বাংলাদেশ
কাজী নজরুলকে ‘জাতীয় কবি’ ঘোষণার গেজেট প্রকাশ করতে রুল
কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট কেন প্রকাশ করা হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আজ বুধবার (২০ জুলাই) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
এতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক এবং কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. আসাদ উদ্দিন।
এর আগে গেলো ২২ জুন কাজী নজরুল ইসলামকে ‘জাতীয় কবি’ হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। গেলো ৩১ মে কাজী নজরুল ইসলামকে ‘জাতীয় কবি’ হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের জন্য সরকারকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠায় ১০ আইনজীবী।
নোটিশ পাঠানো আইনজীবীরা হলেন- মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন, মো. জোবায়দুর রহমান, আল রেজা মো. আমির, মো. রেজাউল ইসলাম, কে এম মামুনুর রশিদ, মো. আশরাফুল ইসলাম, শাহীনুর রহমান, মো. রেজাউল করিম এবং মো. আলাউদ্দিন।
নোটিশে বলা হয়, আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ‘জাতীয় কবি’ হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় লিগ্যাল নোটিশ দাতারা উচ্চ আদালতে এর প্রতিকার চেয়ে আবেদন করবেন।
আইনজীবী মো. আসাদ উদ্দিন বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম মৌখিকভাবে বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে পরিচিত হলেও লিখিতভাবে রাষ্ট্রীয় কোনো স্বীকৃতি নেই। বলা হয়ে থাকে, ১৯২৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর কলকাতার আলবার্ট হলে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সর্বভারতীয় বাঙালিদের পক্ষ থেকে কবিকে জাতীয় সংবর্ধনা দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হকসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নজরুলকে জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে মুখে মুখে তিনি জাতীয় কবি। কিন্তু আজ পর্যন্ত সরকারিভাবে তাকে জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করে কোনো প্রজ্ঞাপন বা গেজেট প্রকাশ করা হয়নি। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। কারণ, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি কোনো মৌখিক বিষয় নয়।
আইনজীবী মো. আসাদ উদ্দিন আরো বলেন, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ২৪ মে কবিকে বাংলাদেশে আনা হয়। বসবাসের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ধানমন্ডিতে তাকে একটি বাড়ি দেয়া হয়। বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাকে ডি-লিট উপাধিতে ভূষিত করা হয়। এরপর ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দিয়ে সরকারি আদেশ জারি করা হয়। ১৯৭৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তাকে একুশে পদক দেয়া হয়। সবকিছুরই ছবি, তথ্যসহ লিখিত দলিল আছে। কিন্তু নির্মম সত্য এটিই যে জাতীয় কবি হিসাবে সরকারি ঘোষণার কোনো লিখিত দলিল বা প্রমাণ নেই।
বাংলাদেশের দুটি আইনে জাতীয় কবি হিসেবে নজরুলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি আয়োজনে তাকে জাতীয় কবি হিসেবে উল্লেখও করা হয়। কিন্তু সবই পরোক্ষ স্বীকৃতি। এমন স্বীকৃতি কালের পরিবর্তনে মুছে যেতে পারে। আগামীর প্রজন্ম একদিন হয়তো না-ও জানতে পারে যে, আমাদের জাতীয় কবির নাম কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি আমাদের ইতিহাসের অংশ। ইতিহাস ও জাতীয় স্বীকৃতি কখনো অলিখিত থাকতে পারে না। অলিখিত ইতিহাস ও তথ্য সময়ের বিবর্তনে বিলীন হয়ে যায়। এজন্য ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সংরক্ষণে রাষ্ট্রকে বিপুল অর্থ বরাদ্দ দিতে হয়।
এ ছাড়া নজরুলকে জাতীয় কবি হিসাবে ঘোষণার দাবিতে কবি পরিবারের পক্ষ হতে বারবার দাবি তোলা হয়েছে। নজরুল গবেষক এবং সাহিত্য-সংস্কৃতি সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকেও অনেক দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু অদ্যবধি এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তাই দেশের সচেতন নাগরিক এবং উচ্চ আদালতের আইনজীবী হিসেবে এ আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
এমএইচ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ