচ্ছা সেমাই (প্রতি প্যাকেট ১৮০ গ্রাম করে)
১ কাপ চিনি
৩ টেবিল চামচ গুঁড়া দুধ
কাজু ও পেস্তা বাদাম ক্রাশ করা ১ টেবিল চামচ
ক্রিম তৈরির জন্য-
১ লিটার দুধ
১ কাপ কনডেন্স মিল্ক
১/২ কাপ গুঁড়া দুধ
১/২ কাপ ডানো অথবা নেসলে ক্রিম (সুপারশপে পেয়ে যাবেন)
৪ টেবিল চামচ কর্নফ্লাওয়ার
প্রণালী
১. একটি ফ্রাই প্যানে ঘি দিন। ঘি একটু গরম হয়ে এলে লাচ্ছা সেমাইটি নেড়েচেড়ে হালকা করে ভেঁজে নিন। কিছুটা ভাঁজা হয়ে গেলে চিনি দিয়ে দিন এবং ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
চিনি ভালো করে মিশে যাওয়ার পর গুঁড়া দুধ দিয়ে ৬-৭ মিনিট নাড়াচাড়া করে রান্না করতে হবে। সেমাইয়ের রঙটি হালকা বাদামি হয়ে এলে নামিয়ে রাখুন।
২. এরপর ক্রিম তৈরি করার পালা। ১ লিটার দুধকে জ্বালিয়ে ১/২ লিটার করে নিতে হবে। এখন চুলায় মিডিয়াম আঁচে এই দুধের মধ্যে দিয়ে দিন কনডেন্স মিল্ক এবং গুঁড়া দুধ।
ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর ক্রিম দিয়ে ভালোভাবে নাড়াচাড়া করে, কর্নফ্লাওয়ার দিয়ে হ্যান্ড বিটার দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে স্মুথ করে ফেলুন। ১০ মিনিট পর্যন্ত রান্না করতে থাকুন যা একটি ঘন ক্রিমে পরিনত হবে।
৩. এখন ভেঁজে রাখা সেমাইগুলো একটি সারভিং ডিসে ১/৪ ভাগ ছড়িয়ে তুলে নিন। এরপর পুরো সেমাইটির উপরে সব ক্রিমগুলো আলতোভাবে ঢেলে দিন। এখন ৪-৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
ঠাণ্ডা হয়ে আসলে বাকি সেমাইটুকু হাত দিয়ে উপরে ভালোভাবে ছড়িয়ে দিন। এখন এর উপরে কাজু ও পেস্তা বাদাম সুন্দর করে ছড়িয়ে দিন।তৈরি হয়ে গেল মজাদার নওয়াবি সেমাই। উপভোগ করুন সবাই মিলে।
জেএইচ
রেসিপি
রুই মাছের ডিমের কাবাব রেসিপি
মাছের কাবাব তো অনেকেই খেয়েছেন। মাছের ডিম দিয়ে তৈরি কাবাব কি খেয়েছেন? মাছের ডিমের কাবাব! আজ ভিন্ন স্বাদের রুই মাছের ডিমের কাবাব তৈরির পদ্ধতি জানাবো। খুবই সহজ ও সুস্বাদু! তো চলুন, জেনে নেই কীভাবে তৈরি করবেন মাছের ডিমের কাবাব।
উপকরণ
রুই মাছের ডিম- ৩ কাপ
পেঁয়াজ কুচি- ২ কাপ
কাঁচামরিচ কুচি- ৩ চা চামচ
চিলি ফ্লেকস- ১ চা চামচ
হলুদ গুঁড়া- ১ চা চামচ
জিরা গুঁড়া- ১/২ চা চামচ
কাবাব মসলা- ১/২ চা চামচ
লেবুর রস- সামান্য
লবণ- পরিমাণমতো
তেল– ভাজার জন্য
চালের গুঁড়া অথবা কর্ণফ্লাওয়ার- ১/২ কাপ
প্রস্তুত প্রণালী
১. প্রথমে একটি পাত্রে মাছের ডিমের সাথে একে একে সব উপকরণ মিশিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখবো।
২. তারপর মাখানো মাছের ডিম কাবাবের শেইপ করে নিতে হবে।
৩. এবার একটি প্যানে তেল গরম করে তাতে কাবাবগুলো দিয়ে অল্প আঁচে বাদামী করে ভেজে নিবো।
৪. এরপর নামিয়ে গরম ভাত কিংবা পোলাওয়ের সাথে পরিবেশন করুন রুই মাছের ডিমের কাবাব।
এই কাবাব খেতে যেমন মজাদার, বানানোও খুব সহজ। তো আজই তৈরি করুন এবং উপভোগ করুন ভিন্নধর্মী এই কাবাবটি।
জেএইচ