জাতীয়
ইতালি দূতাবাসে ২০ হাজার পাসপোর্ট জমা, ধৈর্য ধরতে বললেন রাষ্ট্রদূত
ঢাকাস্থ ইতালি দূতাবাসে বর্তমানে কমপক্ষে ২০ হাজার বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাচাইয়ের জন্য অপেক্ষমান থাকায় ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো সকল ধরণের ভিসাপ্রার্থীদেরকে দূতাবাসের অসুবিধা বিবেচনা করে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন।
ভিসা প্রদান প্রক্রিয়ার জন্য বিশাল আবেদন জমে থাকার বিষয় বর্ণনা করে বৃহস্পতিবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি বাসসকে বলেন, ‘আমি সবাইকে ধৈর্য ধরতে এবং (দূতাবাসের) অসুবিধাগুলো বিবেচনার আহবান জানাচ্ছি। তাদের কাছে আমার আহ্বান হল, আরো ধৈর্য ধরুন এবং শুধুমাত্র অফিসিয়াল এজেন্টদের ওপর আস্থা রাখুন।’
ইতালীয় দূতাবাস গত বছরের জুলাই মাস থেকে কাজের ভিসা আবেদনকারীদের একটি ঢেউ দেখেছে কারণ অনেক বাংলাদেশি ভাগ্যান্বেষীরা এই ধনী ইউরোপীয় দেশকে টার্গেট করছে,ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই দেশটিতে বৃহত্তম বাংলাদেশী সম্প্রদায় বসবাস করছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এই ভলিউমের ভিসা আবেদন বৃদ্ধি অপ্রত্যাশিত ছিল, এবং দূতাবাস খুবই ছোট ছিল এবং এখানে নিয়োজিত মানবসম্পদ আবেদনের এই বৃদ্ধির সাথে মানিয়ে নিতে পারেনি।’
পাসপোর্টের ব্যাকলগ সম্পর্কে, আলেসান্দ্রো বলেন, এই মুহূর্তে দূতাবাসে কমপক্ষে ২০,০০০ পাসপোর্ট রয়েছে, আরও অনেক আবেদনকারী অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য বাইরে অপেক্ষা করছেন।
দূতাবাসে ১০০,০০০-এরও বেশি পাসপোর্ট রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করা একটি সাম্প্রতিক মিডিয়া রিপোর্টের প্রতি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, রাষ্ট্রদূত দাবিটি নাকচ করে দিয়ে বলেন, ‘অবশ্যই এটি (পাসপোর্টের সংখ্যা) ১০০,০০০ নয়,আমার কোন ধারণা নেই কে এই হিসাব দিয়েছে।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, ভিসা প্রসেসিং বিলম্বিত হওয়ার প্রধান কারণ হল কনস্যুলার বিভাগে প্রতি পাঁচটির মধ্যে অন্তত একটি আবেদনের সাথে একটি সমস্যাযুক্ত এবং অনিয়মিত নথি রয়েছে।
পুরো ব্যাকলগ ক্লিয়ার করতে কত সময় লাগবে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, কবে তারা পুরো ব্যাকলগ ক্লিয়ার করতে পারবে তার জবাব দেওয়া কঠিন কারণ এটি নির্ভর করে দূতাবাস প্রতিটি আবেদনে যে সমস্যাগুলি খুঁজে পায় তার উপর।
তিনি বলেন, ইতালিতে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠী বৃহত্তর এবং আরও সংহত হয়েছে, তাই পারিবারিক পুনর্মিলন, ব্যবসায়িক পর্যটন বা পারিবারিক ভ্রমণের জন্য অনেক লোককে আকর্ষণ করছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ওয়ার্ক ভিসা একটি ক্যাটাগরি এবং অন্যান্য ক্যাটাগরির ভিসা রয়েছে- ট্যুরিস্ট ভিসা, বিজনেস ভিসা, স্টাডি ভিসা, ফ্যামিলি ভিসা রয়েছে এবং এসব ক্যাটাগরি ব্যাপক হারে বাড়ছে।
তিনি বলেন,‘এই সমস্ত কিছু আমাদের দূতাবাসের উপর উল্লেখযোগ্য চাপ সৃষ্টি করছে এবং এটি বিলম্বের ব্যাখ্যা করে, কারণ কাজের ভিসা গুরুত্বপূর্ণ, তবে এই অন্যান্য বিভাগগুলোও গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের ভিসা অফিসকে সমস্ত বিভাগের জন্য কাজ করতে হবে। সুতরাং, আমি স্বীকার করি যে বিলম্ব হয়েছে এবং অবশ্যই, আমরা এই বিলম্বের জন্য জনসাধারণের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।’
সাধারণ পরিস্থিতিতে, ইতালীয় ভিসা ব্যবস্থা পাসপোর্টের সাথে কাজ করে এবং আবেদনকারী ভিএফএস গ্লোবালের মাধ্যমে পাসপোর্ট জমা দেয়। তারপর ভিএফএস গ্লোবাল এই আবেদন এবং পাসপোর্ট দূতাবাসে নিয়ে আসে।
তিনি বলেন, ‘এখন আমরা আর পাসপোর্ট রাখছি না। কাজেই,কাজের ভিসার জন্য আবেদনকারীরা এখন শুধু পাসপোর্টের ফটোকপি রেখে যান। তারা পাসপোর্টটি তাদের সাথে রাখেন যাতে তারা ভ্রমণ করতে পারে এবং পাসপোর্টটি অন্য উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে পারে।’
তিনি বলেন, ব্যাকলগ ক্লিয়ার এবং দূতাবাসে এখন যেসব আবেদনকারীর পাসপোর্ট যাচাইকরণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে তাদের জবাব দিতে দূতাবাস বদ্ধপরিকর।
ব্যাকলগ ক্লিয়ার করার জন্য তিনি ভিসা প্রত্যাশীদের কোনো চাপের সম্মুখীন হচ্ছেন কি না জানতে চাইলে দূত বলেন, ‘চাপ আমাদের জন্য শুধুমাত্র আমাদের কাজ করার জন্য তাই অন্য ধরনের চাপ এখানে প্রাসঙ্গিক নয়।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে এবং এর একটি হল নতুন জায়গা অধিগ্রহণ করা যা একটি বড় জায়গা হবে, ভিসা অফিসের জন্য আরও কার্যকরী এবং ভিএফএস গ্লোবালের জন্য একই রকম হবে।
আলেসান্দ্রো বলেছেন, ‘ভিএফএসও একটি নতুন সুবিধা, নতুন ভিসা আবেদন কেন্দ্রে স্থানান্তরিত হয়েছে, আবেদনকারীদের জন্য অনেক বড় এবং আরও কার্যকরী এবং আরামদায়ক হবে।’
দ্বিতীয় পদক্ষেপ হল তারা সম্প্রতি দুই স্থানীয় কর্মী নিয়োগ করেছে এবং সদর দফতর থেকে কিছু অতিরিক্ত কর্মী যোগ করা হবে।
নিরাপদ অভিবাসন ইস্যু প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, ইতালিতে স্থানান্তর আয়োজনের জন্য মধ্যস্বত্বভোগীদের উচ্চ পরিমাণ অর্থ প্রদানের একটি প্রথা রয়েছে যা ইতালি এবং বাংলাদেশে উভয় ক্ষেত্রেই একটি বেআইনি প্রথা।
তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে,অভিবাসী এই অর্থ প্রদান করে তবে তিনি কোথায় যাচ্ছেন এবং কোন কোম্পানির জন্য কী ধরণের কাজ করতে যাচ্ছেন তাও জানেন না।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ভিসা প্রক্রিয়াকরণের জন্য আমাদের অফিসিয়াল এজেন্সি হল ভিএফএস গ্লোবাল। তারাই ভিসা আবেদনের জন্য নথি সংগ্রহের জন্য অনুমোদিত।’
তিনি বলেন, কাজের জন্য অভিবাসীদের ইতালিতে প্রবেশের চারটি ধাপ- একটি কোম্পানির স্পন্সরশিপ, ইতালীয় সরকারের ওয়ার্কিং পারমিট, ইতালীয় দূতাবাসের ভিসা এবং সীমান্তে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দেশে প্রবেশের অনুমতি।
জেএইচ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ