উত্তর আমেরিকা
১১ কোটি টাকায় নিলামে বিক্রি হলো হিটলারের হাতঘড়ি
তুমুল বিতর্ক সত্ত্বেও নিলামে বিক্রি হয়ে গেল ‘অ্যাডলফ হিটলারের একটি সোনার হাতঘড়ি'। যদিও হাতঘড়িটি হিটলারেরই কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত নন কেউ। তবে বিরাট অঙ্কের টাকা খরচ করে তা কিনে নিয়েছেন এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি।
হাতঘড়িটি আদৌ জার্মানির প্রাক্তন একনায়কের কি না, তা অজানা থাকলেও সেটি বিক্রি হয়েছে ১.১ মিলিয়ন ডলারে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার আর্থিক মূল্য প্রায় ১১ কোটি টাকা।
নিলাম হওয়ার আগে থেকেই অবশ্য এ নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে। ইহুদি নেতারা একে ‘জঘন্য’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, হিটলারের হাতঘ়ড়ি নিলামে তুলে এক কালের নাৎসি একনায়কের সমর্থকদেরই সাহায্য করেছে আলেকজান্ডার হিস্টরিক্যাল অকশনস নামে আমেরিকার ওই নিলামঘর।
ইহুদিদের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই নিলামঘর কর্তৃপক্ষ। তাদের পাল্টা দাবি, তারা ইতিহাসের স্মারককেই সংরক্ষণ করেছেন।
নিলাম ঘরটি বলেছে যে ঘড়িটি সম্ভবত ১৯৩৩ সালে নাৎসি নেতাকে তার জন্মদিনে দেয়া হয়েছিল, তারপর ১৯৪৫ সালে একজন ফরাসি সৈন্য তার কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করেছিল।
যে হাতঘড়়িটি নিয়ে এত বিতর্ক, সেটি নাকি খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালে। নিলামঘরের দাবি, ১৯৪৫ সালের মে মাসে জার্মানির বাভারিয়ায় হিটলারের গ্রীষ্মাবাসে ঢুকে পড়েছিলেন জনা তিরিশেক ফরাসি সেনা। তাদের মধ্যে ছিলেন ফরাসি সার্জেন্ট রবার্ট মিনো।
নিলামঘরের দাবি, সার্জেন্ট রবার্ট মিনোই ওই হাতঘড়িটি খুঁজে পান। এর পর দশকের পর দশক তা বিভিন্ন জনের হাত ঘুরেছে। শেষমেশ তা নিলামঘরের কাছে আসে। তবে কী ভাবে সেটি তাঁদের হাতে এল, সে বিষয়টি খোলসা করেননি নিলামঘর কর্তৃপক্ষ।
আলেকজান্ডার হিস্টরিক্যাল অকশনস জানিয়েছে, হাতঘড়িটির ‘ডায়ালে’র পিছনে হিটলারের নামের আদ্যাক্ষর খোদাই করা রয়েছে। তার ঠিক নীচেই রয়েছে একটি উড়ন্ত ঈগল এবং নাৎসি জমানার স্বস্তিকা চিহ্ন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ওই হাতঘড়িতে তিনটি তারিখও খোদিত রয়েছে। তার মধ্যে একটি হিটলারের জন্মদিন এবং অন্যটি জার্মানির চ্যান্সেলর পদে হিটলারের নাম ঘোষণা করার দিন।
ওই দুই তারিখের পাশাপাশি ১৯৩৩ সালের নির্বাচনে নাৎসি পার্টির জয়লাভের দিনটিও হাতঘড়িতে খোদাই করা রয়েছে। মনে করা হচ্ছে যে ’৩৩ সালের ২০ এপ্রিল নিজের ৪৪তম জন্মদিনে ওই ‘রিভার্সিবল’ হাতঘড়়িটি উপহার পান হিটলার।
হিটলারের হাতঘড়ি ছাড়াও তার স্ত্রী ইভা ব্রাউনের একটি পোশাকসহ নানা স্মারকও নিলামে চড়েছিল। তবে গোটা বিতর্কের কেন্দ্রে ছিল ওই হাতঘড়িটিই।
নিলামের আগে একটি খোলা চিঠিতে ৩৪ জন ইহুদি নেতার দাবি ছিল, নাৎসি জমানার স্মারকগুলির নিলাম বন্ধ রাখা উচিত। কারণ, এতে নাৎসি-সমর্থকদেরই ‘সাহায্য’ করা হচ্ছে।
ইউরোপীয় ইহুদি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তথা ইহুদি ধর্মগুরু মেনাকেম মার্গোলিনের মতে, নাৎসিদের আদর্শ হিসেবে গণ্য করা জনগোষ্ঠীর হাত শক্ত করবে এই নিলাম। ইতিহাসের সমস্ত ঘটনা থেকেই শিক্ষা নেয়া উচিত। তবে যেগুলি আপনার বিক্রি করছেন, সেগুলি থেকে নয়। নাৎসি জমানার ওই স্মারকগুলি সংগ্রহশালায় পাঠানো উচিত।
যদিও ইহুদি নেতাদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন নিলামঘর কর্তৃপক্ষ। নিলামঘরের সহ-সভাপতি মিন্ডি গ্রিনস্টাইনের পাল্টা দাবি, ভালো হোক বা খারাপ, সমস্ত কিছুই সংরক্ষণ করা উচিত। ইতিহাসের নিদর্শনকে ধ্বংস করলে ঐতিহাসিক সত্যের অপলাপ করা হবে।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
উত্তর আমেরিকা
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীকে চাপ দিলেন কামলা হ্যারিস
গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কামলা হ্যারিস।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ( ২৫ জুলাই) হোয়াইট হাউজে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ বিষয়ে নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেন। এর মধ্য দিয়ে কামলা প্রেসিডেন্ট হলে ইসরাইল ইস্যুতে কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে পরিবর্তন আনবেন তা স্পষ্ট হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কামলা বলেন, ‘ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। কিন্তু সেটি কীভাবে করা হচ্ছে তা গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘আমি গাজায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আমার উৎকণ্ঠা জানিয়েছে। আমি চুপ করে থাকব না।’
হ্যারিসের এই তীক্ষ্ণ ও জোরালো মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি কিভাবে নেতানিয়াহুকে মোকাবেলা করছেন সে বিষয়ে বাইডেনের সঙ্গে তার পার্থক্য পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।
এর কয়েক ঘন্টা আগে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন নেতানিয়াহুর সঙ্গে হোয়াইট হাউজে বৈঠক করেন। গেলো ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর বাইডেনের ইসরাইলে সফর শেষে এটিই নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার প্রথম মুখোমুখি আলোচনা। এই আলোচনায় গাজায় ৯ মাস ধরে চলা সংঘাতে একটি যুদ্ধবিরতির জন্য নেতানিয়াহুকে চাপ দেন বাইডেন।
এদিকে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এখনও ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে ব্যবধান রয়ে গেছে তবে আমরা আগের চেয়ে এখন চুক্তির কাছাকাছি আছি। যা আগে কখনও ছিলাম না।
নেতানিয়াহুর এই সফর এমন সময় হলো যখন মার্কিন রাজনীতিতে পরিবর্তন এসেছে। রোববার ( ২১ জুলাই) ৮১ বছরের বাইডেন ডেমোক্র্যাটদের চাপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন এবং দলের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট মনোনয়নের জন্য হ্যারিসকে সমর্থন করেন।
জেএইচ
উত্তর আমেরিকা
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌঁড়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকছেন বাইডেন
২০২৪ সালের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে জো বাইডেন সরে যাচ্ছেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনী দৌঁড় থেকে কেউ তাকে বাইরে ঠেলে দিচ্ছে না। তিনি দলের মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। সব চাপ উপেক্ষা করে লড়াইয়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমেরিকার এই প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় সময় বুধবার (৩ জুলাই) ডেমোক্রেটিক দলের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে থাকা কিছু কর্তা ব্যক্তির সঙ্গে এক ফোনালাপে তিনি এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
জো বাইডেন গেলো সপ্তাহে তার দুর্বল বিতর্কের জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। নির্বাচনী দৌঁড় থেকে সরে যেতে তার ওপর চাপ কার্যত বেড়েই চলেছে। এমনকি নিজের দল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতর থেকেও চাপের মুখে পড়েছেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতেই বাইডেনের এই ফোনকল।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার তার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে ফোন কলে কথা বলেন এবং ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসময় আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আসন্ন এই নির্বাচনকে সামনে রেখে গেলো বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় সিএনএনের স্টুডিওতে ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।
বিতর্কে পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, সীমান্ত ইস্যু, সামাজিক নিরাপত্তা, চাইল্ড কেয়ার, কংগ্রেস ভবনে হামলার ঘটনা এবং গর্ভপাতসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই বিতর্কে বাইডেনের পারফরম্যান্স ছিল অত্যন্ত দুর্বল। অনেকেই বলছেন, ৮০ বছরের বেশি বয়সী বাইডেনের এবার আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত নয়। কারণ, তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। বিতর্কের সময় প্রতিপক্ষের কথার জবাবও দিতে পারছেন না।
নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকেই বাইডেনের বয়স এবং কর্মক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
এমন অবস্থায় বুধবার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাইডেন। এর মাধ্যমে তিনি মূলত গেলো সপ্তাহের বিতর্কে নড়বড়ে পারফরম্যান্সের পরে তাকে নির্বাচনী লড়াই বাদ দেয়ার আহ্বানগুলো ঝেড়ে ফেলেন।
তবে ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেকেই মনে করছেন, দলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জো বাইডেনের আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত হবে না।
টিআর/