বাংলাদেশ
টি-টোয়েন্টি সিরিজেও হারলো বাংলাদেশ
ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে টেস্টে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজও সেই ধরাই ধরে রাখলো টাইগাররা।
অধিনায়ক নিকোলাস পুরান ও ওপেনার কাইল মায়ার্সের ব্যাটিং নৈপুন্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজও হারলো সফরকারীরা।
রাতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৫ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। ফলে টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-০ ব্যবধানে হারলো টাইগাররা। টি-টোয়েন্টির আগে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিলো বাংলাদেশ।
বৃষ্টির কারণে প্রথম টি-টোয়েন্টি ভেস্তে যাবার পর দ্বিতীয়টিতে ৩৫ রানে জিতেছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাই সিরিজের তৃতীয় ও শেষটি দুদলের জন্যই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে। ম্যাচ জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজ জয়ের স্বাদ নেয়া এবং আর সিরিজ হার এড়াতে জয়ের বিকল্প ছিলো না বাংলাদেশের।
গায়ানার প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। পেসার তাসকিন আহমেদের জায়গায় একাদশে সুযোগ পান স্পিনার নাসুম আহমেদ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৬৪ রানের টার্গেট ছুঁড়ে দিয়ে শুরুতেই ম্যাচের লাগাম টেনে ধরে বাংলাদেশের তিন স্পিনার নাসুম আহমেদ, মাহেদি হাসান ও সাকিব। প্রথম ওভারের শেষ বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপেনার ব্রান্ডন কিংকে থামান নাসুম।
প্রথম বলটি ওয়াইড হবার পরের ডেলিভারিতে স্লগ সুইপে ছক্কা মারেন কিং। শেষ বলটি মিড-অনের উপর দিয়ে মারতে চেয়েছিলেন কিং। কিন্তু সার্কেলের মধ্যে থাকা মাহমুদুল্লাহর হাতে ক্যাচ জমা পড়ে। ৭ রান করেন কিং।
চতুর্থ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন মাহেদি। আগের দুই ওভারে নাসুম ও মাহেদি একটি করে চার মারা ব্রুকস থামেন। সুইপ করে স্কয়ার লেগে বিজয়ের হাতে ক্যাচ দেন ৯ বলে ১২ রান করা ব্রুকস।
২২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ অবস্থায় রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করে মায়ার্স। পঞ্চম ওভারে নাসুমকে ১টি করে চার-ছক্কা মারেন তিনি। পরের ওভারে ১টি চার মারেন। ফলে পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেট হারিয়ে ৪৩ রান পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
পাওয়ার প্লে শেষে প্রথমবারের মত বল হাতে আক্রমনে আসেন সাকিব। প্রথম ডেলিভারিতেই উইকেট তুলে নেন সাকিব। সাকিবের স্টাম্পে পড়া বল সুইপ করতে গিয়ে লেগ বিফোর হন স্মিথ। রিভিউ নেননি তিনি। ২ রান করেন স্মিথ। ফলে ৪৩ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় ক্যারিবীয়রা।
এরপর ক্রিজে মায়ার্সের সাথে জুটি বাঁধেন পুরান। পরিস্থিতির সাথে দ্রুত মানিয়ে নিয়ে উইকেট ধরে খেলেন তারা। ফলে ১১ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ছিলো ৩ উইকেটে ৮০। শরিফুলের করা ১২তম ওভার থেকে ১৩ রান নেন মায়ার্স-পুরান।
মুস্তাফিজের করা ১৩তম ওভার থেকে ১৫ রান নেন মায়ার্স-পুরান। ১৪তম ওভারের প্রথম বলে বোলার মোসাদ্দেকের মাথার উপর দিয়ে ছক্কা মেরে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মায়ার্স। এজন্য ৩৩ বল খেলেছেন তিনি।
নাসুমের শেষ ও ইনিংসের ১৫তম ওভারে ভাঙ্গে মায়ার্স-পুরান জুটি। দ্বিতীয় বলে পুরান ছক্কা মারলেও, চতুর্থ বলে মায়ার্সকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান নাসুম। ৩৮ বলে ২টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৫৫ রান করেন মায়ার্স। তবে ঐ ওভারের শেষ দুই বলে ১টি করে চার-ছক্কা মারেন পুরান। পঞ্চম বলে মারা ছক্কায় টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের নবম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন পুরান। ওভার থেকে ১৯ রান পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই ১৯ রানেই ম্যাচের লাগাম নিয়ে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এমন অবস্থায় জয়ের জন্য শেষ ৫ ওভারে ২৬ রান দরকার পড়ে ক্যারিবীয়দের।
১৭তম ওভারে দ্বিতীয়বারের আক্রমনে আসেন সাকিব। ততক্ষণে ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে বাংলাদেশ। ১৮তম ওভারে রোভম্যান পাওয়েলকে ৫ রানে বিদায় দেন আফিফ। ঐ ওভারের চতুর্থ ও মাহমুদুল্লাহর পরের ওভারের দ্বিতীয় বলে ছক্কা মেরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জয় এনে দেন পুরান।
৫টি করে চার-ছক্কায় ৩৯ বলে অপরাজিত ৭৪ রান করেন পুরান। ৩ রানে অপরাজিত থাকেন আকিল। বাংলাদেশের নাসুম ২টি, মাহেদি-সাকিব-আফিফ ১টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ ও সিরিজ সেরা হন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলনেতা পুরান।
আগামী ১০ জুলাই তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ