লাইফস্টাইল
বর্ষাকালে গাছ ভালো রাখার ৯টি উপায়
জায়গার যথেষ্ট অভাব থাকার কারণে নগরের বাসিন্দারা ছোটখাটো পরিসরে বারান্দায়, কেউবা ছাদে গাছ লাগিয়ে থাকেন। তবে বিভিন্ন ঝামেলা এড়াতে অধিকাংশ মানুষকে বারান্দায় গাছ লাগাতে দেখা যায়। তবে যখন অতিরিক্ত বৃষ্টিতে ভিজে গাছগুলো মরে যায়, এলোমেলো ও কাদা কাদা হয়ে থাকে, পোকামাকড় বা পিঁপড়ায় একাকার হয়ে যায়। তবে উইকেন্ডে টুকটাক যত্ন আর টিপস মেনে চললে আপনার বারান্দায় থাকা গাছগুলো বেশ সতেজ থাকবে এবং সহজে মরে যাবে না। চলুন জেনে নেয়া যাক এই বর্ষাকালে গাছ ভালো রাখতে কীভাবে পরিচর্যা করবেন।
বর্ষাকালে গাছের যত্ন
বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় বর্ষায় গাছের যত্ন নেয়ার ধরন কিছুটা আলাদা। এ সময় কীভাবে গাছের পরিচর্যা করবেন চলুন জেনে নেয়া যাক।
১) অতিরিক্ত পানি না দেয়া
বৃষ্টির পানিতে থাকা পটাসিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সালফেট ও নাইট্রেট আয়রন গাছের জন্য খুবই উপকারী। তাই আলাদা করে এই সময়ে পানি না দেয়াই ভালো। এতে গাছের গোড়া পঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিছু গাছের আবার পানির প্রয়োজন বেশি। সেক্ষেত্রে খেয়াল করুন আপনার বারান্দার কোথায় বেশি পানি আসে আর কোথায় কম। সেটা বুঝে গাছগুলো সেভাবে সেট করুন। এতে গাছ প্রয়োজন অনুযায়ী পানি পাবে।
তবে ক্যাকটাস বা সাকুলেন্টের ক্ষেত্রে আবার উল্টো। বর্ষার দিনে এগুলো বাসার ভিতরে বা বারান্দায় যদি শেলফ রাখেন, তাহলে এমন জায়গায় তুলে রাখবেন যেন পানি না পড়ে। কারণ মরুভূমির গাছ হওয়াতে অতিরিক্ত পানি পড়লেই এগুলো মরে যায়।
২) পানি নিষ্কাশন
বারান্দায় গাছ রাখার আগে টবে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা আছে কিনা সে ব্যাপারে খেয়াল রাখা বেশ জরুরি। এখন তো সবাই টব কিনে নেন। সেগুলোতে আগে থেকেই ফুটো করা থাকে। যারা বাসায় থাকা প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে টব বানান, তাতে ছোট ছিদ্র রাখতে ভুলবেন না। আর বর্ষার এই সময় আপনার বারান্দা অবশ্যই ক্লিন করবেন। খেয়াল রাখবেন, বারান্দায় পানি বের হওয়ার যে ছিদ্র রাখা হয় তাতে যেন পাতা বা অন্য কিছু আটকে না যায়। এতে অনেক বৃষ্টি পড়লেও পানি তাড়াতাড়ি সরে যাবে। অনেক সময় এত বৃষ্টি হয় যে গাছের টব সরিয়ে আনতে হয়। সেক্ষেত্রে আপনি একটি ট্রান্সপারেন্ট পলি ব্যবহার করতে পারেন। যখনই বেশি বৃষ্টি হবে সেটি নামিয়ে নিলেন। তাছাড়া মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে পানি যেন না জমে সে ব্যাপারে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করবেন। খেয়াল রাখবেন, টবের নিচে রাখা ট্রেগুলোতে পানি যেন না জমে।
৩) টবে মাটি প্রয়োগ
গাছে প্রতিদিন পানি দেয়ার ফলে মাটির লেভেল নিচের দিকে নামতে থাকে। ফলে যখন বেশি বৃষ্টি হয়, তখন পানি এতটাই জমে যে ফেলতে গেলে পানির সাথে মাটিও ধুয়ে যায়। তাতে গাছ মরে যায়। তাই বর্ষা আসার আগে মাটির লেভেল বাড়িয়ে দিন। আর গাছের জন্য অবশ্যই ভালো মাটি নিবেন। এক্ষেত্রে এঁটেল মাটি বেশ ভালো, কারণ এই মাটির পানি শোষণের ক্ষমতা বেশি। নারিকেলের ছোবড়াও ভালো পানি শোষণ করে। এছাড়া মাটির উপরে আপনি ছোট নুড়িপাথর দিতে পারেন। এতে টব দেখতে সুন্দর লাগে, আবার পানিও বেশি শোষণ হয় না।
৪) সার প্রয়োগ
বৃষ্টির পানিতে থাকা প্রয়োজনীয় নিউট্রিয়েন্ট গাছের বৃদ্ধির জন্য সহায়ক। তাই আলাদা করে সারের প্রয়োজন হয় না। তবে অর্গানিক সার যেমন- চা পাতা, ডিমের খোসা, তরকারির খোসা এসব দিতে পারেন। যে ঋতুতেই গাছের যত্ন নেন না কেন, মাটি যখন ধরবেন হাতে গ্লাভস পরে নিবেন। কারণ পোকামাকড় বা কেঁচো থেকে হাতে ইনফেকশন হতে পারে। আর এই সিজনে গাছে নিড়ানি না দেয়াই ভালো। কারণ মাটি প্রায়ই ভেজা থাকে এবং গোড়াও নরম থাকে। এতে নিড়ানি দেয়ার সময় গাছ শিকড়সহ উঠে আসতে পারে।
৫) অর্গানিক উপাদানের ব্যবহার করা
বারান্দায় থাকা রঙবেরঙের গাছ যেমন মন ভালো করে দেয়, আবার বর্ষায় পোকামাকড় বিশেষ করে পিঁপড়াদের উপদ্রবও বেশ বাড়ে। দেখা যায়, বাসায় বেশি গাছ থাকলে পোকামাকড়ও বেড়ে যায়। অনেক সময় বিভিন্ন রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করেও এসবের উপদ্রব কমানো যায় না। তবে অর্গানিক উপাদান যেমন- কমলার খোসা, নিমের তেল, রসুন, হলুদ রেখে দিলে এ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। পাশাপাশি বেশি ঘন করে টব রাখবেন না। এতে পোকামাকড় বেশি আক্রমণ করে। তাই গাছের অবস্থা বুঝে সেই অনুযায়ী গাছে কীটনাশক প্রয়োগ করুন।
৬) ট্রিম করা
বর্ষার কিছু আগেই গাছগুলো ট্রিম করে নিন। এতে বর্ষায় গাছ বাড়বে এবং দ্রুত ফুলও আসবে। আর গাছ যদি ঠিক থাকে তাহলে তো সমস্যাই নেই। তবে পাশাপাশি গাছ বেশি থাকলে এবং একটার উপর অন্য গাছের পাতা থাকলে তা ছেঁটে দিন। এতে পোকামাকড়ের আনাগোনা কমে।
৭) চারকোল গুঁড়ার ব্যবহার
এই বর্ষায় গাছে আরেকটা সমস্যা দেখা যায়। সেটি হলো শ্যাওলা জমা। এটিও কিন্তু টবের মাটি থেকে খাদ্য রস শুষে নেয়, ফলসরূপ গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর সমাধান হচ্ছে, চারকোল গুঁড়া টবের মাটির উপরে দিয়ে দেয়া।
৮) খুঁটি দেয়া
বেশি বৃষ্টি এবং ঝড়ো বাতাসে নরম গাছগুলো হেলে পড়ে। তাই খুটিঁ দিয়ে বেঁধে রাখুন। এতে গাছ সঠিকভাবে বেড়ে উঠবে। হেলে পড়ে যাবে না।
৯) গাছে রোদ লাগানো
টানা অনেকদিন বৃষ্টির পরে আবার রোদ ওঠে। তখন গাছ যেন পর্যাপ্ত রোদ পায় তা খেয়াল রাখবেন। বেশিদিন ধরে গাছের গোড়া ভেজা থাকলে গাছ পঁচে যায়। রোদ উঠলে গাছের টবগুলো ছাদে নিতে পারেন অথবা বাসায় যেখানে রোদ বেশি পড়ে সেখানে রাখতে পারেন।
গাছে রোদ লাগানো
সুস্থ পরিবেশের জন্য গাছ যেমন উপকারী, তেমনই সারাদিনের অবসাদ কাটাতে বারান্দায় একটু সবুজের ছোঁয়া কিন্তু মন্দ নয়। তবে উপযুক্ত পরিচর্যার অভাবে আপনার কষ্টের গড়ে তোলা শখের বারান্দা কিন্তু নষ্ট হতে সময় নিবে না। তাই এই বর্ষায় গাছের যত্ন নিতে ভুলবেন না।
কেএস/
পরামর্শ
মুখে ঘা দূর করতে মেনে চলুন ৫ উপায়
খাওয়া দাওয়ার সময় বা কথা বলার সময়ে মুখে ঘা হলে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। এই সমস্যা দীর্ঘদিন সহ্য না করাই উত্তম। এই সমস্যা কিন্তু একসময় মুখে আলসারেরও লক্ষণ হতে পারে। মুখের আলসারকে সামান্য ঘা ভেবে অবহেলা করলেই বিপদে পড়বেন। কোষ্ঠকাঠিন্য, হরমোন জনিত সমস্যার কারণে মুখের ভিতরে আলসার হতে পারে। অনেকে আবার ব্রেসেস পড়েন, তাঁদেরও মাঝেমাঝে এই সমস্যা হয়। শরীরে ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি, আয়রন, জিঙ্ক, ফোলেটের ঘাটতির কারণেও মুখের ঘা থেকে আলসার হতে পারে।
মুখে ঘা হলে কিছুদিনের জন্য ঝাল, টক জাতীয় খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। না হলে মুখে জ্বালা অনুভূত হবে। মুখে ঘা হলে মুক্তি পেতে পারেন ৫ উপায়ে ।
১) মুখের ঘা কমাতে হালকা গরম পানিতে সামান্য লবন মিশিয়ে কুলকুচি করুন। এতে আরাম পাবেন। দিনে তিন থেকে চার বার করলে ব্যথা ও ঘা দুটোই কমে আসবে।
২) ঘায়ের জায়গায় সামান্য মধু লাগিয়ে রাখতে পারেন, ভালো উপকার পাবেন। কয়েক ঘণ্টা অন্তর অন্তর মধু লাগালে সুফল পাবেন।
৩) ঘায়ের জায়গায় বিশুদ্ধ নারিকেল তেল লাগিয়ে রাখলেও বেশ আরাম পাবেন।
৪) যে কোনও ঘায়ের জন্য ভালো প্রাকৃতিক ঔষধ হতে পারে হলুদ। মুখে যে জায়গায় ঘা হয়েছে, সেই স্থানে হলুদ বাটা লাগিয়ে রাখতে পারেন। কিছু দিন ব্যবহার করলেই ঘায়ের তীব্র জ্বালা-যন্ত্রণা কমে আসবে।
৫) বেকিং সোডা ঘা সারাতে দারুণ উপকারী একটি জিনিস। এক কাপ পানিতে এক চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে কুলকুচি করলে ঘা কমে যাবে। এছাড়া বেকিং সোডার সঙ্গে সামান্য পানি মিশিয়ে একটা ঘন পেস্ট তৈরি করে নিতে পারেন। সেই পেস্ট ক্ষতস্থানে লাগিয়ে রাখলেও বেশ উপকার পেতে পারেন।
জেডএস/
লাইফস্টাইল
জুতো-মোজার দুর্গন্ধ দূর হবে যেভাবে
এসে গেছে বৃষ্টির দিন। দিনভর ঘ্যানঘ্যানে বৃষ্টিতে বাড়ি থেকে বের হওয়াই সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। বাড়ি থেকে বেরিয়েই কাকভেজাহয়ে অফিসে যাচ্ছে মানুষ। জুতো থেকে মোজা, সব ভিজে একেবারে চুপচুপে। সেই জুতো-মোজা পরেই সারাদিন কাটিয়ে দেয়া।
সবশেষে ঘরে পৌছে জুতো খুলতেই বিকট গন্ধ! এই পরিস্থিতির সম্মুখীন অনেকেই হচ্ছেন নিশ্চয়ই? এই সমস্যা দূর করতে ঘরোয়া কিছু টিপসে খুব সহজেই দূর করতে পারবেন জুতো, মোজার এই বাজে গন্ধ।
আসুন জেনে নেই তাহলে –
১. ছোট্ট একটি কাপড়ে অল্প পরিমাণ বেকিং সোডা নিয়ে ছোট পুটলি বানিয়ে মোজার মধ্যে রেখে দিন। দেখবেন মোজা থেকে দুর্গন্ধ দূর হবে।
২. ন্যাপথোলিন গুঁড়ো করে নিয়ে ট্যালকম পাউডারের সঙ্গে তা মিশিয়ে জুতোর মধ্যে ছড়িয়ে দিন। দেখবেন জুতোয় আর দুর্গন্ধ হচ্ছে না।
৩. বাড়িতে ফিরেই ভিজে জুতো ভালো করে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন। তারপর জুতোর মধ্যে কিছু পরিমাণ বেকিং সোডা ছিটিয়ে দিন।
পরের দিন জুতোর ভিতর ভালো করে মুছে ফেলুন। দেখবেন গন্ধ দূর হয়েছে।
৪. জুতোর মধ্যে এক টুকরো ফেব্রিক সফটনার সিট রেখে দিন রাতে। পরদিন সেটি বের করে জুতো পরুন। বাজে গন্ধ একেবারে দূর হয়ে যাবে।
৫. বাড়িতে ফিরে জুতো ধুয়ে হেয়ার ড্রায়ার চালিয়ে হালকা শুকিয়ে নিন। এবার এক টুকরো কাপড় বা তুলো লবঙ্গ তেলে ভিজিয়ে জুতোর মধ্যে রেখে দিন সারারাত। জুতোর দুর্গন্ধ দূর হবে।
৬. ফুটন্ত জলে টি ব্যাগ ফেলে রাখুন ২ মিনিট। টি ব্যাগ ঠাণ্ডা হলে জুতোর মধ্যে রেখে দিন। এক ঘণ্টা পর তা সরিয়ে জুতোর ভেতরের অংশ ভাল করে মুছে নিন। দুর্গন্ধের পাশাপাশি দূর হবে তাতে থাকা ব্যাকটেরিয়াও।
জেডএস//
রেসিপি
ম্যাংগো পুডিং তৈরির রেসিপি
আমের সিজনে অনেকেই আমের পাল্প ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করেন। সেই ম্যাংগো পাল্প দিয়েই ম্যাংগো পুডিং বানানো যাবে। আর আমের সিজনে তো ফ্রেশ আমই ব্যবহার করতে পারবেন। ছোট বাচ্চাদের জন্য এটি বেশ হেলদি একটি ডেজার্ট আইটেম। মাত্র ৪টি উপাদান দিয়েই ইয়াম্মি ইয়াম্মি ম্যাংগো পুডিং বানিয়ে নেয়া যায়। চলুন দেরি না করে রেসিপিটি জেনে নেই এখনই।
উপকরণ
ঘন দুধ- ১ কাপ
চিনি- স্বাদ অনুযায়ী ( আমি হাফ কাপ দেই )
আম- ২টি
ডিম- ২টি
ম্যাংগো পুডিং তৈরির পুরো প্রণালী
১. প্রথমে আম ছোট ছোট করে কেটে নিন। দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করুন এবং ঠাণ্ডা করে নিন।
২. এবার ব্লেন্ডার জগে আম, চিনি, দুধ ও ডিম সবকিছু দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন।
৩) মিশ্রণটি মোটামুটি ঘন ও থকথকে হবে। যদি বেশি ঘন হয়ে যায়, লিকুইড দুধ মিশিয়ে নিতে হবে।
৪. এবার একটি স্টিলের টিফিন বক্সে পুডিংয়ের মিশ্রণ ঢেলে নিতে হবে।
৫. বড় সসপ্যানে পানি ফুটতে দিন। এবার একটি স্ট্যান্ড প্যানে সেট করে তার উপর স্টিলের টিফিন বক্সটি রাখুন।
৬. বাটির ঢাকনা ভালোভাবে আটকাবেন এবং পানি যেন ভেতরে না যেতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
৭. চুলার আঁচ মিডিয়াম রাখুন, ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করে চেক করুন পুডিং জমেছে কি না।
৮. পুডিং জমে গেলে চুলা নিভিয়ে দিন। এরপর রুম টেম্পারেচারে ঠাণ্ডা করে নিতে হবে।
ব্যস, আমের পুডিং বানানো হয় গেলো! চাইলে ফ্রিজে রেখে ম্যাংগো পুডিং ভালোভাবে সেট করে নিতে পারেন। সেট হয়ে গেলে টিফিন বক্স থেকে পুডিংটি একটি প্লেটে সাবধানে উল্টিয়ে ঢেলে নিন। এবার ছুরি দিয়ে পিস পিস করে কেটে সার্ভ করুন। আর এটি ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা খেতে কিন্তু বেশি মজা লাগে। সব উপকরণগুলো বাসাতে থাকলে আজই বানিয়ে নিন দারুন মজাদার ডেজার্টটি।
জেএইচ