বাংলাদেশ
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেও শৃঙ্খলা কমিটিতে কুবি শিক্ষক
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ভর্তি পরীক্ষার ফল নিয়ে গণমাধ্যমে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তথ্য সরবরাহের অভিযোগে ২০২১ সালের ২৭ জুন ৮০তম সিন্ডিকেট সভায় এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাবিধি-২০১৮ অনুসরণ করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়। তবে নির্দেশ দেওয়ার ১৩ মাস সময় পার করলেও বিচার না করে উল্টো অভিযুক্ত শিক্ষককে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য করা হয়েছে।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) ১ম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার শৃঙ্খলা রক্ষায় গেলো ১৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকীকে আহ্বায়ক করে ১৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
এই কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর এবং ৮০ তম সিন্ডিকেট সভায় আচরণ ও শৃঙ্খলাবিধি-২০১৮ অনুসরণ করে বিভাগীয় ব্যবস্থার নির্দেশপ্রাপ্ত গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাহবুবুল হক ভূঁইয়াকে সংযুক্ত করা হয়। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, ভর্তি পরীক্ষার মতো একটি সংবেদনশীল বিষয়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য সরবারহ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো ভর্তি কার্যক্রমকে প্রশ্নের মুখে ফেলার পরেও কিভাবে এই শিক্ষক শৃঙ্খলা কমিটিতে থাকেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। যেখানে একজন শিক্ষক এর আগে ভর্তি কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য সরবরাহ করেন এবং উচ্চতর তদন্ত কমিটিতে সেটি প্রমাণ হয়। কিন্তু তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে শৃঙ্খলা কমিটিতে যুক্ত করার অর্থ হল তাকে পুরস্কৃত করা। বিষয়টি স্বাভাবিক নয়। এ বিষয়ে মো. মাহবুবুল হক ভূঁইয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমার কনফিডেনসিয়াল বিষয়। আপনার সাথে কথা বলব না।
এ বিষয়ে শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকীকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় সেসময়ে গঠিত উচ্চতর তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও বর্তমান ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান জানান, তদন্তে যে প্রতিবেদন উঠে আসে সেটি আমি উপাচার্যের কাছে জমা দিয়েছিলাম। উপাচার্য সেটি সিন্ডিকেটে উপস্থাপন করেছিলেন। এরপরে আর আমার সংযুক্তি ছিল না।
এমন একজন শিক্ষক পুনরায় ভর্তি পরীক্ষার শৃঙ্খলা কমিটিতে থাকতে পারেন কিনা জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. এম. আব্দুল মঈন জানান, এরকম ঘটনা কি হয়েছিল সেটি জানার পরে আমি মন্তব্য করতে পারব। তবে বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি আজকে আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। যদি কোন সিদ্ধান্ত থেকে থাকে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এমন গুরুতর বিষয়ে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ভর্তি পরীক্ষার শৃঙ্খলা কমিটিতে রাখা যায় কিনা জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ড. দিল আফরোজা বেগম বলেন, ঘটনার বিষয়ে আমার জানা নেই। আপনি উপাচার্যের সাথে কথা বলেন। ওই শিক্ষক বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন কমিটিতে সংযুক্ত আছেন কিনা এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ পদক্ষেপ নিবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২১ সালের ২৭ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০তম সিন্ডিকেট সভায়, ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ‘বি' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল নিয়ে গণমাধ্যমে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তথ্য সরবরাহের বিষয়টি প্রমাণিত হয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাহবুবুল হক ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে। এতে আচরণ ও শৃঙ্খলাবিধি-২০১৮ অনুসরণ করে বিভাগীয় ব্যবস্থার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।
সে সময়ে উচ্চতর তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও বর্তমান ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, গোয়েন্দা সংস্থাসহ সবার সহযোগিতায় উচ্চতর তদন্ত হয়েছে। কমিটির সবাই এ বিষয়ে একমত। এটি প্রমাণিত মাহবুবুল হক ভূঁইয়া ওই তথ্য সরবরাহ করেছেন এবং তিনিই এর জন্য দায়ী।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ