চট্টগ্রাম
নোটবুকে প্রেমিকের ছবি ও নাম-ঠিকানা লিখে ট্রেনের নিচে তরুণীর ঝাঁপ
নোটবুকে প্রেমিকের ছবি ও নাম-ঠিকানা লিখে রেল লাইনের পাশে রেখে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক তরুণী। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সন্ধ্যায় কুমিল্লার বুড়িচংয়ে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাত দেড়টার দিকে ওই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ।
শুক্রবার (৩১ মে) দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে ওই ছাত্রীর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কুমিল্লার রেলওয়ে ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ মো. মোস্তফা কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মারা যাওয়া কলেজ ছাত্রীর নাম জান্নাত আক্তার। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার নিমবাড়ী গ্রামের আলমগীর হোসেনের মেয়ে। চারগাছ নুরুল ইসলাম ভুঁইয়া ডিগ্রি কলেজের মানবিক শাখার ছাত্রী ছিলেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল বিকাল থেকে ঢাকা- চট্টগ্রাম রেল পথের কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নের মাধবপুর এলাকায় মেয়েটি ঘুরাঘুরি করতে দেখা গেছে। সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে মেয়েটি আত্মহত্যা করেন। স্থানীয় লোকজন দূর থেকে তাকে বারবার ডাকাডাকি করলেও তিনি শোনেননি। পরে তাকে রেল লাইন থেকে সরাতে স্থানীয়রা এগিয়ে এলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি। মেয়েটি ট্রেনে ঝাঁপ দেয়ার পর আমরা এসে দেখতে পাই দুটি নোটবুক রেল লাইনের পাশে পাথর দিয়ে চাপা দেয়া। সেখানে একটি ছেলের নাম লেখা- হৃদয় মুন্সী. পিতা হোসেন মুন্সী, উপজেলা সাভার এবং তার ফোন নম্বর, ছবি, মেয়েটির জন্মনিবন্ধনের কাগজপত্র এবং কলেজের আইডি কার্ডও রাখা ছিল।
হৃদয় মুন্সির ফোন নম্বরে কল করে বিষয়টি জানানো হলে তিনি দুর্ব্যবহার করে ফোন কেটে দেন। এরপর বিষয়টি বুড়িচং থানা পুলিশ এবং রেলওয়ে পুলিশকে জানানো হয়। রাত দেড়টার দিকে রেলওয়ে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
জান্নাতের আত্মহত্যার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন তার চাচাতো ভাই রাজীব, ইয়াছিন ও আক্তার হোসেন। তারা জানান, জান্নাত কী কারণে আত্মহত্যা করছে কিছুই বুঝতে পারছেন না। যেহেতু সে জন্ম নিবন্ধনের কাগজপত্র সঙ্গে করে এনেছিল, মনে হয়, বিয়ে করার কথা বলে তার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। যদি ওই ছেলেটির কারণে জান্নাত আত্মহত্যা করে থাকে তাহলে তার বিচার দাবি করেন তারা।
কুমিল্লা রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মোস্তফা কামাল বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, মারা যাওয়া কলেজ ছাত্রী সকালে কোচিং করার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। পরে তিনি ট্রেনে করে সদর রসুলপুর স্টেশন আসেন। সেখান থেকে তিনি বুড়িচং মাধবপুর এসে পৌঁছান। আমরা সব আলামত জব্দ করেছি। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। পুলিশের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। আত্মহত্যার পেছনে যারই প্ররোচনা থাকুক, দোষী প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসি//
চট্টগ্রাম
কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন দুই সাইকেল আরোহী
কর্ণফুলীতে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দুই সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা একটার দিকে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর বাংলাবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নন্দনালী গ্রামের কামাল মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল মণ্ডল (১৮) ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট পাগলা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল জলিলের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (১৬)। তারা কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চরপাথরঘাটার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে তারা তিনজন সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
এএম/
চট্টগ্রাম
রাতেও ট্রাফিক সামলাচ্ছেন ছাত্রীরা
সরকার পতনের পরে চট্রগ্রামে নগরীর থানাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। এ অবস্থায় নগরীর রাস্তায় নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ। দিনভর রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন সরকার পতনের আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা। তবে দিন পেরিয়ে রাত হলেও, রাস্তায় ছাত্রদের পাশপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় ছাত্রীদেরও।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার অলী খা মসজিদ মোড় এলাকায় এমন চিত্র দেখতে পায় গণমাধ্যম।
নগরীর অলী খা মসজিদ মোড়ে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইজা তাবাসসুম বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এখানে আসা। সকালে শুনেছি সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই তারা কাজ করতে এসেছেন।
আসিফুর রহমান নামে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানান, শিফট সিস্টেম করে ছাত্ররা কাজ করছে। এখন তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের ইচ্ছায় তারা এখানে এসেছেন।
আই/এ
চট্টগ্রাম
‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিম ও তার ছেলে গণপিটুনিতে নিহত
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত ‘বালুখেকো’ খ্যাত চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তার ছেলে নায়ক শান্ত খান গনপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বালিয়া ইউনিয়নের ফরক্কাবাদ বাজারে এসে জনগণের তোপের মুখে পড়েন তারা। এরপর সেখানে নিজের পিস্তল থেকে গুলি করে উদ্ধার হয়ে আসতে পারলেও পার্শ্ববর্তী বাগাড়া বাজারে এসে জনতার মুখোমুখি হয়। তারপর সেখানে জনগণের পিটুনিতে নিহত হোন সেলিম খান ও তার ছেলে শান্ত খান।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম গণমাধ্যমে বলেন, তাদের মৃত্যুর বিষয় জেনেছি। তবে কেউ খবর দেয়নি। আর জানমালের নিরাপত্তার কারণে সেখানে কাউকে পাঠানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেলিম খান চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীতে শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। এসব ঘটনায় সে কারাভোগ করেন এবং দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। সেলিম খান একজন আলোচিত প্রযোজকও। তিনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার।
এছাড়া সেলিম খানকে পদ্মা-মেঘনার চর থেকে বিভিন্ন সময় বালু তোলাসহ নানা কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
এএম/