খুলনা
স্ত্রীর গলাকেটে স্বামীর আত্মহত্যা
যশোরের মনিরামপুরে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী রজিনা খাতুনের (৩৫) গলাকেটে হত্যা চেষ্টার পর ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন স্বামী। গুরুতর আহত ওই গৃহবধূকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ঢাকায় রেফার করা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বুধবার (২৬ জুন) মধ্যেরাত দেড়টার দিকে উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের ঝাউতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন মনিরামপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম মেহেদী মাসুদ।
হতাহতরা হলেন, ওই গ্রামের হাতেম আলীর ছেলে উজির আলী (৪৮) ও তার স্ত্রী রজিনা খাতুন (৩৫)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার মধ্যেরাতে কোনো এক বিষয় নিয়ে উজির ও তার স্ত্রী রোজিনার মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে উজির তার স্ত্রী রোজিনার গলায় ধারালো দাঁ চালায়। এ সময় তাদের ছেলের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে উজির স্ত্রীকে রেখে দৌড়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
প্রতিবেশীরা আহত রোজিনাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে তার অবস্থা আরও আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য রোজিনাকে ঢাকায় প্রেরণ করেন।
অন্যদিকে স্ত্রী রোজিনা মারা গেছে ভেবে স্বামী উজির দৌড়ে পালিয়ে বাড়ির পাশের একটি গাছের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকাল ৮টার দিকে হতাহতদের বসতবাড়ির পাশে একটি সজনা গাছে স্বামী উজিরের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। তৎক্ষণিক মনিরামপুর থানা পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের প্রতিবেশীরা জানান, নিহত উজির পেশায় একজন ভ্যানচালক। তার পৈত্রিক বাড়ি পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ বালিধা গ্রামে। নিহত উজির ও তার স্ত্রী রোজিনা তাদের এক প্রতিবদ্ধী ছেলেকে নিয়ে ঝাউতলা গ্রামে ভাড়া থাকতেন। উজির ও স্ত্রীর উভয়ের পূর্বে একাধিক বিবাহ ছিল। তাদের মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য ছিল।
ওসি এবিএম মেহেদী মাসুদ বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী উজির তার স্ত্রী রোজিনাকে হত্যা করার চেষ্টা করে। তাকে জখম করে মনে করে তার স্ত্রী মারা গেছে, এই ভেবে সে নিজেও পালিয়ে গিয়ে আত্মহত্যা করে। আহত স্ত্রী ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আইনী ব্যবস্থা প্রক্তিয়াধীন।
কেএস/
খুলনা
কুষ্টিয়া কারাগার থেকে পালাল অর্ধশতাধিক আসামি
কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে অন্তত অর্ধশতাধিক আসামি পালিয়েছে গেছেন বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শতাধিক রাউন্ড গুলি ছোড়েন কারারক্ষীরা। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন কারারক্ষী আহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে এই ঘটনার পর সেনাসদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন।
তবে জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা গণমাধ্যমে বলছেন, ১২-১৩ জনের মতো আসামি পালিয়েছেন। পলাতকদের তালিকা করার পর বিস্তারিত জানানো যাবে।
কারা সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী জামিন পান। দুপুর আড়াইটার দিকে বের হওয়ার কথা ছিল। তাদের সঙ্গে বের হতে হট্টগোল শুরু করেন কারাবন্দীরা। এ সময় কারারক্ষীরাও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি চালান। তবে এর আগেই অর্ধশত আসামি পালিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কুষ্টিয়া কারাগারের জেলার আবু মুসা গণমাধ্যমে জানান, কারাগার থেকে ঠিক কত জন কয়েদি পালিয়ে গেছে তা সঠিক হিসাব জানা যায়নি।
এএম/
খুলনা
মাগুরায় ছাত্রদল নেতা নিহত, আহত ১০
কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে মাগুরা শহরের ঢাকা রোড়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় জেলা শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী নিহত হয়েছেন। এছাড়াও আহত হয়েছেন পুলিশের তিন সদস্যসহ ১০ জন।
রোববার সকাল ১১টার দিকে এ সংঘর্ষে ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সকাল ১১টার দিকে পারনান্দুয়ালী এলাকা থেকে বিএনপি একটি মিছিল নিয়ে শহরে ঢুকতে গেলে পুলিশি বাধার সম্মুখিন হয়। ঘটনাস্থলে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইট পাটকেট নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশ তাদের ধাওয়া করে রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও গুলি করলে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদেী হাসান রাব্বী নিহত হন।
জেলা শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুর রহিম গণমাধ্যমকে জানান, ‘রাব্বি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। তার বুকে গুলি লেগেছে।’
মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আমর প্রশাদ বিশ্বাস জানান, আহত তিন পুলিশ সদস্যসহ ১০ জনকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেডএস/
খুলনা
কনস্টেবল সুমন হত্যায় মামলা, অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামি ১২০০
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় খুলনায় পুলিশ কনস্টেবল সুমন ঘরামী হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
লবণচরা থানার এসআই মোস্তফা সাকলাইন বাদী হয়ে শুক্রবার (২ আগস্ট) রাতে লবণচরা থানায় মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার নেই বলে জানান লবণচরা থানার ওসি মমতাজুল হক।
এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে শুক্রবার বিকেলে ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানায় আলাদা দুটি মামলা হয়েছে।
নিহত সুমন ঘরামীর বাড়ি বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলায়। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন নগরীর বয়রা এলাকায়। তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী কমিশনার সৌমেন বিশ্বাসের দেহরক্ষী ছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনার মোহাম্মদনগর এলাকায় পিটুনিতে নিহত হন তিনি। সমুনের স্ত্রী মিতু বিশ্বাস। তাদের ৬ বছর বয়সি স্নিগ্ধা নামে এক মেয়ে রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত্তি দিয় পুলিশ জানায়, বিকেলে খুলনায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। সন্ধ্যার পরে আবার সোনাডাঙ্গা এলাকায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা।
সংঘর্ষের এ ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল সুমন গুরুতর আহত হন। পরে রাতে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। জানা গেছে, এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশের আরও ৩০ সদস্য।
এসি//