আন্তর্জাতিক
যে ট্রেনে প্রাইভেট কার, ট্রাকসহ যানবাহন নিয়ে ভ্রমণ করা যায়
মনে করুন, আপনি দূরের কোনো এলাকায় কাজে বা বেড়াতে যাচ্ছেন। আর গন্তব্যস্থানে পৌঁছতে আপনি ট্রেন ভ্রমনকে বেছে নেবেন।পরবর্তীতে আপনার মনে হলো-ট্রেনে যদি মাইক্রোবাস বা প্রাইভেট কার বা মোটরবাইক অথবা অন্য কোনো যানবাহন আপনি নিতে পারতেন। তাহলে কী মজাই না হতো।
হ্যা, বর্তমান আধুনিক সভ্যতার যুগে এটাও সম্ভব হয়েছে। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এমনই ট্রেন চালু হয়েছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র ট্রেন যাতে ভ্রমণ করার পাশাপাশি আপনার প্রিয় গাড়ি বা অন্য কোনো যানবাহনকে সঙ্গে নিতে পারবেন। এই বিশেষ ট্রেনকে বলা হয় অটো ট্রেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল রেলরোড প্যাসেঞ্জার করপোরেশন-আমট্রাক পরিচালিত এই ট্রেনে আপনার সঙ্গে থাকা যানবাহনটিকে নিয়ে আপনি নিশ্চিন্তে ভ্রমণ করতে পারবেন।
এই ট্রেনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো- বাইরে থেকে কোনো ব্যক্তি বুঝতেই পারবেন না যে ট্রেনের ভেতরে যাত্রীদের গাড়ি আছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি টু অরল্যান্ডো রুটে এই অটোট্রেন চলাচল করছে। বিরামহীন যাত্রায় এই অটোট্রেনটির ওয়াশিংটন থেকে অরল্যান্ডো পৌঁছতে সময় লাগে প্রায় ১৭ ঘণ্টা।
কয়েক বছর ধরে অটো ট্রেনের চাহিদা বাড়লেও যুক্তরাষ্ট্রে এই ধরণের রুট মাত্র একটি। ১৯৭১ সালের আগে এই অটো ট্রেনের অস্তিত্ব ছিল না। ওই বছরই মার্কিন বিজ্ঞানী ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর দ্য সায়েন্টিফিক ইনফরমেশনের প্রতিষ্ঠাতা ইউজেন গারফিল্ড যুক্তরাষ্ট্রে এই বিশেষ ট্রেন আবিষ্কার ও চালু করেন।
ওইসময় ওয়াশিংটন ডিসির লরটন থেকে অরল্যান্ডো রাজ্যের সানফোর্ডে দৈনিক এই অটোট্রেন ব্যবস্থা চালু ছিলো। গারফিল্ডের অটো-ট্রেন এতটাই জনপ্রিয় ছিল লুইসভিল থেকে সানফোর্ড পর্যন্ত দ্বিতীয় লাইনের পরিষেবা শুরু করে। তবে ১৯৮১ সালের মধ্যে ওই রুটে অটো-ট্রেন কর্পোরেশনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
স্লিপিং কোচ, ডাইনিংসহ অত্যাধুণিক ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রে এই ধরণের ট্রেনের একটি মাত্র রুট থাকায় যাত্রীদের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। বছরে মাত্র ২ লাখ ২০ হাজার যাত্রী এই ট্রেন সেবা নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ হলেও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় বেশ পিছিয়ে রয়েছে দেশটি। চীন যেখানে ২০০৮ সাল থেকে প্রায় ৪২ হাজার কিলোমিটার উচ্চগতির ট্রেন চলাচলের জন্য রেললাইন নির্মাণ করেছে, সেখানে যুক্তরাষ্ট্র অনেক পিছিয়ে। ১০০ মাইলের বেশি গতিতে চলাচলের মতো তাদের মাত্র ৩৭৫ মাইল দীর্ঘ রেল লাইন রয়েছে।
১৯৭০–এর দশকে নিউইয়র্ক সেন্ট্রালের মতো বিখ্যাত রেল পরিবহন দেউলিয়া হয়ে যায়। ফলে ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় যাত্রীবাহী ট্রেন পরিচালনাকারী সংস্থা আমট্রাকের কাছে এই প্রতিষ্ঠানটিকে হস্তান্তর করা হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রেলপথ উন্নয়নে ১ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার বা এক লাখ ২০ হাজা্র কোটি ডলার বরাদ্দ দিয়েছেন। এর মধ্যে বোস্টন, নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সংযোগকারী অটো ট্রেনের রুট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে যুক্তরাষ্ট্রের রেল খাতে যুগান্তকারী উন্নয়ন ঘটবে।
এমআর//
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//