অপরাধ
মেয়ের পরিকল্পনায় খুন হন সাবেক এমপির স্ত্রী: পিবিআই
পরকীয়া ও সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে নিজ মেয়ের পরিকল্পনায় সাভারের সাবেক এমপি শামসুদ্দোহা খানের স্ত্রী সেলিমা খান মজলিস খুন হন। বলেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান তিনি।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন: ইলেকট্রিশিয়ান সুবল কুমার রায় (৫০), নিহতের নিজ মেয়ে শামীমা খান মজলিস ওরফে পপি (৫৭) এবং গৃহকর্মী আরতি সরকার (৬০)। গেলো ৪ জুন সাভারের ভাগলপুর এবং পাকিজা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের ১৩ বছর পর তিনজনকে গ্রেপ্তার করলে তাদের থেকে হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পারে পিবিআই-এর ঢাকা জেলা ইউনিট।
পিবিআই প্রধান জানান, হত্যাকারী সুবলের সঙ্গে মেয়ে শামীমার প্রেমের সম্পর্কে বাধা দেয়ায় খুন হন সেলিনা খান মজলিস। হত্যার পর আত্মহত্যা হিসেবে প্রচারের চেষ্টা করেছিলেন আসামিরা।
সংবাদ সম্মেলনে বনজ কুমার জানান, সাভারের বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মরহুম শামসুদ্দোহা খানের স্ত্রী ছিলেন সেলিমা খান মজলিশ। তিনি তার স্বামীর দুই তলার বাড়ির নিচতলার পশ্চিম পার্শ্বের ফ্ল্যাটে বড় মেয়ে শামীমা খান মজলিশ ওরফে পপি (৫৭), মেয়ে তিলোত্তমা ও মেয়ের জামাই আবুল কালাম আজাদ এবং পূর্ব পার্শ্বের ফ্ল্যাটে সেজ মেয়ে সেলিনা খান মজলিশ ওরফে শিল্পী (৩৮) এবং তার একমাত্র ছেলে প্লাবনকে (১২) নিয়ে বসবাস করতেন।
২০১১ সালের ১৪ জুন ভোর সাড়ে ছয়টা থেকে সাড়ে সাতটার মধ্যে সেলিমা খানকে গলা ও পেটকাটা অবস্থায় উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারদিন পর ১৮ জুন তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. শাফিউর রহমান খান ওরফে শাফি বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলার পর নিহতের নাতনি জামাই আবুল কালাম আজাদ ও গৃহকর্মী স্বরসতীর স্বামী শ্রী হরিপদ সরকারকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। পরে থানা পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলাটির তদন্তভার সিআইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সিআইডি ৪ বছর ৩ মাস ২৪ দিন তদন্ত করে। তদন্তকালে সিআইডি হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে মো. আবু সুফিয়ান ওরফে রানা (৩২) নামে আরেজনকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু মামলার তদন্তে তাদের সম্পৃক্ততা না মেলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন থেকে তাদের নাম বাদ দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ।
এরপর ২০১৫ সালের অক্টোবরে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। পরবর্তীতে আদালত মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেয়। মামলাটির তদন্ত করেন উপপরিদর্শক (এসআই) সালেহ ইমরান। পরে গেলো ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান এসআই ইমরান আহমেদ।
দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে মামলাটির তদন্ত হলেও মূল আসামি ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আগের তদন্তকারীরা। কিন্তু পিবিআই এর এসআই ইমরান আহমেদ গেলো ৩০ মে সুবল কুমার রায়কে গ্রেপ্তার করলে হত্যাকাণ্ডের আসল রহস্য বেরিয়ে আসতে শুরু করে। সুবলের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিহতের মেয়ে পপি ও আরতী সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কারণ হিসেবে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার জানান, গ্রেপ্তারকৃত সুবল কুমার রায় এবং নিহতের বড় মেয়ে শামীমা তাহের পপির মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। এছাড়াও পারিবারিক সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ এবং রাজনৈতিক বিরোধের জেরে তাকে হত্যা করা হয়।
যেভাবে হত্যা করা হয় সেলিমা খানকে
পিবিআই প্রধান জানান, হত্যাকাণ্ডটি মূলত সংঘটিত হয় নিহতের বড় মেয়ে পপির পরিকল্পনায়। ঘটনার দিন সেলিমা খান মজলিশের বড় মেয়ে শামীমা তাহের পপির সহায়তায় তার গলার দুই পার্শ্বে ফল কাটার ছুরি দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করা হয়। পরে তারা বাসার দ্বিতীয় তলার ডাইনিং রুমে সেলিমাকে ফেলে রেখে চলে যায়।
গ্রেপ্তারকৃত সুবল কুমার পিবিআইকে দেয়া জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, নিহতের বড় মেয়ে শামীমা খান মজলিশ ওরফে পপির সহায়তায় ভিকটিমের বাসার ডাইনিং রুমে নিহতের গলার দুই পার্শ্বে ফল কাটার ছুরি দিয়ে পোঁচ মেরে রক্তাক্ত করে। পরে সেই অবস্থায় প্রতিবন্ধী ছেলে সেতুর কক্ষে খাটের চাদরের ওপরে একটি পুরাতন পত্রিকা বিছিয়ে সেলিমা খানের মাথার কাছে দুটি বালিশ দিয়ে চাপা দিয়ে এবং ঘাড়ের নিচে তোষক দিয়ে শুইয়ে রেখে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ