পরামর্শ
অফিসে যে শিষ্টাচারগুলো মেনে চলা উচিত
‘এটিকেট’ টার্ম টি অনেকের কাছেই নতুন, কিন্তু এটি মোটেও অজানা কোনো টার্ম নয়। এটিকেট এর বাংলা অর্থ হচ্ছে শিষ্টাচার। সঠিক শিষ্টাচার আমাদের জীবনের সকল ক্ষেত্রেই জরুরি। আর পেশাগত জীবনে এটি অত্যাবশ্যকীয়। আজকের আলোচনাটি অফিস এটিকেট বা শিষ্টাচার নিয়ে। অর্থাৎ অফিস বা পেশাগত জীবনে আমাদের যে শিষ্টাচারগুলো মেনে চলা উচিত যা আমাদের আরো বেশি ব্যক্তিত্বসম্পন্ন করে তুলবে তা নিয়েই।
শিষ্টাচার কী?
বাংলা একাডেমির ইংরেজি-বাংলা ডিকশনারী অনুযায়ী এটিকেট বা শিষ্টাচারের অর্থ করা হয়েছে বিশেষ পেশায় বা সমাজের বিশেষ স্তরে প্রচলিত আদব কায়দা, নম্র আচরণ। নম্র, ভদ্র, সুন্দর মার্জিত ও সার্বজনীন আচরণই হলো শিষ্টাচার। একজন ভদ্র, শিক্ষিত ব্যক্তির আচার আচরণ, কথা বার্তা, চাল চলন, পোশাক পরিচ্ছদ ও কাজকর্মে যে নম্রতা ও মার্জিত রুচির পরিচয় প্রকাশ পায় তার সমষ্টিগত অবস্থাকে এককথায় শিষ্টাচার বলা হয়। শিষ্টাচার মানুষের ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটায়। ব্যক্তিগত জীবনের পাশাপাশি পেশাগত জীবনেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিষ্টাচার রয়েছে। এই শিষ্টাচার গুলো মেনে চললে আপনার কর্মক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন অনেক সহজ হয়ে উঠবে। আপনি যখন অন্যের সাথে একটি কর্মক্ষেত্র ভাগ করে নিচ্ছেন, তখন শিষ্টাচারের সমস্ত নিয়ম কানুন অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অফিসে ঢুকেই শুভেচ্ছা বা সালাম বিনিময়
অফিসে প্রবেশ করেই আপনি যদি আপনার কলিগদের উদ্দ্যেশ্যে নিজ ধর্ম অনুযায়ী ‘সালাম-নমষ্কার’ দিয়ে দিন শুরু করেন অথবা ‘শুভ সকাল’, ‘শুভ বিকেল’ ইত্যাদি শুভেচ্ছা বিনিময় করেন, সুন্দর একটি হাসি দিয়ে তবে সবার সাথে আপনার সম্পর্কটা থাকবে সুন্দর। সহকর্মীদের হালকা খোঁজ খবর নিন, এতে সবার সাথে আপনার সুসম্পর্ক তৈরি হবে। আপনাকে সবাই একজন জেন্টল পার্সন হিসেবেই চিনবে। সবার সাথে কথা শুরুর আগে হালকা সৌজন্যতা আপনার কলিগদের আরো বেশি কম্ফোর্ট করবে কনভারসেশন স্টার্ট করতে।
অফিসের সহকর্মীদের সাথে কনভারসেশন শুরু করুন
একে অন্যের সাথে হালকা কথাবার্তা বা কনভারসেশন শুধু কলিগদের সাথে সম্পর্ককে সুন্দরই করে না বরং একজনকে অন্যজনের প্রতি সহজ করে তোলে। এর ফলে অফিসের যেকোনো কাজ একসাথে করতে সহজ হয়। আপনি ভদ্রভাবে তাদের খোঁজ খবর নিন অথবা দেশ ও দেশের বাইরের যেকোনো সমসাময়িক বিষয় নিয়ে তাদের সাথে হালকা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে কনভারসেশন শুরু করতে পারেন। এতে অপর পাশের ব্যক্তিও আর আপনার কাছে অপরিচিত থাকবে না। সহকর্মীরাও আপনার সাথে কাজ করতে কম্ফোর্ট ফিল করবে।
অন্যের প্রতি সম্মান ও সহানুভূতি প্রকাশ করুন
অফিসে কাজকর্ম বা কথাবার্তা ও আচার আচরণে অন্যের প্রতি সম্মানপ্রদর্শন ও সহানুভূতিশীল হোন। অন্যকে যতটুক সম্ভব সাহায্য সহযোগিতা করা, টিম ওয়ার্কগুলোতে মনোযোগী ও অন্য টিম মেম্বারদের প্রতি যত্নবান হোন। আপনার কনভারসেশনে ‘প্লিজ’, ধন্যবাদ বা থ্যাংকিউ, স্যরি বা দুঃখিত, এক্সকিউজ মি ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করুন যখন যেমন প্রয়োজন।
মোবাইল সাইলেন্ট রাখুন
অফিসে আপনার মোবাইলের নোটিফিকেশন, টেক্সট রিং, কল রিং ইত্যাদি অপর সহকর্মীদের বিরক্ত করতে পারে। মোবাইলের সাউন্ড অন্যের কাজের মনোযোগ নস্ট করতে পারে। তাই অফিসে বা যেকোনো কর্মক্ষেত্রে, কাজের সময় ও মিটিংএ সবসময় আপনার মোবাইল সাইলেন্ট বা ভাইব্রেটিং মুডে রাখুন।
সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। প্রতিদিন গোসল করা, পরিষ্কার জামা-জুতা পরিধান সহ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা প্রতিটি মানুষের জন্য অবশ্য করনীয়। অপরিষ্কার ব্যক্তি কারো প্রিয় হতে পারে না, তাদের কেউ সুনজরে দেখে না। আর অপরিষ্কার থাকলে নিজেরও বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। খেয়াল রাখুন আপনার পরিধেয় জামা কাপড়, মোজা, জুতা সেই সাথে মুখ ও শরীর থেকে যেনো কোনো প্রকার বিকট গন্ধ না আসে। তাছাড়া অফিসে আপনার নিজের ডেক্সটিও সবসময় গুছিয়ে রাখুন। অফিসে আপনার ব্যবহৃত যেকোনো জিনিস পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন।
জামা কাপড় পরিধানে সচেতন থাকুন
অফিস বা কর্মক্ষেত্রে অবশ্যই মার্জিত, মানানসই, সিম্পল ও কম্ফোর্টেবল জামা পরিধান করা উচিত। কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত ডিজাইন যুক্ত কাপড় পরিধান, অতিরিক্ত গহনা ও কড়া পারফিউম ব্যবহার করা উচিত নয়। আপনাকে যেনো দৃষ্টিকটু না দেখায় এমন কাপড় ও ফ্যাশন মেইনটেইন করতে হবে। জামা কাপড় হবে শালীন ও মানানসই। অফিসে চাকচিক্যময় সামগ্রী ব্যবহারে সচেতন হোন।
সময়মতো কর্মক্ষেত্রে উপস্থিত থাকুন
যেকোনো কর্মক্ষেত্রে সবসময় একদম সঠিক টাইমে উপস্থিত হোন। সময়ানুবর্তিতা মানুষের জীবনের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক যা মানুষকে করে তোলে উন্নত ব্যক্তিত্বের অধিকারী। কর্মক্ষেত্রে কখনই লেইট করে ঢোকা উচিত নয়, এতে করে যেমন আপনি সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে হিমশিম খাবেন তেমনি অন্যান্য কলিগ এর বিরক্তির কারণও হয়ে উঠবেন। আপনার সার্ভিস নিয়ে সহকর্মী, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অসন্তোষ প্রকাশ করবে, যা আপনার কর্মক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে। তাই বলা হয় সময়ানুবর্তিতা মানুষকে উন্নত বেশিষ্ট্যের অধিকারী করে তুলে। সুতরাং সবসময় চেস্টা করবেন যেনো সঠিক সময়ে উপস্থিত হতে পারেন অফিসে অথবা যেকোনো কর্মক্ষেত্রে।
অসুস্থ থাকলে বাসায় বিশ্রাম নিন
হাঁচি, কাশি, চোখের সমস্যা বা যেকোনো ধরনের ছোঁয়াচে রোগ হলে অফিসে না আসাই বেশি যুক্তিযুক্ত। কেননা এতে অফিসের পরিবেশ বিপর্যস্ত হতে পারে। ছোঁয়াচে রোগ দ্বারা সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়ুক এমনটি কারোরই কাম্য নয়। তাই অসুস্থ থাকা স্বত্তেও কাজটি গুরুত্বপূর্ণ হলে বাসায় বসে সেই কাজগুলো করুন অনথ্যায় অসুস্থতার দিনগুলোতে ভালোভাবে বিশ্রাম নিন।
খাবার ব্রেক টাইমে বা কর্মক্ষেত্রের বাইরে গিয়ে গ্রহন করুন
অনেকেরই অভ্যাস থাকে কাজ করতে করতে নিজের ডেস্কে বসেই খাবার খাওয়ার। তারা আশেপাশের কিছু খেয়ালই করেন না এবং একমনে নিজের খাবার গ্রহণ করতে থাকেন। কিন্তু খাবার খাওয়ার শব্দ ও খাবারের ঘ্রাণে অন্য সহকর্মীদের মনোযোগে সমস্যা হয়ে থাকে। এছাড়াও ব্রেক টাইম ছাড়া এভাবে সকলের মধ্যে খাবার গ্রহন খুবই দৃষ্টিকটু। আপনার খাদ্য গ্রহনের দিকে অন্য একজন ক্ষুধার্ত ব্যক্তির বারংবার নজর যাবে এটাই স্বাভাবিক। সুতরাং হয় ব্রেক টাইমে বা ব্রেক রুমে গিয়ে খাবার গ্রহণ করুন অথবা কর্মক্ষেত্রের বাইরে গিয়ে খাবার গ্রহণ করুন।
কাজের সময় অন্যদের বিরক্ত না করুন
অনেকেরই অভ্যাস হচ্ছে কাজ করতে করতে কথা বলা, এতে তারা হয়তো কথা বলার পাশাপাশি কাজটিও খুব ভালোভাবে করতে পারেন কিন্তু অপররাও কি তাই পারেন? আপনার কথার শব্দে এবং অন্য সহকর্মীদের সাথে কথা বলার জন্য তাদের নিজেদের ও অন্যান্য সকলেরই কিন্তু মনোযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে, তারা অনেকেই হয়তো সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারছেন না। সুতরাং নিজের সুবিধা বা ভালোলাগা যেনো অন্যের সমস্যার কারণ না হয়। সবাই চায় শান্ত পরিবেশে কাজ করতে আর কখনই সেটি নষ্ট করা উচিত নয়।
সুন্দর আচার আচরণ মেনটেইন করুন
সকলের সাথে ভালো, ভদ্র ব্যবহার ও সুন্দর আচার আচরণ করুন। আপনার কোনো প্রকার বডি ল্যাংগুয়েজ যেনো কাওকে অস্বস্তিতে ফেলে না দেয় বা বিরক্তির কারণ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। সকলের সাথে মার্জিত আচরণ করুন। মনে রাখবেন ব্যবহারই কিন্তু আপনার পরিচায়ক।
কলিগদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখুন
আশা করছি এই গুরুত্বপূর্ণ অফিস এটিকেট গুলো আপনার সঠিক ব্যক্তিত্বসম্পন্ন করে তুলতে সাহায্য করবে। তাই কর্মক্ষেত্রে বা যেকোনো জায়গায়ই এটিকেট বজায় রেখে চলুন। এতে করে আপনার কাজ করার পরিবেশ সুন্দর থাকবে, আপনাকে সবাই প্রশংসা করবে এবং আপনাকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।
জেএইচ
পরামর্শ
মুখে ঘা দূর করতে মেনে চলুন ৫ উপায়
খাওয়া দাওয়ার সময় বা কথা বলার সময়ে মুখে ঘা হলে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। এই সমস্যা দীর্ঘদিন সহ্য না করাই উত্তম। এই সমস্যা কিন্তু একসময় মুখে আলসারেরও লক্ষণ হতে পারে। মুখের আলসারকে সামান্য ঘা ভেবে অবহেলা করলেই বিপদে পড়বেন। কোষ্ঠকাঠিন্য, হরমোন জনিত সমস্যার কারণে মুখের ভিতরে আলসার হতে পারে। অনেকে আবার ব্রেসেস পড়েন, তাঁদেরও মাঝেমাঝে এই সমস্যা হয়। শরীরে ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি, আয়রন, জিঙ্ক, ফোলেটের ঘাটতির কারণেও মুখের ঘা থেকে আলসার হতে পারে।
মুখে ঘা হলে কিছুদিনের জন্য ঝাল, টক জাতীয় খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। না হলে মুখে জ্বালা অনুভূত হবে। মুখে ঘা হলে মুক্তি পেতে পারেন ৫ উপায়ে ।
১) মুখের ঘা কমাতে হালকা গরম পানিতে সামান্য লবন মিশিয়ে কুলকুচি করুন। এতে আরাম পাবেন। দিনে তিন থেকে চার বার করলে ব্যথা ও ঘা দুটোই কমে আসবে।
২) ঘায়ের জায়গায় সামান্য মধু লাগিয়ে রাখতে পারেন, ভালো উপকার পাবেন। কয়েক ঘণ্টা অন্তর অন্তর মধু লাগালে সুফল পাবেন।
৩) ঘায়ের জায়গায় বিশুদ্ধ নারিকেল তেল লাগিয়ে রাখলেও বেশ আরাম পাবেন।
৪) যে কোনও ঘায়ের জন্য ভালো প্রাকৃতিক ঔষধ হতে পারে হলুদ। মুখে যে জায়গায় ঘা হয়েছে, সেই স্থানে হলুদ বাটা লাগিয়ে রাখতে পারেন। কিছু দিন ব্যবহার করলেই ঘায়ের তীব্র জ্বালা-যন্ত্রণা কমে আসবে।
৫) বেকিং সোডা ঘা সারাতে দারুণ উপকারী একটি জিনিস। এক কাপ পানিতে এক চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে কুলকুচি করলে ঘা কমে যাবে। এছাড়া বেকিং সোডার সঙ্গে সামান্য পানি মিশিয়ে একটা ঘন পেস্ট তৈরি করে নিতে পারেন। সেই পেস্ট ক্ষতস্থানে লাগিয়ে রাখলেও বেশ উপকার পেতে পারেন।
জেডএস/
পরামর্শ
হাড়ের বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য শিশুর খাদ্যতালিকায় যা রাখবেন
সন্তানের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তায় থাকেন সব বাবা-মাই। শিশু কী খাবে, কতটা খাবে আর কখন খাবে- এই নিয়ে ভাবনাচিন্তা নিয়ে তারা সারাক্ষণ অস্থির। শিশু রোজ যা যা খাচ্ছে, তার থেকে শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি পৌঁছচ্ছে কি না এটি জানাও খুব জরুরি। বাড়ন্ত শিশুকে হাড়ের পুষ্টি ও বৃদ্ধির জন্য সুষম আহারই দিতে হবে। আর বিশেষ করে শিশুর খাদ্যতালিকায় রোজ ক্যালশিয়াম রাখতেই হবে। রোজ কোন কোন খাবার তালিকায় রাখলে শিশুর ক্যালশিয়ামের অভাব হবে না, তা জেনে নিন।
দুধ : সুষম আহারের মধ্যে প্রথমেই বলতে হয় দুধের কথা। এই বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দীপিকা সুর জানাচ্ছেন, দুধের মধ্যে থাকা ক্যালশিয়াম হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায়। শিশুকে রোজ নিয়ম করে দুধ খাওয়ানো উচিত। তবে যদি দুধে অ্যালার্জি থাকে বা দুধ হজম না হয়, তা হলে পনির, দই, ছানা, মাখন এ সব রাখুন তার খাদ্যতালিকায়।
মটরশুঁটি : মটরশুঁটির দানায় আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম। যা তার হাড়ের পুষ্টিতে বিশেষ সহায়ক। সাধারণত, শীতের সব্জি এটি, তাই শীতেই তার খাবারে মটরশুঁটি রাখতে হবে। ব্রোকোলিও তাই। অনেক শিশুই ব্রোকোলি খেতে চায় না। সে ক্ষেত্রে ব্রোকোলি দিয়ে স্যুপ বানিয়ে দিন। কয়েক টুকরো চিকেন সিদ্ধ দিয়ে দিন তাতে। অল্প করে মাখন দিয়ে গরম স্যুপ, সোনামুখ করে খেয়ে নেবে খুদে।
পিনাট বাটার : পিনাট বাটারেও প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম আছে। খেতে ততটা সুস্বাদু নয় বলে হয়তো শিশু খেতে চাইবে না। মায়েরা সে ক্ষেত্রে পাউরুটির মুচমুচে টোস্ট বানিয়ে তার মধ্যে পিনাট বাটার দিয়ে দিন। গরম আটার রুটি রোল করে ভেতরে পিনাট বাটার দিয়ে শিশুকে প্রাতরাশে দিন। সঙ্গে দিন ফ্রুট স্যালাড। ফল ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নুন ও গোলমরিচ দিয়ে দিন। ফল এমন ভাবে সাজিয়ে দিন যে দেখেই খেতে চাইবে শিশু।
আমন্ড বাটার : বাড়িতে আমন্ড বাটারও এনে রাখতে পারেন। সাদা মাখন না দিয়ে পাউরুটিতে আমন্ড বাটার মাখিয়ে দিন। আমন্ড বা কাঠবাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর ক্যালশিয়াম। ১/৩ কাপ কাঠবাদামে প্রায় ২৬৪ মিলিগ্রাম মতো ক্যালশিয়াম মেলে। সন্তানকে দুধের সঙ্গেও দিন কয়েক টুকরো কাঠবাদাম। দুধ-কর্নফ্লেক্স খেলে উপরে ছড়িয়ে দিতে পারেন।
মাছ : মাছে প্রচুর ক্যালশিয়াম আছে। শিশুর হাড়ের বৃদ্ধির দিকে বিশেষ নজর দিতে হলে তার খাদ্যতালিকায় অবশ্যই রাখুন মাছ। কাতলা, ভেটকি, কই মাছে ভাল পরিমাণে ক্যালশিয়াম থাকে। ১০০ গ্রাম কাতলা মাছ খেলে ৫৩০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম পাওয়া যাবে, ১০০ গ্রাম ভেটকিতে প্রায় ৪৮০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম থাকে। ৫০ গ্রাম করে, অর্থাৎ দিনে দু’পিস মাছও যদি খুদে খায়, তা হলেও রোজের ক্যালশিয়ামের অনেকটাই পূরণ হবে।
ফলের রস : টাটকা ফলের রসও দিন শিশুকে। এক গ্লাস কমলালেবু বা মুসম্বির রস থেকে ৬০ মিলিগ্রামের মতো ক্যালশিয়াম পাওয়া যাবে। প্রাতরাশে যে দিন দুধ দেবেন না, সে দিন ফলের রস দিন। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খাবার দিলে শিশুর অরুচি হবে না। মনে রাখতে হবে, শিশুকে একদম চা-কফি বা নরম পানীয় দেওয়া চলবে না। কারণ ক্যাফিন ক্যালশিয়াম শোষণে বাধা দেয়। তখন যতই পুষ্টিকর খাবার খাওয়ান না কেন, তাতে লাভের লাভ কিছুই হবে না। বেশি লবণ দেয়া খাবার, বেশি তেল ও মশলা দেওয়া খাবার শিশুকে দেয়া চলবে না।
জেএইচ
পরামর্শ
কিডনিতে পাথর হওয়ার বেশি ঝুঁকিতে কারা?
অফিসে সারাদিন বসে যারা কাজ করেন, তাদের বিপত্তি বেশি। একেই সারাক্ষণ বসে থেকে পেট-কোমরের মেদ বাড়ে। তার উপরে শরীরচর্চার অভ্যাস নেই, পানি কম খাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে শরীরে নানাবিধ রোগ বাসা বাঁধতে থাকে কম বয়স থেকেই। চিকিৎসকেরা বলেন, কিডনিতে পাথর হওয়ার অন্যতম বড় কারণ হল পানি কম খাওয়া। তা ছাড়া স্থূলত্ব, বিশেষ কিছু ওষুধ বা সাপ্লিমেন্ট খাওয়া, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলেও কিডনিতে পাথর জমতে পারে। এখন জেনে নিন, এ ক্ষেত্রে কাদের ঝুঁকি বেশি।
কিডনি শুধু শরীর থেকে রেচন পদার্থই বার করে না, তার ভূমিকা আরও বেশি। যেমন— রক্তে সোডিয়াম, পটাশিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে কিডনি। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতেও এর ভূমিকা আছে। তা ছাড়া, শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, রক্তকণিকা উৎপাদনে সাহায্য করা, হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখা। কিডনিতে পাথর জমলে ভয়ের খুব বেশি কারণ না হলেও দ্রুত সেই পাথর শরীর থেকে বার না হলে সমস্যা বাড়তে পারে।
ঝুঁকিতে কারা?
১) দিনে আড়াই থেকে তিন লিটার পানি খেতে হবে।
২) বেশি প্রাণিজ প্রোটিন যারা খাচ্ছেন, তাদেরও ঝুঁকি বেশি। খুব বেশি তেলমশলা দিয়ে কষিয়ে মাংস বা মাছ, ডিম প্রায় রোজ খেতে শুরু করলে তখন বিপদ বাড়বে। এমনকি, বাইরের খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খেলে কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকি বাড়বে।
৩) অতিরিক্ত উদ্বেগ, মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা থেকে ভ্যাসোপ্রেসিন নামে এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয়, যা মূত্রের ঘনত্ব বাড়িয়ে দেয়। ফলে কিডনিতে পাথর জমতে পারে।
৪) বাতের সমস্যা থাকলেও ঝুঁকি বাড়তে পারে বলে দেখা গিয়েছে কিছু ক্ষেত্রে।
৫) রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে, খনিজ উপাদানগুলির ভারসাম্য বিগড়ে গেলে ঝুঁকি বাড়বে।
৬) খাদ্যে লবণ তথা সোডিয়ামের মাত্রা কমিয়ে প্রস্রাবে ক্যালসিয়াম নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
৭) বেশি মাত্রায় মদ্যপানও ঝুঁকি বাড়াতে পারে। নরম পানীয়, বেশি মিষ্টি দেয়া প্যাকেটজাত পানীয় বেশি খাওয়াও বিপদের কারণ হতে পারে।
কেএস/