বরিশাল
ঝালকাঠি ইউপি নির্বাচন: ৪৯ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল
ঝালকাঠি জেলায় ৩১টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৪৯ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। ঋণখেলাপী, ক্রটিপূর্ণ মনোনয়নপত্র দাখিল ও আয়-ব্যয়ের হিসাবে গড়মিল থাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হওয়া মনোনয়নপত্রের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনিত ১ জনসহ ৯ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১০ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৩০ জন রয়েছেন।
রোববার সকালে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো.ওহিদুজ্জামান মুন্সি সকাল ১১টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তবে বাতিল হওয়া মনোনয়নপত্রে অধিকাংশ প্রার্থীরা ইতিমধ্যে আপিল করেছেন বলেও তিনি জানান। সোমবার আপিল শুনানিতে প্রার্থীতা ফিরে পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে বাতিল হওয়া প্রার্থীরা।
অপরদিকে মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাইয়ে অনিয়ম ও পক্ষপাত্বিতের অভিযোগ তুলেছে অনেকেই। বেশ কয়েকজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্রে ত্রুটি দেখিয়ে অপর প্রার্থীরা সু-নির্দিষ্ট অভিযোগ এনে অপত্তি তুললেও তা গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সদর উপজেলার বিনয়কাঠি ইউনিয়নে ১ জন, গাবখান-ধানসিঁড়ি ইউনিয়নে ১ জন, শেখেরহাট ইউনিয়নে ১ জন, নথুল্লাবাদ ইউনিয়নে ১ জন, নলছিটি উপজেলার কুশঙ্গল ইউনিয়েনে ১ জন, রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া ইউনিয়নে ১ জন, শুক্তাগড় ইউনিয়নের ১জন, কাঁঠালিয়া উপজেলার আমুয়া ইউনিয়নে ১ জন ও শৌলজালিয়া ইউনিয়নে ১জনের মনোনয়ন যাচাইবাছাইয়ে ত্রুটি থাকায় বাতিল করা হয়েছে। বাতিলকৃতদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোননীত নলছিটি উপজেলা কুশঙ্গল ইউনিয়নের প্রার্থী আলমগীর হোসেন ছাড়া অন্যরা সবাই সতন্ত্র প্রার্থী।
গত বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিনের তথ্য অনুযায়ী চার উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১২৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। প্রতিটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনিত ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের একক প্রার্থী রয়েছেন। তবে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে আওয়ামী লীগের একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
এছাড়াও সাধারণ সদস্য পদে ১ হাজার ৫৯ জন ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ৩২২ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। আগামী ১১ এপ্রিল ৩১ ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে ৫টি ইউনিয়নে ইভিএম’র মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে বলে নির্বাচন কর্মকর্তা জানান।
উল্লেখ্য ঝালকাঠি জেলার ৪টি উপজেলার ৩১টি ইউপি নির্বাচনে ভোটার রয়েছেন ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৪ জন। এদের মধ্যে ২ লাখ ২০ হাজার ৯৩৭ জন পুরুষ ভোটার ও ২ লাখ ১৩ হাজার ৬৭ জন মহিলা ভোটার। ভোট গ্রহণের জন্য ২৯১টি ভোট কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে।
এএ
বরিশাল
ববিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের মিটিংয়ে ছাত্রলীগের হামলা
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) মধ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীদের মিটিংয়ে হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এই ঘটনায় কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়।
সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুরে ববির গ্রাউন্ড ফ্লোরে এ ঘটনা ঘটে। এরপর শিক্ষার্থীরা গেট থেকে বের হওয়ার সময় দ্বিতীয় দফায় আবার হামলা চালায় ছাত্রলীগ। আহতদের মধ্যে আন্দোলনের সমন্বয়ক সুজয় শুভসহ ১০ আহত শিক্ষার্থীকে বরিশাল শের ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ববি সমন্বয়ক সুজয় শুভ বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে আমাদের পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণে ২০ শিক্ষার্থী ববির গ্রাউন্ড ফ্লোরে মিটিং করছিলাম। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা একে আরাফাতের নেতৃত্বে ২০-৩০ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী লাঠি, রড ও পাইপ নিয়ে হামলা চালায়। এসময় ছাত্রলীগের মাহমুদুল হাসান তমাল, আল সামাদ শান্ত, খালেদ হাসান, শাহরিয়ার সান, সাব্বির, জাইফ, সাইফ, শরিফুল ইসলাম, রাকিবুল ইসলামকে আমরা সনাক্ত করতে পেরেছি। হামলার পর ক্যাম্পাস থেকে চলে যাওয়ার সময় দ্বিতীয় দফায় হামলা চালানো হয়। এতে কমপক্ষে ১৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আমাদের মিটিংকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান নেয়। তাদের সামনেই আমাদের বেধরক মারধর করে ছাত্রলীগ।
বরিশাল নগর পুলিশের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহমান মুকুল বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের মিটিং শেষ দিকে ছিলো। তখন কোটা সংস্কার নিয়ে সরকারের প্রজ্ঞাপনকে সমর্থন জানানো কিছু শিক্ষার্থী গেট দিয়ে প্রবেশ করে। তখন কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও অন্য এক গ্রুপের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তারা ছাত্রলীগ কিনা তা বলতে পারবো না, তবে তারাও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা অভিযুক্ত একে আরাফাতের মোবাইল নম্বরে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে রোববার কোটা সংস্কার আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে গ্রাফিতি অংকন করতে গেলে হামলার উদ্দেশে জড়ো হয়েছিলো ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এমন অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
কেএস/
দেশজুড়ে
বিপৎসীমার ওপরে বরিশালের ১০ নদীর পানি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
বরিশাল বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ১০টি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বরিশাল নগরীসহ অন্যান্য জেলা ও উপজেলার নিম্নাঞ্চল জোয়ারের পানিতে দিনে দুইবার প্লাবিত হচ্ছে। তবে এ পরিস্থিতিকে বন্যা বলা যাবে না। এটি মৌসুমি পানি প্রবাহ বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাতে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জলানুসন্ধান বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পাউবো জানায়, বরিশাল জেলার কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার, ঝালকাঠিতে বিষখালী নদীতে ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলা পয়েন্টে বিষখালী নদীর পানি ২৪ সেন্টিমিটার, ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলা পয়েন্টে মেঘনা নদী ৮৯ সেন্টিমিটার, তজুমদ্দিন উপজেলা পয়েন্টে মেঘনা ১ দশমিক ৭ সেন্টিমিটার, পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলা পয়েন্টে পায়রা নদীর পানি ৮ সেন্টিমিটার, বরগুনা সদর উপজেলা পয়েন্টে বিষখালী নদীর পানি ২১ সেন্টিমিটার, পাথরঘাটা উপজেলা পয়েন্টে বিষখালী নদীর পানি ৭ সেন্টিমিটার, পিরোজপুর জেলার বলেশ্বর নদীর পানি ১৫ সেন্টিমিটার ও উমেদপুর পয়েন্টে কচা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার আন্ধারমানিক নদী তীরবর্তী বাসিন্দা আরশাদ আলী বলেন, মঙ্গলবার থেকেই নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। যারা বেড়িবাঁধের বাইরে থাকেন তাদের ঘরে পানি ঢুকে গেছে। এজন্য বাধের কূলে এক ঘরে তিনি আশ্রয় নিয়েছেন। পানি কমলে ঘরে ফিরবেন।
এদিকে নদীর পানির উচ্চতা বাড়ায় কেবল উপকূলীয় এলাকা নয়। জেলা শহরের ভিতরেও জোয়ারের পানি প্রবেশ করে মানুষের দূর্ভোগ বাড়িয়েছে।
আই/এ
বরিশাল
বরিশাল থেকে লঞ্চ ও বাস চলাচল শুরু
বরিশালে কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জেলা এবং মেট্রেপলিটন এলাকায় সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। এ দিন বরিশাল নদী বন্দর থেকে সব রুটে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে; সড়ক পথেও চলছে যাত্রীবাহী বাস।
বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী সীমিত পরিসরে বুধবার (২৪ জুলাই) বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটে ছোট লঞ্চ চলাচল করেছে। তবে সন্ধ্যা ৬ টার কারফিউ কঠোর থাকায় ঢাকা-বরিশাল রুটে লঞ্চ চলাচল করেনি।
নগরবাসী জানান, নগরে গণপরিবহন চলছে এবং ব্যাংক-বিমা-অফিস-আদালতের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়েছে। কারফিউ শিথিল হওয়াতে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়াতে প্রয়োজনীয় কাজে আসা ব্যক্তিরা অনেকটা স্বস্তি পাচ্ছেন তারা। পরিস্থিতি এমনই থাকুক, আর কোনো অস্থির বা অস্থিতিশীল পরিবেশ চান না নগরবাসী।
উল্লেখ্য, কারফিউ শুরুর পর গেলো ২০ জুলাই থেকে বরিশাল নদী বন্দর থেকে সব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ছিল।
জেডএস//