বাংলাদেশ
সাকার ফিশ চাষ করা যাবে না
দেশে অ্যাকুয়ারিয়ামের শোভাবর্ধক ও আবর্জনাভুক ‘সাকার মাছ’ ইতোমধ্যে দেশে অনেক জলাশয়ে ছড়িয়ে পড়েছে যা দেশীয় মাছের জন্য অনেকটা হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই জন্য ‘সাকার মাছ’ নিষিদ্ধ করার উদ্যেগ নিয়েছে সরকার। এই মাছটি খাবার হিসেবে অত্যন্ত নিম্নমানের। গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে আইনগতভাবে মাছটি আমদানি, উৎপাদন, বিপণনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে।
উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছের ডিম ও পানির নিচে শ্যাওলা-আবর্জনা খেয়ে খাদ্যশৃঙ্খলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে এই মাছ।
এর আগে বাংলাদেশে পিরানহা ও আফ্রিকান মাগুর মাছ নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর থেকে এই দুই প্রজাতির মাছ আমদানি, উৎপাদন, বিপণন বন্ধ রয়েছে। এরই ধারবাহিকতায় নিষিদ্ধ হচ্ছে আবর্জনাভুক সাকার ফিশ।
২০০৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পিরানহা ও ২০১৪ সালের ১০ জুন আফ্রিকান মাগুর আমদানি, উৎপাদন, বিপণন নিষিদ্ধ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের গেজেট প্রকাশিত হয়। পিরানহা মাছ রূপচাঁদা নামে এবং ছোট আকারের আফ্রিকান মাগুর বিক্রি করা হচ্ছে দেশি মাগুর বলে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নানান সময়ে বিপুল পরিমাণের আফ্রিকান মাগুর এবং পিরানহা মাছ উদ্ধার করা হয়েছে। শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়েছে সংশ্লিষ্টদের।
প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিস রুলস, ১৯৮৫ এর কয়েকটি ধারা সংশোধন করে আফ্রিকান মাগুরের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। বিদেশ থেকে আফ্রিকান মাগুর ও পিরানহা মাছ, মাছের রেণু ও পোনা আমদানি করলে জেল জরিমানার বিধান রেখে মৎস্য সংগনিরোধ আইন-২০১৭ এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিপরিষদ। এ আইন অমান্য করলে দুই বছরের জেল ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন অববাহিকার সিলারিফর্মস বর্গের লোরিকারিডাই পরিবারের অন্তর্ভুক্ত সাকার মাছ। আমাদের দেশে সাকার, প্লেকো এবং স্থানীয়ভাবে চগবগে নামেও পরিচিত। মাছটি বর্তমানে উন্মুক্ত জলাশয় ও চাষের পুকুরে পাওয়া যাচ্ছে, যা উদ্বেগজনক। স্বাদু পানির এ মাছটি শ্যাওলা পরিষ্কারক বাহারি মাছ হিসেবে সাধারণত অ্যাকুরিয়ামে ব্যবহার করা হয়।
মৎস্য সংশ্লিষ্টরা সুত্রে জানা গেছে, ২০০১ বা ২০০২ সালের দিকে ইউরোপের এক কূটনীতিক মেয়াদ শেষে চলে যাওয়ার আগে ঢাকার গুলশান লেকে কয়েকটি সাকার মাছ ছেড়ে দেন। এরপর সেখান থেকেই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে এটি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত সাকার ফিশ মূলত্ ১৬ থেকে ১৮ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। এটি পানি ছাড়াই প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত বাঁচতে পারে। মৎস্য আইন ২০১১ অনুযায়ী বাংলাদেশে দেশীয় প্রজাতির মাছের ক্ষতি করে এমন যে কোনো বিদেশি মাছ আমদানি ও চাষ দণ্ডনীয় অপরাধ।
জেলেরা জানান, বুড়িগঙ্গাসহ দেশের কিছু নদ-নদীতে জাল ফেললে দেশীয় মাছের চেয়ে সাকার মাছই বেশি উঠছে। এসব মাছ পেলে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়। অন্যথায় এসব মাছ আবার অন্য মাছের ডিম খেয়ে ফেলে। দেশীয় মাছ ধ্বংস করে। দ্রুত এ সমস্যা সমাধান না হলে সাকার মাছের সংখ্যা আরও বাড়বে।
ক্ষতিকর প্রভাব
উন্মুক্ত জলাশয়ে দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে বিধায় দেশীয় প্রজাতির মাছের বংশবৃদ্ধি ও প্রজননে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। দেশীয় প্রজাতির মাছের সঙ্গে খাদ্য ও পরিবেশ নিয়ে প্রতিযোগিতা করে। এ মাছটি দ্রুত বংশবৃদ্ধিতে সক্ষম বলে জলাশয়ে ছড়িয়ে পড়লে জলাশয়ের পাড়ে ১ দশমিক ৫ মিটার পর্যন্ত গর্ত তৈরি করে তা ধ্বংস করে।
দেশীয় প্রজাতির মাছের ডিম ও রেণু ভক্ষণ করে মাছের বংশ বিস্তারে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। জলাশয়ের তলার শ্যাওলা ও জৈব আবর্জনা খায় বিধায় জলজ পরিবেশের সহনশীল খাদ্যশৃঙ্খলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। সাকার মাছের সঙ্গে স্বল্পায়ু, তৃণভোজী, খরাকাতর দেশীয় মাছের অসম প্রতিযোগিতা হয় বলে দেশীয় মাছের উৎপাদন ব্যাহত হয় এবং জীববৈচিত্র্য ধ্বংসসহ নানাবিধ ক্ষতি করে।
এসব বিষয়ে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক বলেন, সাকার ফিস অফিসিয়ালি বাংলাদেশে আসেনি। কোনো না কোনোভাবে এটি বাংলাদেশে আসছে। এটা নিষিদ্ধের জন্যও গেজেট হচ্ছে। আমাদের আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং হবে। এরপর এটি জিও হিসেবে জারি হবে। শিগগির এটির গেজেট প্রকাশ হবে।
তিনি আরও বলেন, পিরানহা ও আফ্রিকান মাগুর নিষিদ্ধ করে গেজেট হয়েছে। এখন মেজর কোনো জায়গায় গেলেই যে পিরানহা বা আফ্রিকান মাগুর পাওয়া যাবে এমন কিন্তু না। পিরানহা কোথাও কোথাও গোপনে থাকতে পারে। এটার বিরুদ্ধে নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। গণমাধ্যমে সে খবরও আসে জেল-জরিমানা করার বিষয়ে। সেজন্য এটি এখন শূন্যের কোঠায় এসে গেছে।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ