পরামর্শ
নতুন সংসার ও পরিবারের সাথে মানিয়ে নেবেন যেভাবে
নিজের পছন্দের মানুষটিকে বিয়ে করতে পারা একটা স্বপ্নের মত। কিন্তু অনেকেই ভয়ে ভয়ে থাকেন শ্বশুর বাড়ি নিয়ে। কেমন হবে, কি করে মানিয়ে নেবেন। অনেকে এই ভয়ে আবার বিয়ের পরে শ্বশুর-শাশুড়ি ছেড়ে স্বামী নিয়ে আলাদা হয়ে যেতে চান। দেখুন যে মানুষটিকে ভালোবাসেন তার পরিবারকে ইগনোর করা কোন স্থায়ী সমাধান নয়, বরং পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে সুন্দর এবং মজবুত সম্পর্ক গড়ে তোলাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। নতুন সংসার ও পরিবারে মানিয়ে নেয়ার জন্য আপনাকে খুব বেশি কিছু করতে হবে না। ছোটখাটো কিছু জিনিস লক্ষ্য করলেই খুব সহজেই মানিয়ে নিতে পারবেন নতুন সংসারে। তাই আজকে আমরা আপনাদের জানাবো নতুন সংসার এবং নতুন পরিবারের সাথে মানিয়ে নেয়ার কিছু কার্যকরী পদ্ধতি।
নতুন সংসার ও পরিবারের সাথে মানিয়ে নিতে হলে আপনাকে কিছু স্টেপস ফলো করতে হবে। সেগুলো হল-
১. নতুন পরিবারকে নিজের করে নিন
আপনাকে আগে এটা বুঝতে হবে যে এটা আপনার সবচেয়ে প্রিয় মানুষ, আপনার জীবন সঙ্গীর পরিবার। আর তার পরিবার মানেই সেটি আপনার পরিবার, আপনার সংসার একে সাজিয়ে নিন আপনার মতো করে!
যখন এই কনসেপ্ট-টা কারও মাথায় ঢুকে যায় যে এটা আমার পরিবার নয়, অন্য পরিবার, এখানে আমি হুট করেই এসেছি, আমার পরিবারতো আমি ফেলে এসেছি, তখনি শ্বশুরবাড়ির সকলকে প্রতিপক্ষ বলে মনে হতে থাকে। নতুন সংসার ও পরিবারকে আপন করে নিতে হবে।
মনে রাখা দরকার, শ্বশুরবাড়ি কখনই আপনার প্রতিপক্ষ নয়। তাদেরকে নিজের পরিবারের একটা নতুন সংযোজন বলে ভাবুন, দেখবেন যে তা তখন এত অপরিচিত মনে হবে না। আপনার স্বামী এই পরিবারেই বড় হয়েছেন এবং পৃথিবীর সবকিছুর চেয়ে এই পরিবারকে তিনি বেশি ভালবাসেন। আর তার ভালবাসার মানুষরা তো আপনারও ভালবাসার মানুষ।
২. ইগো
ইগো পরিহার করুন। সম্পর্কে তিক্ততা আসার পেছনে সবচেয়ে বেশি ভুমিকা রাখে আমাদের ইগো। সবসময় বিনীত থাকুন, ইগোকে দূরে সরিয়ে রাখুন। যেকোনো খালি স্পেস ভালোবাসা দিয়ে পূরণ করা সম্ভব, সময় লাগতে পারে, কিন্তু অসম্ভব নয়। নতুন সংসার সুন্দর করে গরে তুলতে আপনার ইগোকে পরিহার করতে হবে।
৩. তুলনা করবেন না
তুলনা করা যাবে না। ভুলেও কখনো শ্বশুরবাড়ি আর বাবার বাড়ির তুলনা করতে যাবেন না। দুটো পরিবার দুটো ভিন্ন পরিবেশ, এর মধ্যে কখনো তুলনা হয় না। তুলনা করতে গেলে হয়ত এমনও হতে পারে, যে জিনিস আপনি বাবার বাড়িতে পান নি সেটা হয়তো শ্বশুরবাড়িতে এসে পাচ্ছেন। তখন কি বলবেন, যে আগে বাবার বাড়ি ভালো ছিল না? নিশ্চয়ই না? প্রতিটি পরিবারের নিজস্ব কিছু নিয়ম কানুন আছে, ধারা আছে। এগুলোকে সম্মান করুন। এর সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হয়তো একটু সময় লাগবে, কিন্তু “পারবেন না” বা “করব না” এমন মনোভাব থাকলে কিন্তু অশান্তি বাড়বে।
৪. পরিবারটিকে জানার চেষ্টা করুন
নতুন পরিবারকে ভালোভাবে জানার চেষ্টা করুন। এক্ষেত্রে আপনার স্বামী হতে পারেন, আপনার সবচেয়ে বড় সহযোগী। তার কাছ থেকে পরিবারের সকলের সম্পর্কে জানুন। আত্মীয়-স্বজনদের চিনুন। তাদের সাথে নিজে থেকে গিয়ে আলাপ করুন। অনেক সময় বাড়ির নতুন বউকে নিয়ে একটু আধটু মজা করা হয়, সেটাকে প্রথমেই নেগেটিভ-ভাবে নেবেন না। একটা বিয়ের পরে বাড়িতে একটা উৎসবের পরিবেশ থাকে, তখন এ ধরনের হাসি ঠাট্টা চলতেই থাকে। কোন বিষয়ে অস্বস্তিবোধ করলে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না।
৫. বাচ্চাদের প্রাধান্য দিন
বাড়ির বাচ্চাদের সাথে মিশুন সবার আগে। বড়দের চাইতে বাচ্চাদের সাথে বন্ধুত্ব করা অনেক বেশি সহজ। বাড়িতে বাচ্চা থাকলে তাদের গল্প বলুন, তাদের পছন্দের খাবার তৈরি করে দিন, বা ছবি আঁকায় সাহায্য করুন। অথবা তাদের পড়াশনার ব্যাপারে সাহায্য করুন। এতে করে বাচ্চাদের সাথে আপনার একটা সহজ সম্পর্ক তৈরি হবে, পাশাপাশি বাড়ির বড়রাও আপনার ব্যাপারে ভালো একটা মনোভাব পোষণ করবেন।
৬ বড়দের সম্মান করুন
বাড়ির বড়দের সম্মান করুন। কথা বলার সময়, খাওয়ার সময় বা যদি আপনি চুপচাপ বসে থাকেন তখনও। বাড়ির বড়দের সামনে মোবাইল ফোন চাপাচাপি করা একেবারে নিষেধ। এটা খুবই বেয়াদবি। খাবার টেবিলে বসলে অন্যদের সাথে পারিবারিক আলোচনা শুনুন, তবে শুরুতেই নিজের মতামত দিতে যাবেন না। পুরো বিষয়টা আগে বুঝুন, তারপরেই মতামত দেবেন। অবসরে শাশুড়ি বা শ্বশুরের সাথে তাদের পুরনো দিনের গল্প শুনুন, যদি মনে করেন সেটাতে তারা আনন্দ পাচ্ছেন, তাহলে সে ব্যাপারে আপনিও উৎসাহ দেখান। শ্বাশুড়িকে মায়ের স্থানে বসান। বউ-শ্বাশুড়ি সম্পর্ক করে তুলুন মধুর…
৭ পরিবারের কাজে সাহায্য করা
নতুন বাড়িতে এসেই কেউ আপনাকে পুরো বাড়ির রান্নার দায়িত্ব দেবে না। তাই আপনারই উচিত হবে ছোট ছোট বিষয়ে তাদের সাহায্য করা। রান্নার ব্যাপারেই হোক বা ঘর গোছানোর ক্ষেত্রেই হোক, নিজে থেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন।তবে একটু সতর্কতা হিসেবে যেকোনো কাজের আগে সেটা শাশুড়ি বা ননদকে জিজ্ঞেস করে নিন, যে কাজটা তারা কিভাবে করেন? এটাতে ছোট হওয়ার কিছু নেই। প্রতিটি বাড়িতেই সব কাজের কিছু আলাদা নিয়ম কানুন থাকে। সেগুলো জেনে নিন, দেখবেন আর কোন সমস্যাই হচ্ছে না। নিজের লাইফপার্টনারের সাথে ছোটখাটো কাজগুলো শেয়ার করলেও বন্ডিং ভালো হয়। এই বিষয়টাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
৮. নিয়মিত যোগাযোগ রাখা
নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন। যদি আপনার শ্বশুর-শাশুড়ি বা দেবর-ননদ আপনাদের সাথে না থাকেন, তাহলে প্রতিদিন একবার আপনার শ্বশুর-শাশুড়িকে ফোন করুন, তাদের দিন কেমন কেটেছে জিজ্ঞেস করুন, আপনি সারাদিন কী কী করলেন সেগুলো তাদের বলুন। এতে করে সম্পর্ক অল্পদিনেই সহজ হয়ে যাবে। এছাড়া অন্য সদস্য যেমন দেবর-ননদ তাদের সাথে সপ্তাহে অন্তত দু-তিন বার যোগাযোগ করুন। এতে সম্পর্ক ভালো থাকবে। মজবুত হবে। ননদ-ভাবী সম্পর্ক যেন হয় বোনেদের মত…
৯. সঙ্গীর প্রশংসা
সম্পর্কের শুরু সবে…আপনার সঙ্গীর প্রশংসা করুন। দেখুন ভালো দিক, বিরক্তিকর দিক সবারই আছে, আপনার ও আমারও আছে। এখন আপনার সঙ্গীর পরিবারের সদস্যরা কিন্তু আগে থেকেই এসব জানেন। তাদের কাছে নতুন করে এগুলো নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করা বা কমপ্লেইন করা ঠিক হবে না। তাদের সামনে বরং আপনার সঙ্গীর প্রশংসা করুন। এতে তারাও খুশি হবেন। আপনার দাম্পত্য সম্পর্ক হোক মধুর চেয়েও মিষ্টি।
১০. সরাসরি কথা বলা
সরাসরি কথা বলুন। কোন সদস্যের সাথে কোন কিছু নিয়ে সমস্যা হলে সেটা আগে ভালোভাবে বুঝুন, আদৌ সেটা সিরিয়াস কিনা, যদি মনে করেন সিরিয়াস তাহলে সরাসরি কথা বলুন, তবে সেটা যেন হয় বিনয়ের সাথে, শাশুড়ির সাথে সমস্যা হল, সঙ্গে সঙ্গে মাকে ফোন করে ডেকে এনে তাকে দিয়ে বলানোর চেয়ে আগে নিজে চেষ্টা করুন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিজের চেষ্টাতেই সবচেয়ে ভালো সমাধান আসে। এগুল-ই সুখী দাম্পত্য জীবনের সহজ রহস্য।
সব শেষে বলবো, বিয়ের পরে নতুন মানুষ, নতুন সংসার একটু আধটু অসামঞ্জস্য থাকবেই। সেগুলো নেগেটিভ-ভাবে না নিয়ে, তাদের বোঝার চেষ্টা করুন।
জেএইচ
পরামর্শ
মুখে ঘা দূর করতে মেনে চলুন ৫ উপায়
খাওয়া দাওয়ার সময় বা কথা বলার সময়ে মুখে ঘা হলে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। এই সমস্যা দীর্ঘদিন সহ্য না করাই উত্তম। এই সমস্যা কিন্তু একসময় মুখে আলসারেরও লক্ষণ হতে পারে। মুখের আলসারকে সামান্য ঘা ভেবে অবহেলা করলেই বিপদে পড়বেন। কোষ্ঠকাঠিন্য, হরমোন জনিত সমস্যার কারণে মুখের ভিতরে আলসার হতে পারে। অনেকে আবার ব্রেসেস পড়েন, তাঁদেরও মাঝেমাঝে এই সমস্যা হয়। শরীরে ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি, আয়রন, জিঙ্ক, ফোলেটের ঘাটতির কারণেও মুখের ঘা থেকে আলসার হতে পারে।
মুখে ঘা হলে কিছুদিনের জন্য ঝাল, টক জাতীয় খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। না হলে মুখে জ্বালা অনুভূত হবে। মুখে ঘা হলে মুক্তি পেতে পারেন ৫ উপায়ে ।
১) মুখের ঘা কমাতে হালকা গরম পানিতে সামান্য লবন মিশিয়ে কুলকুচি করুন। এতে আরাম পাবেন। দিনে তিন থেকে চার বার করলে ব্যথা ও ঘা দুটোই কমে আসবে।
২) ঘায়ের জায়গায় সামান্য মধু লাগিয়ে রাখতে পারেন, ভালো উপকার পাবেন। কয়েক ঘণ্টা অন্তর অন্তর মধু লাগালে সুফল পাবেন।
৩) ঘায়ের জায়গায় বিশুদ্ধ নারিকেল তেল লাগিয়ে রাখলেও বেশ আরাম পাবেন।
৪) যে কোনও ঘায়ের জন্য ভালো প্রাকৃতিক ঔষধ হতে পারে হলুদ। মুখে যে জায়গায় ঘা হয়েছে, সেই স্থানে হলুদ বাটা লাগিয়ে রাখতে পারেন। কিছু দিন ব্যবহার করলেই ঘায়ের তীব্র জ্বালা-যন্ত্রণা কমে আসবে।
৫) বেকিং সোডা ঘা সারাতে দারুণ উপকারী একটি জিনিস। এক কাপ পানিতে এক চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে কুলকুচি করলে ঘা কমে যাবে। এছাড়া বেকিং সোডার সঙ্গে সামান্য পানি মিশিয়ে একটা ঘন পেস্ট তৈরি করে নিতে পারেন। সেই পেস্ট ক্ষতস্থানে লাগিয়ে রাখলেও বেশ উপকার পেতে পারেন।
জেডএস/
পরামর্শ
হাড়ের বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য শিশুর খাদ্যতালিকায় যা রাখবেন
সন্তানের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তায় থাকেন সব বাবা-মাই। শিশু কী খাবে, কতটা খাবে আর কখন খাবে- এই নিয়ে ভাবনাচিন্তা নিয়ে তারা সারাক্ষণ অস্থির। শিশু রোজ যা যা খাচ্ছে, তার থেকে শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি পৌঁছচ্ছে কি না এটি জানাও খুব জরুরি। বাড়ন্ত শিশুকে হাড়ের পুষ্টি ও বৃদ্ধির জন্য সুষম আহারই দিতে হবে। আর বিশেষ করে শিশুর খাদ্যতালিকায় রোজ ক্যালশিয়াম রাখতেই হবে। রোজ কোন কোন খাবার তালিকায় রাখলে শিশুর ক্যালশিয়ামের অভাব হবে না, তা জেনে নিন।
দুধ : সুষম আহারের মধ্যে প্রথমেই বলতে হয় দুধের কথা। এই বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দীপিকা সুর জানাচ্ছেন, দুধের মধ্যে থাকা ক্যালশিয়াম হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায়। শিশুকে রোজ নিয়ম করে দুধ খাওয়ানো উচিত। তবে যদি দুধে অ্যালার্জি থাকে বা দুধ হজম না হয়, তা হলে পনির, দই, ছানা, মাখন এ সব রাখুন তার খাদ্যতালিকায়।
মটরশুঁটি : মটরশুঁটির দানায় আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম। যা তার হাড়ের পুষ্টিতে বিশেষ সহায়ক। সাধারণত, শীতের সব্জি এটি, তাই শীতেই তার খাবারে মটরশুঁটি রাখতে হবে। ব্রোকোলিও তাই। অনেক শিশুই ব্রোকোলি খেতে চায় না। সে ক্ষেত্রে ব্রোকোলি দিয়ে স্যুপ বানিয়ে দিন। কয়েক টুকরো চিকেন সিদ্ধ দিয়ে দিন তাতে। অল্প করে মাখন দিয়ে গরম স্যুপ, সোনামুখ করে খেয়ে নেবে খুদে।
পিনাট বাটার : পিনাট বাটারেও প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম আছে। খেতে ততটা সুস্বাদু নয় বলে হয়তো শিশু খেতে চাইবে না। মায়েরা সে ক্ষেত্রে পাউরুটির মুচমুচে টোস্ট বানিয়ে তার মধ্যে পিনাট বাটার দিয়ে দিন। গরম আটার রুটি রোল করে ভেতরে পিনাট বাটার দিয়ে শিশুকে প্রাতরাশে দিন। সঙ্গে দিন ফ্রুট স্যালাড। ফল ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নুন ও গোলমরিচ দিয়ে দিন। ফল এমন ভাবে সাজিয়ে দিন যে দেখেই খেতে চাইবে শিশু।
আমন্ড বাটার : বাড়িতে আমন্ড বাটারও এনে রাখতে পারেন। সাদা মাখন না দিয়ে পাউরুটিতে আমন্ড বাটার মাখিয়ে দিন। আমন্ড বা কাঠবাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর ক্যালশিয়াম। ১/৩ কাপ কাঠবাদামে প্রায় ২৬৪ মিলিগ্রাম মতো ক্যালশিয়াম মেলে। সন্তানকে দুধের সঙ্গেও দিন কয়েক টুকরো কাঠবাদাম। দুধ-কর্নফ্লেক্স খেলে উপরে ছড়িয়ে দিতে পারেন।
মাছ : মাছে প্রচুর ক্যালশিয়াম আছে। শিশুর হাড়ের বৃদ্ধির দিকে বিশেষ নজর দিতে হলে তার খাদ্যতালিকায় অবশ্যই রাখুন মাছ। কাতলা, ভেটকি, কই মাছে ভাল পরিমাণে ক্যালশিয়াম থাকে। ১০০ গ্রাম কাতলা মাছ খেলে ৫৩০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম পাওয়া যাবে, ১০০ গ্রাম ভেটকিতে প্রায় ৪৮০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম থাকে। ৫০ গ্রাম করে, অর্থাৎ দিনে দু’পিস মাছও যদি খুদে খায়, তা হলেও রোজের ক্যালশিয়ামের অনেকটাই পূরণ হবে।
ফলের রস : টাটকা ফলের রসও দিন শিশুকে। এক গ্লাস কমলালেবু বা মুসম্বির রস থেকে ৬০ মিলিগ্রামের মতো ক্যালশিয়াম পাওয়া যাবে। প্রাতরাশে যে দিন দুধ দেবেন না, সে দিন ফলের রস দিন। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খাবার দিলে শিশুর অরুচি হবে না। মনে রাখতে হবে, শিশুকে একদম চা-কফি বা নরম পানীয় দেওয়া চলবে না। কারণ ক্যাফিন ক্যালশিয়াম শোষণে বাধা দেয়। তখন যতই পুষ্টিকর খাবার খাওয়ান না কেন, তাতে লাভের লাভ কিছুই হবে না। বেশি লবণ দেয়া খাবার, বেশি তেল ও মশলা দেওয়া খাবার শিশুকে দেয়া চলবে না।
জেএইচ
পরামর্শ
কিডনিতে পাথর হওয়ার বেশি ঝুঁকিতে কারা?
অফিসে সারাদিন বসে যারা কাজ করেন, তাদের বিপত্তি বেশি। একেই সারাক্ষণ বসে থেকে পেট-কোমরের মেদ বাড়ে। তার উপরে শরীরচর্চার অভ্যাস নেই, পানি কম খাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে শরীরে নানাবিধ রোগ বাসা বাঁধতে থাকে কম বয়স থেকেই। চিকিৎসকেরা বলেন, কিডনিতে পাথর হওয়ার অন্যতম বড় কারণ হল পানি কম খাওয়া। তা ছাড়া স্থূলত্ব, বিশেষ কিছু ওষুধ বা সাপ্লিমেন্ট খাওয়া, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলেও কিডনিতে পাথর জমতে পারে। এখন জেনে নিন, এ ক্ষেত্রে কাদের ঝুঁকি বেশি।
কিডনি শুধু শরীর থেকে রেচন পদার্থই বার করে না, তার ভূমিকা আরও বেশি। যেমন— রক্তে সোডিয়াম, পটাশিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে কিডনি। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতেও এর ভূমিকা আছে। তা ছাড়া, শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, রক্তকণিকা উৎপাদনে সাহায্য করা, হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখা। কিডনিতে পাথর জমলে ভয়ের খুব বেশি কারণ না হলেও দ্রুত সেই পাথর শরীর থেকে বার না হলে সমস্যা বাড়তে পারে।
ঝুঁকিতে কারা?
১) দিনে আড়াই থেকে তিন লিটার পানি খেতে হবে।
২) বেশি প্রাণিজ প্রোটিন যারা খাচ্ছেন, তাদেরও ঝুঁকি বেশি। খুব বেশি তেলমশলা দিয়ে কষিয়ে মাংস বা মাছ, ডিম প্রায় রোজ খেতে শুরু করলে তখন বিপদ বাড়বে। এমনকি, বাইরের খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খেলে কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকি বাড়বে।
৩) অতিরিক্ত উদ্বেগ, মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা থেকে ভ্যাসোপ্রেসিন নামে এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয়, যা মূত্রের ঘনত্ব বাড়িয়ে দেয়। ফলে কিডনিতে পাথর জমতে পারে।
৪) বাতের সমস্যা থাকলেও ঝুঁকি বাড়তে পারে বলে দেখা গিয়েছে কিছু ক্ষেত্রে।
৫) রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে, খনিজ উপাদানগুলির ভারসাম্য বিগড়ে গেলে ঝুঁকি বাড়বে।
৬) খাদ্যে লবণ তথা সোডিয়ামের মাত্রা কমিয়ে প্রস্রাবে ক্যালসিয়াম নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
৭) বেশি মাত্রায় মদ্যপানও ঝুঁকি বাড়াতে পারে। নরম পানীয়, বেশি মিষ্টি দেয়া প্যাকেটজাত পানীয় বেশি খাওয়াও বিপদের কারণ হতে পারে।
কেএস/