আন্তর্জাতিক
এবারও লন্ডনের মেয়র হয়ে রেকর্ড করলেন সাদিক খান
টানা তৃতীয়বারের মতো যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন লেবার পার্টির সাদিক খান। এবারের নির্বাচনে ৪৩ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন তিনি। তার প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির সুসান হল পেয়েছেন ৩২ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট। ফলাফল ঘোষণার পর বিজয়ী ভাষণে তিনি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে জাতীয় নির্বাচনের ডাক দেয়ার আহ্বানও জানান।
রোববার (০৫ মে) ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা বিবিসি’র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (২ মে) রাত ১০টায় লন্ডনের মেয়র পদে নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়। ভোট গণনা শুরু হয় শুক্রবার (০৩ মে) থেকে। আর স্থানীয় সময় শনিবার (০৪ মে) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ফল প্রকাশ করা হয়।
ফলাফলে দেখা যায়, ১০ লাখ ৮৮ হাজার ২২৫ ভোট পেয়েছেন সাদিক খান। তার প্রতিদ্বন্দ্বী সুসান হল পেয়েছেন ৮ লাখ ১১ হাজার ৫১৮। অর্থাৎ সুসান হলকে ২ লাখ ৭৬ হাজারের ভোটে পরাজিত করেছেন সাদিক। আর টোরিদের দুটি এলাকাসহ ১৪টি নির্বাচনী এলাকার মধ্যে নয়টিতে জিতেছেন লেবার পার্টির এই রাজনীতিক।
বিজয়ী ভাষণে সাদিক খান বলেন, ‘আমি লন্ডনকে ভালোবাসি। এটি আমার শহর ও এখানকার জনগণকে সেবা করতে পারা আমার জন্য গর্বের। এবারের নির্বাচনেও আমাকে জেতানোর জন্য সবাইকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। গত কয়েক মাস আমাদের কঠিন সময় গেছে। আমরা বারবার নেতিবাচক প্রচারণার মুখোমুখি হয়েছি। মিথ্যা ভয় দেখিয়ে আসা হয়েছে আমাদের। কিন্তু আমি এখন গর্বিত যে, সত্যের সঙ্গে সঙ্গে আমরা সেই ভয় দেখানোর উত্তর দিতে পেরেছি।’
সাদিক আরও বলেন, ‘তৃতীয় মেয়াদে পুনঃনির্বাচিত হতে পারা সত্যিই গর্বের বিষয়। তবে আজকের দিনটি ইতিহাস রচনার জন্য নয়, বরং আমাদের ভবিষ্যত গঠনের বিষয়ে আরও কার্যকর চিন্তা-ভাবনা শুরু করা ও সামনের দিনগুলোকে আরও উজ্জ্বল করে এগিয়ে যাওয়ার দিন।’
বিবিসি বলছে, নির্বাচনী প্রচারণায় নিরাপদ ও সবুজ রাজধানী গড়ার প্রতিশ্রুতি সাদিক খানকে এবারের নির্বাচনে জিততে সাহায্য করেছে। তাছাড়া তিনি এই দশকের শেষ নাগাদ ৪০ হাজার কাউন্সিল হাউজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কাউন্সিল হাউজ হলো নিম্ন আয়ের লোকদের জন্য কম ভাড়ায় স্থানীয় সরকারের দেয়া বাড়ি বা ফ্ল্যাট।
জাতীয় নির্বাচনের আগে যুক্তরাজ্যের মেয়র নির্বাচনের দিকে নজর ছিল সবার। অধিকাংশের ধারণা, কনজারভেটিভদের চেয়ে জনসমর্থনে এখন অনেক এগিয়ে লেবার পার্টি। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টিকে হারিয়ে লেবার পার্টি জয় পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০১৬ সালে প্রথম লন্ডনের মেয়র হন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক সাদিক খান। এরপর ২০২০ সালে দ্বিতীয় দফায় নির্বাচিত হন তিনি। ২০২৪ সালের নির্বাচনেও জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছেন সাদিক। তার এই বিজয়কে লন্ডনের ইতিহাসে রেকর্ড বলা হচ্ছে।
এসি//
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//