উত্তর আমেরিকা
অক্সফোর্ডের টিকাই নেবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনার ভ্যাকসিনই নেবেন বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। টিকার নিরাপত্তা নিয়ে ইউরোপে শঙ্কার মধ্যে গতকাল বুধবার এ ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, নিরাপত্তা-শঙ্কায় ইউরোপের কয়েকটি দেশ সাময়িকভাবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকার ব্যবহার স্থগিত করেছে। তবে বুধবার এই টিকার নিরাপত্তা নিয়ে ওঠা প্রশ্ন পার্লামেন্টে নাকচ করে দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
বরিস জনসন আইনপ্রণেতাদের বলেন, অবশেষে আমি জানতে পেরেছি খুব দ্রুত আমাকে ভ্যাকসিন নিতে হবে। এটা জানতে পেরে আনন্দিত। এটা অবশ্যই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা হবে, এটাই আমি নেব।
ব্রিটেনে ভ্যাকসিন নেওয়ার পরবর্তী ধাপে যারা রয়েছে তাদের একজন ৫৬ বছর বয়সী জনসনও। আগামী জুলাই মাস নাগাদ দেশটির সব প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ভ্যাকসিন প্রয়োগের পরিকল্পনা করেছে ব্রিটিশ সরকার।
ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক জানান, সময়সূচী নিয়ম মতোই চলছে। যদিও ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রশাসন বা এনএইচএস চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, ২৯ মার্চ থেকে এক মাস পর্যন্ত ভ্যাকসিন সরবরাহে উল্লেখযোগ্য ঘাটতি তৈরি হতে পারে।
হ্যানকক বলেন, ভ্যাকসিনের সরবরাহ সবসময়ই অনিশ্চিত। তাই আমরা নিয়মিতভাবে এনএইচএসকে চিঠি দেই যেন সরবরাহের উত্থান-পতনগুলো কয়েক সপ্তাহ আগেই জানানো যায়।
ব্রিটেনে গেল বছরের ডিসেম্বরে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। ইতোমধ্যে আড়াই কোটিরও বেশি মানুষকে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন পেয়েছে এক কোটি ১০ লাখ মানুষ। ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিনও প্রয়োগ করা হচ্ছে দেশটিতে। তবে যারা ভ্যাকসিন নিচ্ছে তারা সাধারণত নিজের পছন্দমত কোনো বিশেষ কোম্পানির ভ্যাকসিন নিতে পারে না।
এর আগে, দ্য টাইমস সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক নিবন্ধে জনসন লিখেছেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নিরাপদ এবং এটি খুবই ভালোভাবে কাজ করে।
সম্প্রতি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ থেকে ব্যবহার স্থগিতের ঘোষণা দেয় বিভিন্ন দেশ। গেল সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৃহত্তম তিন দেশ জার্মানি, ইতালি ও ফ্রান্স অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাদান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে স্পেন, পর্তুগাল, স্লোভেনিয়া, লাটভিয়া। এরও আগে টিকার ব্যবহার সাময়িক স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয় নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, নরওয়ে, বুলগেরিয়া, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড। এই টিকার ব্যবহার বিলম্বিত করছে ইন্দোনেশিয়াও। এই টিকায় রক্ত জমাট বাধার আশঙ্কা থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেয় দেশগুলো।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউরোপীয় ওষুধ পর্যবেক্ষক সংস্থা ও ব্রিটেনের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিরাপদ। এই টিকার সঙ্গে ব্যক্তির শরীরে রক্ত জমাট বাঁধতে যোগসূত্র থাকার কোনো প্রমাণ নেই। এই টিকার ব্যবহার বন্ধ না করে চালিয়ে যাওয়া উচিত।
এসএন
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
উত্তর আমেরিকা
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীকে চাপ দিলেন কামলা হ্যারিস
গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কামলা হ্যারিস।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ( ২৫ জুলাই) হোয়াইট হাউজে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ বিষয়ে নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেন। এর মধ্য দিয়ে কামলা প্রেসিডেন্ট হলে ইসরাইল ইস্যুতে কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে পরিবর্তন আনবেন তা স্পষ্ট হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কামলা বলেন, ‘ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। কিন্তু সেটি কীভাবে করা হচ্ছে তা গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘আমি গাজায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আমার উৎকণ্ঠা জানিয়েছে। আমি চুপ করে থাকব না।’
হ্যারিসের এই তীক্ষ্ণ ও জোরালো মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি কিভাবে নেতানিয়াহুকে মোকাবেলা করছেন সে বিষয়ে বাইডেনের সঙ্গে তার পার্থক্য পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।
এর কয়েক ঘন্টা আগে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন নেতানিয়াহুর সঙ্গে হোয়াইট হাউজে বৈঠক করেন। গেলো ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর বাইডেনের ইসরাইলে সফর শেষে এটিই নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার প্রথম মুখোমুখি আলোচনা। এই আলোচনায় গাজায় ৯ মাস ধরে চলা সংঘাতে একটি যুদ্ধবিরতির জন্য নেতানিয়াহুকে চাপ দেন বাইডেন।
এদিকে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এখনও ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে ব্যবধান রয়ে গেছে তবে আমরা আগের চেয়ে এখন চুক্তির কাছাকাছি আছি। যা আগে কখনও ছিলাম না।
নেতানিয়াহুর এই সফর এমন সময় হলো যখন মার্কিন রাজনীতিতে পরিবর্তন এসেছে। রোববার ( ২১ জুলাই) ৮১ বছরের বাইডেন ডেমোক্র্যাটদের চাপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন এবং দলের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট মনোনয়নের জন্য হ্যারিসকে সমর্থন করেন।
জেএইচ
উত্তর আমেরিকা
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌঁড়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকছেন বাইডেন
২০২৪ সালের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে জো বাইডেন সরে যাচ্ছেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনী দৌঁড় থেকে কেউ তাকে বাইরে ঠেলে দিচ্ছে না। তিনি দলের মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। সব চাপ উপেক্ষা করে লড়াইয়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমেরিকার এই প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় সময় বুধবার (৩ জুলাই) ডেমোক্রেটিক দলের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে থাকা কিছু কর্তা ব্যক্তির সঙ্গে এক ফোনালাপে তিনি এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
জো বাইডেন গেলো সপ্তাহে তার দুর্বল বিতর্কের জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। নির্বাচনী দৌঁড় থেকে সরে যেতে তার ওপর চাপ কার্যত বেড়েই চলেছে। এমনকি নিজের দল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতর থেকেও চাপের মুখে পড়েছেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতেই বাইডেনের এই ফোনকল।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার তার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে ফোন কলে কথা বলেন এবং ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসময় আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আসন্ন এই নির্বাচনকে সামনে রেখে গেলো বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় সিএনএনের স্টুডিওতে ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।
বিতর্কে পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, সীমান্ত ইস্যু, সামাজিক নিরাপত্তা, চাইল্ড কেয়ার, কংগ্রেস ভবনে হামলার ঘটনা এবং গর্ভপাতসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই বিতর্কে বাইডেনের পারফরম্যান্স ছিল অত্যন্ত দুর্বল। অনেকেই বলছেন, ৮০ বছরের বেশি বয়সী বাইডেনের এবার আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত নয়। কারণ, তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। বিতর্কের সময় প্রতিপক্ষের কথার জবাবও দিতে পারছেন না।
নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকেই বাইডেনের বয়স এবং কর্মক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
এমন অবস্থায় বুধবার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাইডেন। এর মাধ্যমে তিনি মূলত গেলো সপ্তাহের বিতর্কে নড়বড়ে পারফরম্যান্সের পরে তাকে নির্বাচনী লড়াই বাদ দেয়ার আহ্বানগুলো ঝেড়ে ফেলেন।
তবে ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেকেই মনে করছেন, দলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জো বাইডেনের আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত হবে না।
টিআর/