আন্তর্জাতিক
চীনে রেলপথ ছাড়াই সড়কে চলবে চালকবিহীন ট্রেন
প্রথম বারের মতো নতুন একটি ট্রেন ছুটে চলবে। তাও আবার সড়কের মাঝখান দিয়ে। সেখানে নেই কোনো ধাতব রেললাইন। নতুন এই ট্রেনের না আছে কোনও রেললাইন, না আছে ড্রাইভার। এটাই বিশ্বের প্রথম ট্রেন যেটি ছুটবে ভার্চুয়াল ট্র্যাকে। এই ট্রেনটিকে যেকোনো ব্যক্তি প্রথম দেখলেই বাস মনে করবে। বাসের মতো দেখতে মনে হলেও নতুন এই ট্রেনটি আবিষ্কার করেছে চীন।
ইন্টেলিজেন্ট রেইল ট্রানজিট বা আইআরটি নামে এই ট্রেনের ট্রায়াল রানের সাক্ষী ছিল চীনের হুনান প্রদেশের ঝুঝৌ শহর। সম্প্রতি পরীক্ষামূলকভাবে চলে এই ভার্চ্যুয়াল ট্র্যাকের ট্রেন। প্রথম পরীক্ষায় সফল হওয়ায় খুব শিঘ্রই এই ট্রেন জনসাধারণের চলাচলের জন্য ছাড়া হবে। এমনটাই জানিয়েছে চীনের রেল কর্পোরেশন।
জনসংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম দেশ চীনের পরিবহন ব্যবস্থা উন্নত ও আধুনিক। সাধারণ জনগণের ভ্রমণ ব্যবস্থা সুন্দর ও আরামদায়ক এবং কীভাবে আরও উন্নত করা যায় তানিয়ে চীনা বিজ্ঞানীদের গবেষণা চলছে প্রতিনিয়ত। এক হাজার কিলোমিটার গতি সম্পন্ন বুলেট ট্রেনের মাধ্যমে পুরো বিশ্বকে চমকে দেওয়ার পর আবারও এই দেশটি বিস্ময় সৃষ্টি করলো রেললাইনবিহীন ও চালকছাড়া ট্রেন তৈরির মাধ্যমে।
আগে রেলগাড়ি মানেই ছিলো ঝুমঝুম শব্দ করে নিজস্ব লাইনের ওপর দিয়ে ছুটে চলা ট্রেন। তবে চীনের নতুন এই ট্রেনটি নিজস্ব লাইন দিয়ে ছুটবে না। সড়কেই খুঁজে নেবে নিজের চলাচলের পথ। বাস-ট্রাকের সঙ্গে সড়ক দিয়ে চলা এই ট্রেন ছুটবে ঘণ্টায় ৯৬ কিলোমিটার গতিতে। এর জন্য কোনো ট্র্যাক নির্মাণ ও ট্রামের মতো ওভারহেড তারের প্রয়োজন হবে না।
নির্মান প্রতিষ্ঠান সিআরআরসি কর্পোরেশন লিমিটেড সূত্র জানায়, বিদ্যুৎচালিত আইআরটি ট্রেনটি সম্পূর্ণরূপে পরিবেশবান্ধব। কোনো দূষণও ঘটাবে না ট্রেনটি। এতে তিনটি বগি রয়েছে। প্রত্যেকটি বগি ৩১ দশমিক ছয় চার মিটার লম্বা, ২ দশমিক ছয় পাঁচ মিটার চওড়া এবং ৩ দশমিক চার মিটার উঁচু। প্রতিটি বগিতে ১০০ জন অর্থাৎ ট্রেনটিতে মোট তিনশো যাত্রী ভ্রমণ করতে পারবেন। ট্রেনটি সহজেই বাঁক নিতে পারে। লোকোমোটিভ ডিজাইনের কারণে ট্রেনটিকে ঘুরে দাঁড়াতে হয় ন।
আইআরটি ট্রেনে সংযুক্ত রয়েছে অত্যাধুণিক স্মার্ট ড্রাইভিং সিস্টেম। এই সিস্টেমে রয়েছে স্বায়ত্তশাসিত নেভিগেশন। এটি গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম বা জিপিএস এবং সেন্সর ডেটা ব্যবহার করে আইআরটি ট্রেনকে সঠিকভাবে তার বর্তমান অবস্থান বা লোকেশন কিংবা পূর্ব-নির্ধারিত পথ অনুসরণ করাতে পারে।
স্মার্ট ড্রাইভিং সিস্টেমে রয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সেন্সর অ্যারে। এটি চলার পথে বাধাগুলো সনাক্ত করে ট্রেনটিকে তার গন্তব্যে যেতে দিক নির্দেশনা দেয়। যেমনটি ট্রাফিক লাইনগুলো নির্দেশনা দিয়ে থাকে নিয়মিত যানবাহনগুলোকে। এছাড়া,এআই এবং মেশিন লার্নিং প্রযুক্তিগুলো সঠিক সময়ে ট্রেনটির চলার পথ মসৃন করা ও যানবাহন পরিচালনাসহ সামগ্রিক কর্মদক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করে।
পাঁচ বছর আগে থেকে এই ট্রেনের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়। বিশেষ এই ট্রেনটির চাকা রাবারের, যা প্লাস্টিকে মোড়ানো। এই মেগা প্রকল্পের জন্য খরচ হয়েছে ৭০ কোটি ইউয়ান। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় এক হাজার ৬৪ কোটি টাকা।
চীনের রেল মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দাবি, অন্তত ২৫ বছর ট্রেনটি দিব্যি চলবে। এই ট্রেনটি মিনিট দশেক চার্জ পেলে আরও ২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে।চীনের ছোট শহরগুলোতে যেখানে ব্যাপক রেল নেটওয়ার্ক নির্মাণ সম্ভব নয় সেসব শহরে আইআরটি ট্রেনের মাধ্যমে যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ হবে বলে মনে করছে চীন সরকার।
এমআর//
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//