বাংলাদেশ
পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থ না থাকায়-দুর্গন্ধে মাছ-মাংস বিক্রি
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বালারহাট বাজারে ময়লা-আবর্জনাসহ পঁচা কাদাযুক্ত পানির দূর্গন্ধে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন ক্রেতা-বিক্রেতাসহ সাধারণ মানুষ। সেই সঙ্গে মারাক্তকভাবে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতেও রয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতাসহ সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় হাট বালারহাট বাজার। এই বালারহাট বাজারে দীর্ঘদিন ধরে কাদা আর ময়লা-আবর্জনায় পরিপুর্ণ দুর্গন্ধে চরম ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে মাংস ও মাছ হাট্টির অবস্থা খুবই করুণ। সেখানে পঁচা কাদাযুক্ত পানির দুর্গন্ধে বাতাসের মাধ্যমে রোগ জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে পরিবেশে মারাত্মক ক্ষতি করছে। এতে রোগব্যধি দেখা দিচ্ছে প্রতিনিয়ত।
জানা গেছে, বালারহাট বাজার থেকে বছরে লাখ-লাখ টাকা ইজারা বাবদ আয় হলেও কেউ কোন খোঁজ খবর রাখছে না। বাজারেই এমন দৈন্যদশা বিরাজ করলেও যেন দেখার কেউ নেই।
এ দিকে বালারহাট সব চেয়ে বড় বাজার হলেও ময়লা রাখা ডাসবিনের কোন ব্যবস্থা নেই। পুরার্তন ড্রেনেজ গুলো অকেজো হওয়ায় কাদা আর নোংরা পানির পাশাপাশি প্লাষ্টিকের ছোট বড় ব্যাগ দিয়ে ড্রেন ভর্তি হয়ে গেছে। এসব ময়লা যুক্ত জায়গায় বসবাস করছে মাছি আর জীবাণুযুক্ত পোকা মাকড়। এসব মাছি ও পোকা-মাকড়ের উপদ্রবে বাজারে যাওয়া দুস্কর হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের। তাই বাধ্য হয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাসহ সাধারণ মানুষ দিনের পর দিন তাদের নিত্যদিনের কেনা কাটা করছেন। পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ। ক্রেতা-বিক্রেতাদের অভিযোগ সরকার প্রতি বছর এ হাট থেকে লাখ লাখ টাকা ইজারা বাবদ রাজস্ব আদায় করলেও মাছ ও মাংস হাট্টির পানি নিস্কাশনের জন্য ড্রেনগুলো সংস্কার না করার ফলে কাদা ময়লা ও আবর্জনায় বন্ধ হয়ে গেছে। দূর্গন্ধে বাজারে হাটাচলা করা বড়ই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ডাসবিনের অভাবে হাট-বাজারের ময়লা আবর্জনা গুলো বাজার সংলগ্ন সড়কের পাশেই ফেলা হচ্ছে। অপর দিকে বালাহাট বাজারের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তাদের দোকানের সম্মুখ ভাগ উচুঁ করে নেওয়ায় গলি গুলো নিচু হয়ে গেছে। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই ময়লাযুক্ত কাদাসহ ড্রেনের উপচে পরা পানি ও বৃষ্টির পানি জমে থাকায় সব চেয়ে খারাপ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে মাছবাজার ও সবজি বাজার গুলোতে। এর পরেও ক্রেতা বিক্রেতাসহ জনসাধারণ ড্রেনের দুর্গন্ধযুক্ত পানি ও কাদা উপর থেকেও হাটাচলা ও সওদা করছেন।
বালারহাট বাজারের মাছ বিক্রেতা তপন চন্দ্র বিশ্বাস ও মানু বিশ্বাস জানান, আমরা জীবন-জীবিকার তাগিতে বছরের পর বছর পঁচা দুর্গন্ধের মধ্যেই বসে মাছ বিক্রি করে আসছি। ইজারাদারতো শুধু তাদের ইজারা তোলেন। আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। বাজারের ড্রেন গুলো পরিস্কার না করায় কাদা জমে দুগূন্ধের সৃষ্টি হয়। আমরা বাধ্য হয়ে পঁচা দুর্গন্ধ সহ্য করেই আছি। তারা বালারহাট বাজারের মাছ পট্টীর পানি নিস্কাশনের জন্য ড্রেনগুলো সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন।
একই বাজারের মাংস বিক্রেতা নুর মোহম্মদ ও মাসুদ রানা জানান, আমরা দীর্ঘদিন থেকে পঁচা দুর্গন্ধ সহ্য করেই পশু জবাই করে আসছি। হাট-কমিটিকে বলার পরেও তারা ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অস্বাস্থকর পরিবেশে পশু জবাইয়ের বিষয়টি স্বাস্থ্য সম্মত কি না প্রশ্ন করলে এই দুই মাংস বিক্রেতা জানান, জানি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নেওয়া আমরা বাধ্য হয়ে আমরা পচা দূগন্ধ সহ্য করে মাংস বিক্রি করছি।
বালারহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক রতন চন্দ্র রায় জানান, বাজারে মাছ ও মাংস হাট্টি গেলে নাগ বন্ধ করে যেতে হয়। অবস্থা এ্যাতোই খারাপ যে বলার ভাষা নেই। বিষয়টি সবার নজরে থাকলেও পরিস্কারের কোন উদ্যোগ নেই। তিনি দ্রæত মাংস ও মাছ হাট্টি পচা দূগন্ধের হাত থেকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোড় দাবী জানান।
বালারহাট বাজার কমিটির সভাপতি ও নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাছেন আলী জানান, দুই একটি দোকানের কারণে মাছ হাট্টির ড্রেনেজ ব্যবস্থা অকেজো হওয়ায় কাদা আর নোংরা পানির পাশাপাশি প্লাষ্টিকের ছোট বড় ব্যাগ দিয়ে ড্রেন ভর্তি হয়ে গেছে। এসব ময়লা যুক্ত জায়গায় বসবাস করছে মাছি আর জীবাণুযুক্ত পোকা মাকড়। এসব মাছি ও পোকা-মাকড়সহ পচা দূগন্ধে মাছ হাট্টি যাওয়া দুস্কর হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের। তারপরেও সাধারণ মানুষ পচা দূগন্ধ সহ্য করে প্রয়োজন মিঠাতে মাছ ও মাংস ক্রয় করছেন। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে উদ্ধর্তন কর্তৃকপক্ষকে জানানো হবে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর সামচুল আরেফিন জানান,বালারহাটে নিদিষ্ট পশু জবাই খানা নেই। বিষয়টি হাট-কমিটিকে জানানো হবে। কোন মাংস বিক্রেতা যদি অস্বাস্থ্যাকর পরিবেশে মাংস জবাই করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ