আন্তর্জাতিক
রাফা ও জাবালিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিতে হামাস-ইসরায়েল তুমুল লড়াই
আট মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজা ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল বাহিনী। আকাশপথের পাশাপাশি স্থলপথেও আক্রমণ চালাচ্ছে দখলদার দেশটি।
গাজাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করার পর কয়েকদিন ধরে উত্তর গাজার জাবালিয়া এবং দক্ষিণ রাফার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টায় ইসরায়েল। এ নিয়ে গাজার শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর তুমুল যুদ্ধ চলছে। যুদ্ধে হামাস এবং ইসরায়েলের সেনাবাহিনী উভয় পক্ষই তাদের শত্রুদের উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতির দাবি করেছে।
বুধবার (১৫ মে) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের যোদ্ধারা জাবালিয়া ও রাফায় ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে তুমুল লড়াই করেছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও হামাস দুই পক্ষই জানিয়েছে, গেলো সপ্তাহের শেষ দিকে গাজার উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে হামাস যোদ্ধাদের সরাসরি যুদ্ধ হয়েছে।
রাফার বাসিন্দারা বলেন, গেলো কয়েকদিন রাফার পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে গাজার হামাস যোদ্ধাদের মধ্যে ব্যাপক লড়াই চলছে।
গেলো বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের আন্তঃসীমান্ত আক্রমণের পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় টানা আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। হামলার পাশাপাশি তেল আবিব গাজা উপত্যকায় অবরোধ আরোপ করেছে, ভূখণ্ডের জনসংখ্যা, বিশেষ করে উত্তর গাজার বাসিন্দাদের অনাহারের দ্বারপ্রান্তে ফেলেছে।
ইসরায়েলি যুদ্ধের আট মাসে গাজার বিস্তীর্ণ অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। যুদ্ধের ফলে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ বাসিন্দাই অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির শিকার হয়েছেন।
আট মাসেরও বেশি সময় ধরে চালানো হামলায় মারা যাওয়া ফিলিস্তিনের সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়েছে।
যুদ্ধ শুরুর পর গাজার বাসিন্দারা রাফাহ অঞ্চলে আশ্রয় নিলেও সেখানে হামাসের সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটি আছে দাবি করে অভিযান জোরদার করেছে ইসরায়েল। ইতোমধ্যে রাফায় আশ্রয় নেয়া সাড়ে ৪ লাখ ফিলিস্তিনি সেখান থেকে সরে গেছেন।
শুধু রাফাতেই নয়, উত্তর গাজার জাবালিয়াতেও দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল লড়াই হচ্ছে। এর ফলে জাবালিয়া থেকেও দলে দলে ফিলিস্তিনি অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়ে পথে পথে ঘুরছে। কেউ হাঁটছে নিরুদ্দেশ আর কারও কারও কপালে জুটেছে ঠেলাগাড়ি।
নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে সন্তানদের নিয়ে পথে পথে ঘুরতে থাকা আরেক নারী জানান, আমাদের পরিস্থিতি এতোই খারাপ যা বলে বোঝানো সম্ভব না। যাওয়ার থাকার কোন জায়গাই নেই বেশিরভাগ গাজাবাসীর।
এসি//
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//