অপরাধ
পাসপোর্ট করতে বেনজীরের নজিরবিহীন জালিয়াতি, মিথ্যা পরিচয়ে বিশ্বভ্রমণ
স্বপরিবারে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ পাসপোর্ট জালিয়াতিতেও জড়িত । গেলো ১৮ এপ্রিল পুলিশের সাবেক এই প্রভাবশালী কর্মকর্তার সম্পদ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কমিটি গঠন করে। এরপর সংস্থাটির অনুসন্ধানে বের হয়ে আসে বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যরা বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
বেনজীর সরকারি চাকরিজীবী পরিচয়ে নীল রঙের অফিশিয়াল পাসপোর্ট করেননি। সুযোগ থাকার পরও নেননি ‘লাল পাসপোর্ট’ও। বেসরকারি চাকরিজীবী পরিচয়ে সাধারণ পাসপোর্ট তৈরি করতে নজিরবিহীন জালিয়াতি করেছেন এই কর্মকর্তা। তার জালিয়াতি ধরা পড়ে সেই পাসপোর্ট নবায়নের সময়।
২০১০ সালের ১১ অক্টোবর বেনজীর তার পুরোনো হাতে লেখা পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন করেন। তিনি নীল রঙের অফিশিয়াল পাসপোর্ট না নিয়ে সাধারণ পাসপোর্ট নেন। এ সময় আসল পরিচয় গোপন রেখে নিজেকে বেসরকারি চাকরিজীবী পরিচয় দেন। আবেদন ফর্মে পেশা লেখেন ‘প্রাইভেট সার্ভিস’।
বেনজীরকে নবায়নকৃত এমআরপি (মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট) দেয়া হয় ২০১০ সালের ১৪ অক্টোবর। সেই পাসপোর্ট মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ছিল ২০১৫ সালের ১৩ অক্টোবর। মেয়াদ শেষের আগেই ২০১৪ সালে আবারো পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন করেন বেনজীর।
বেনজীর তখন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্বপালন করছিলেন। সরকারের এতবড় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও তিনি অফিশিয়াল পাসপোর্ট নেননি। দ্বিতীয় ধাপে তার নবায়নকৃত পাসপোর্টের মেয়াদ ছিল ২০১৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। পরে ২০১৬ সালে তিনি আবারো পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন করেন। তখন তিনি ছিলেন র্যাব মহাপরিচালক। তখনও তিনি বেসরকারি পাসপোর্টের আবেদন করেন। সেসময় স্পস্ট হয় তার তথ্য গোপন ও জালিয়াতির ঘটনা।
আর এসব জালিয়াতি করতে বেনজীর এতবেশী ক্ষমতার অপব্যাবহার করেছেন যে তিনি নিজে কখনো পাসপোর্ট অফিসে হাজির হননি। তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা সব ব্যবস্থা করতেন। তবে র্যাব মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকার সময় বেসরকারি পাসপোর্ট দেখে সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট কর্মকর্তাদের সন্দেহ হয়। বিষয়টি পাসপোর্ট অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালককে জানানো হয়। সেসময়, বেনজীরের আবেদনপত্র আটকে দেয়া হয়। বেনজীরকে বিভাগীয় অনাপত্তিপত্র বা এনওসি জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু বেনজীর এনওসি জমা না দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে পাসপোর্ট নবায়ন করান।
পাসপোর্ট করতে বেনজীর আহমেদ চলাচলে অক্ষম, গুরুতর অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে পাসপার্টে অফিসের মোবাইল ইউনিট বাসায় নেয়ান। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তার বাসায় গিয়ে ছবি তোলা, আঙুলের ছাপ নেয়াসহ সব প্রক্রিয়া শেষ করেন।
২০২০ সালের ৪ মার্চ তার আবেদনপত্র জমা হয়ে যায়। ১ জুন বেনজীরের নামে ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। এখানে মেয়াদ বাড়াতেও বেনজীর তার প্রভাব খাটান। সরকারি চাকরিজীবীদের ৫ বছরের বেশি মেয়াদের পাসপোর্ট দেয়ার নিয়ম না থাকলেও তাকে দেয়া হয় ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সরকারি পাসপোর্ট থাকলে অন্য কোনো দেশের নাগরিকত্ব নেয়া অনেক জটিল। অফিশিয়াল পাসপোর্টধারীদের দেশের বাইরে যেতে হলেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ থেকে অনুমোদন নিতে এসব কারণেই এমন সব প্রতারণা এবং জালিয়াতি করেছেন বেনজীর আহমেদ।
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ