পরামর্শ
বাবা-মায়ের ঝগড়া বিবাদ যেভাবে সন্তানের উপর প্রভাব ফেলে
বা-মায়ের কাছে সন্তান এতোটাই মূল্যবান যার তুলনা অন্য কিছুর সাথে হয় না। নিজের সন্তান যেন সুরক্ষিত থাকে, সুস্থ থাকে, ঠিকঠাকভাবে বেড়ে ওঠে, এটাই সবার চাওয়া। মা বাবার পারস্পরিক আস্থা ও ভালোবাসার সম্পর্ক থেকেই শিশু প্রথম বুঝতে শেখে যে পরিবার আসলে কী। বাবা-মায়ের ভালোবাসা যেমন সন্তানকে সুস্থ, সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে; ঠিক তেমনি দাম্পত্য কলহ বা মনোমালিন্য সন্তানকে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ এর দিকে ঠেলে দেয়।
বাবা-মায়ের ঝগড়া বিবাদ কীভাবে সন্তানের উপর প্রভাব ফেলে?
পরিবারে যদি ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স এর মতো ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে সেই পরিবেশে সন্তানের সুস্থভাবে বড় হওয়া কি পসিবল? একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রায় ৭২% বিবাহিত নারীরা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। ২০১৩ সালে সাইকোলজিক্যাল সায়েন্স জার্নাল তাদের একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে যেখানে বলা হয়, ৬ মাস বয়সী বাচ্চার সামনেও যখন বাবা-মায়ের ঝগড়া বিবাদ হয়, তখন সেটা মস্তিষ্কে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। দীর্ঘদিন এই ধরনের স্ট্রেসফুল এনভায়রনমেন্টে থাকার ফলে মানসিক বিকাশও দেরিতে হয়।
দাম্পত্য কলহ ও সন্তানের উপর এর প্রভাব
এছাড়া আরও একটি প্রতিবেদনে এসেছে কিন্ডারগার্টেন থেকে শুরু করে টিনেজ পর্যন্ত যেসব ছেলে মেয়ে পরিবারের দ্বন্দ্ব সংঘাতের মাঝে বড় হয়, প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় অনেক ক্ষেত্রে তাদের মেন্টাল ডিসঅর্ডার দেখা দেয়।
চলুন দেখে নেই এক্ষেত্রে সন্তানের উপর কী ধরনের প্রভাব পড়ে-
আত্নবিশ্বাসের ঘাটতি
ছোটবেলা থেকে বাবা-মায়ের কলহ দেখে বড় হলে সে কিন্তু আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারে না। যেহেতু সুস্থ পারিবারিক পরিবেশটা পাচ্ছে না এবং এই অবস্থায় তার কী করা উচিত, সেটাও বুঝে উঠতে পারে না। আস্তে আস্তে সে তার আত্নবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। নিজের ব্যক্তিত্ব বিকাশের সুযোগও সে পায় না।
কাজে অমনোযোগীতা
আত্নবিশ্বাস হারিয়ে ফেলার কারণে কোনো কাজেই সে মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না। এটাও এক ধরনের মেন্টাল ডিজঅর্ডার।
জেদ ও রাগ বেড়ে যাওয়া
একেক জন শিশুর মাঝে দেখা যায় একেক ধরনের পরিবর্তন। কেউ প্রচন্ড রকমের ভীতু, কেউ জেদি, কেউ বা রাগ কন্ট্রোল করতে পারে না, এই ধরনের ইস্যু দেখা যায়। সব সময় উদাসীন থাকা, কারো সাথে মিশতে না চাওয়া বা খেলতে যেয়ে অন্যদের সাথে রুডলি কথা বলা – এসবই পারিবারিক অশান্তির ফলাফল। দাম্পত্য কলহ সন্তানের মানসিক বিকাশের প্রতিটা ধাপেই বাধা সৃষ্টি করে।
একাডেমিক কার্যক্রমে অবনতি
যে বাচ্চাটা সবসময়ই মন খারাপ করে থাকে, ঘরে ঝগড়া দেখে বড় হয়; তার জন্য লেখাপড়ায় মনোযোগ ধরে রাখা বেশ কঠিন। আর সে একটা সময় এসে হাল ছেড়ে দেয়। এজন্যই দেখা যায়, অনেক ছেলে মেয়ে টিনেজে এসে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ে, ইয়ার ড্রপ দেয়। পড়াশুনাতে আর ফোকাসড থাকতে পারে না।
শারীরিক অসুস্থতা
একটানা স্ট্রেসে থাকতে থাকতে কিন্তু শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধি দেখা দেয়। ইনসমনিয়া, জ্বর, দুর্বলতা, ক্ষুধামন্দা, মাথা ব্যথা এমনকি অস্বাভাবিকভাবে কথা বলা, কথা জড়িয়ে যাওয়া সহ নানা রকমের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আর মানসিক অবসাদ তো তার নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে যায়।
প্রাপ্তবয়সে এসেও মেন্টাল ট্রমা
যদি শৈশব কাটে আতঙ্কে, নিরাপত্তাহীনতায়; তাহলে ভবিষ্যতে কী হবে ভাবুন তো? দাম্পত্য কলহ দেখে যারা বড় হয়, তারা জীবনে সঠিক লাইফ পার্টনার চুজ করতে কনফিউজড থাকে। এই মানসিক ট্রমার কারণে তারা বিবাহিত জীবনেও ইনসিকিউরিটিতে ভোগে। অনেকে অবশ্য ট্রাই করে বা স্ট্রাগল করে এই ট্রমা কাটিয়ে ওঠার।
বাবা-মায়ের করণীয় কী তাহলে?
১. একবার নিজেকে প্রশ্ন করুন তো, আপনার রাগ, ইগো সবকিছু কি আপনার সন্তানের চেয়ে বড়? যেকোনো কথা কাটাকাটিতে জড়ানোর আগে একবার ভেবে নিন এতে কি আপনার কোনো উপকার আছে ক্ষতি ছাড়া? বা আপনি তর্কে জিতে খুব খুশি হচ্ছেন, এদিকে আপনার সন্তান ভয় পাচ্ছে, অসহায় বোধ করছে; তাহলে আপনার এই সাময়িক জিতে যাওয়াতে কার লাভ হলো?
২. সবসময় চেষ্টা করবেন উত্তেজিত না হয়ে আস্তে কথা বলে সমস্যার সমাধান করতে। বাচ্চার সামনে কোনোভাবেই তর্কে জড়াবেন না। বরং ঐ জায়গা থেকে সরে যাওয়া, চিন্তা ভাবনা করে পরে কথা বলাই বেস্ট ডিসিশন। মনে রাখবেন, বাচ্চাকে যা শিখাবেন, সে তাই শিখবে। আপনি ভালো কথা, ভালো কাজ করলে বাচ্চাও তাই শিখবে। আপনি রুডলি কথাবার্তা বলতে থাকলে সে সেটাই মনে রাখবে।
৩. সন্তানের পড়াশোনা থেকে শুরু করে সবকিছুর দায়িত্ব একজনের উপর না দিয়ে দায়িত্ব বন্টন করুন। সন্তানের সাথে সময় কাটানো খুব জরুরি। তার মনের কথা, সে কী ভাবছে, কী জানাতে চাচ্ছে, সব কিছু খেলা বা গল্পের ছলে জেনে নিন। বাইরে ঘুরতে যাওয়া বা একসাথে সময় কাটানো শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে সাহায্য করে।
৪. পারিবারিক কলহকে কেন্দ্র করে বাচ্চাকে কখনোই যেকোনো একজনের পক্ষ নিতে বাধ্য করবেন না। বা তার কাছে একজন আরেকজনের খারাপ দিক তুলে ধরবেন না। সন্তানকে পজেটিভ থাকতে সাহায্য করুন। বাবা-মা সম্পর্ককে ইতিবাচক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করুন।
এর সমাধান কী তাহলে?
বাবা-মায়ের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সন্তানকে নিরাপত্তাবোধ দেয়। নিজেদের কিছু ভুলের জন্য আপনার সন্তানের সুন্দর শৈশব যেন ট্রমা না হয়ে যায়! স্বামী স্ত্রী একে অপরকে সম্মান করুন এবং সন্তানের নিরাপদ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করুন। আজ এই পর্যন্ত-ই, ভালো থাকুন এবং অন্যকেও ভালো রাখুন।
জেএইচ
পরামর্শ
মুখে ঘা দূর করতে মেনে চলুন ৫ উপায়
খাওয়া দাওয়ার সময় বা কথা বলার সময়ে মুখে ঘা হলে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। এই সমস্যা দীর্ঘদিন সহ্য না করাই উত্তম। এই সমস্যা কিন্তু একসময় মুখে আলসারেরও লক্ষণ হতে পারে। মুখের আলসারকে সামান্য ঘা ভেবে অবহেলা করলেই বিপদে পড়বেন। কোষ্ঠকাঠিন্য, হরমোন জনিত সমস্যার কারণে মুখের ভিতরে আলসার হতে পারে। অনেকে আবার ব্রেসেস পড়েন, তাঁদেরও মাঝেমাঝে এই সমস্যা হয়। শরীরে ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি, আয়রন, জিঙ্ক, ফোলেটের ঘাটতির কারণেও মুখের ঘা থেকে আলসার হতে পারে।
মুখে ঘা হলে কিছুদিনের জন্য ঝাল, টক জাতীয় খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। না হলে মুখে জ্বালা অনুভূত হবে। মুখে ঘা হলে মুক্তি পেতে পারেন ৫ উপায়ে ।
১) মুখের ঘা কমাতে হালকা গরম পানিতে সামান্য লবন মিশিয়ে কুলকুচি করুন। এতে আরাম পাবেন। দিনে তিন থেকে চার বার করলে ব্যথা ও ঘা দুটোই কমে আসবে।
২) ঘায়ের জায়গায় সামান্য মধু লাগিয়ে রাখতে পারেন, ভালো উপকার পাবেন। কয়েক ঘণ্টা অন্তর অন্তর মধু লাগালে সুফল পাবেন।
৩) ঘায়ের জায়গায় বিশুদ্ধ নারিকেল তেল লাগিয়ে রাখলেও বেশ আরাম পাবেন।
৪) যে কোনও ঘায়ের জন্য ভালো প্রাকৃতিক ঔষধ হতে পারে হলুদ। মুখে যে জায়গায় ঘা হয়েছে, সেই স্থানে হলুদ বাটা লাগিয়ে রাখতে পারেন। কিছু দিন ব্যবহার করলেই ঘায়ের তীব্র জ্বালা-যন্ত্রণা কমে আসবে।
৫) বেকিং সোডা ঘা সারাতে দারুণ উপকারী একটি জিনিস। এক কাপ পানিতে এক চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে কুলকুচি করলে ঘা কমে যাবে। এছাড়া বেকিং সোডার সঙ্গে সামান্য পানি মিশিয়ে একটা ঘন পেস্ট তৈরি করে নিতে পারেন। সেই পেস্ট ক্ষতস্থানে লাগিয়ে রাখলেও বেশ উপকার পেতে পারেন।
জেডএস/
পরামর্শ
হাড়ের বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য শিশুর খাদ্যতালিকায় যা রাখবেন
সন্তানের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তায় থাকেন সব বাবা-মাই। শিশু কী খাবে, কতটা খাবে আর কখন খাবে- এই নিয়ে ভাবনাচিন্তা নিয়ে তারা সারাক্ষণ অস্থির। শিশু রোজ যা যা খাচ্ছে, তার থেকে শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি পৌঁছচ্ছে কি না এটি জানাও খুব জরুরি। বাড়ন্ত শিশুকে হাড়ের পুষ্টি ও বৃদ্ধির জন্য সুষম আহারই দিতে হবে। আর বিশেষ করে শিশুর খাদ্যতালিকায় রোজ ক্যালশিয়াম রাখতেই হবে। রোজ কোন কোন খাবার তালিকায় রাখলে শিশুর ক্যালশিয়ামের অভাব হবে না, তা জেনে নিন।
দুধ : সুষম আহারের মধ্যে প্রথমেই বলতে হয় দুধের কথা। এই বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দীপিকা সুর জানাচ্ছেন, দুধের মধ্যে থাকা ক্যালশিয়াম হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায়। শিশুকে রোজ নিয়ম করে দুধ খাওয়ানো উচিত। তবে যদি দুধে অ্যালার্জি থাকে বা দুধ হজম না হয়, তা হলে পনির, দই, ছানা, মাখন এ সব রাখুন তার খাদ্যতালিকায়।
মটরশুঁটি : মটরশুঁটির দানায় আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম। যা তার হাড়ের পুষ্টিতে বিশেষ সহায়ক। সাধারণত, শীতের সব্জি এটি, তাই শীতেই তার খাবারে মটরশুঁটি রাখতে হবে। ব্রোকোলিও তাই। অনেক শিশুই ব্রোকোলি খেতে চায় না। সে ক্ষেত্রে ব্রোকোলি দিয়ে স্যুপ বানিয়ে দিন। কয়েক টুকরো চিকেন সিদ্ধ দিয়ে দিন তাতে। অল্প করে মাখন দিয়ে গরম স্যুপ, সোনামুখ করে খেয়ে নেবে খুদে।
পিনাট বাটার : পিনাট বাটারেও প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম আছে। খেতে ততটা সুস্বাদু নয় বলে হয়তো শিশু খেতে চাইবে না। মায়েরা সে ক্ষেত্রে পাউরুটির মুচমুচে টোস্ট বানিয়ে তার মধ্যে পিনাট বাটার দিয়ে দিন। গরম আটার রুটি রোল করে ভেতরে পিনাট বাটার দিয়ে শিশুকে প্রাতরাশে দিন। সঙ্গে দিন ফ্রুট স্যালাড। ফল ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নুন ও গোলমরিচ দিয়ে দিন। ফল এমন ভাবে সাজিয়ে দিন যে দেখেই খেতে চাইবে শিশু।
আমন্ড বাটার : বাড়িতে আমন্ড বাটারও এনে রাখতে পারেন। সাদা মাখন না দিয়ে পাউরুটিতে আমন্ড বাটার মাখিয়ে দিন। আমন্ড বা কাঠবাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর ক্যালশিয়াম। ১/৩ কাপ কাঠবাদামে প্রায় ২৬৪ মিলিগ্রাম মতো ক্যালশিয়াম মেলে। সন্তানকে দুধের সঙ্গেও দিন কয়েক টুকরো কাঠবাদাম। দুধ-কর্নফ্লেক্স খেলে উপরে ছড়িয়ে দিতে পারেন।
মাছ : মাছে প্রচুর ক্যালশিয়াম আছে। শিশুর হাড়ের বৃদ্ধির দিকে বিশেষ নজর দিতে হলে তার খাদ্যতালিকায় অবশ্যই রাখুন মাছ। কাতলা, ভেটকি, কই মাছে ভাল পরিমাণে ক্যালশিয়াম থাকে। ১০০ গ্রাম কাতলা মাছ খেলে ৫৩০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম পাওয়া যাবে, ১০০ গ্রাম ভেটকিতে প্রায় ৪৮০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম থাকে। ৫০ গ্রাম করে, অর্থাৎ দিনে দু’পিস মাছও যদি খুদে খায়, তা হলেও রোজের ক্যালশিয়ামের অনেকটাই পূরণ হবে।
ফলের রস : টাটকা ফলের রসও দিন শিশুকে। এক গ্লাস কমলালেবু বা মুসম্বির রস থেকে ৬০ মিলিগ্রামের মতো ক্যালশিয়াম পাওয়া যাবে। প্রাতরাশে যে দিন দুধ দেবেন না, সে দিন ফলের রস দিন। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খাবার দিলে শিশুর অরুচি হবে না। মনে রাখতে হবে, শিশুকে একদম চা-কফি বা নরম পানীয় দেওয়া চলবে না। কারণ ক্যাফিন ক্যালশিয়াম শোষণে বাধা দেয়। তখন যতই পুষ্টিকর খাবার খাওয়ান না কেন, তাতে লাভের লাভ কিছুই হবে না। বেশি লবণ দেয়া খাবার, বেশি তেল ও মশলা দেওয়া খাবার শিশুকে দেয়া চলবে না।
জেএইচ
পরামর্শ
কিডনিতে পাথর হওয়ার বেশি ঝুঁকিতে কারা?
অফিসে সারাদিন বসে যারা কাজ করেন, তাদের বিপত্তি বেশি। একেই সারাক্ষণ বসে থেকে পেট-কোমরের মেদ বাড়ে। তার উপরে শরীরচর্চার অভ্যাস নেই, পানি কম খাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে শরীরে নানাবিধ রোগ বাসা বাঁধতে থাকে কম বয়স থেকেই। চিকিৎসকেরা বলেন, কিডনিতে পাথর হওয়ার অন্যতম বড় কারণ হল পানি কম খাওয়া। তা ছাড়া স্থূলত্ব, বিশেষ কিছু ওষুধ বা সাপ্লিমেন্ট খাওয়া, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলেও কিডনিতে পাথর জমতে পারে। এখন জেনে নিন, এ ক্ষেত্রে কাদের ঝুঁকি বেশি।
কিডনি শুধু শরীর থেকে রেচন পদার্থই বার করে না, তার ভূমিকা আরও বেশি। যেমন— রক্তে সোডিয়াম, পটাশিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে কিডনি। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতেও এর ভূমিকা আছে। তা ছাড়া, শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, রক্তকণিকা উৎপাদনে সাহায্য করা, হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখা। কিডনিতে পাথর জমলে ভয়ের খুব বেশি কারণ না হলেও দ্রুত সেই পাথর শরীর থেকে বার না হলে সমস্যা বাড়তে পারে।
ঝুঁকিতে কারা?
১) দিনে আড়াই থেকে তিন লিটার পানি খেতে হবে।
২) বেশি প্রাণিজ প্রোটিন যারা খাচ্ছেন, তাদেরও ঝুঁকি বেশি। খুব বেশি তেলমশলা দিয়ে কষিয়ে মাংস বা মাছ, ডিম প্রায় রোজ খেতে শুরু করলে তখন বিপদ বাড়বে। এমনকি, বাইরের খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খেলে কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকি বাড়বে।
৩) অতিরিক্ত উদ্বেগ, মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা থেকে ভ্যাসোপ্রেসিন নামে এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয়, যা মূত্রের ঘনত্ব বাড়িয়ে দেয়। ফলে কিডনিতে পাথর জমতে পারে।
৪) বাতের সমস্যা থাকলেও ঝুঁকি বাড়তে পারে বলে দেখা গিয়েছে কিছু ক্ষেত্রে।
৫) রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে, খনিজ উপাদানগুলির ভারসাম্য বিগড়ে গেলে ঝুঁকি বাড়বে।
৬) খাদ্যে লবণ তথা সোডিয়ামের মাত্রা কমিয়ে প্রস্রাবে ক্যালসিয়াম নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
৭) বেশি মাত্রায় মদ্যপানও ঝুঁকি বাড়াতে পারে। নরম পানীয়, বেশি মিষ্টি দেয়া প্যাকেটজাত পানীয় বেশি খাওয়াও বিপদের কারণ হতে পারে।
কেএস/