চট্টগ্রাম
ফের বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কাঁপল টেকনাফ সীমান্ত
সপ্তাহ খানেক বন্ধ থাকার পর ফের মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের জেরে কাঁপল সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ। কখনও দিনে আবার কখনও রাতে শোনা যাচ্ছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ।
গতকাল বুধবার (৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থেমে থেমে আবারও বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনতে পায় রাখাইনের মংডু টাউনশিপের দক্ষিণ-পশ্চিমের বাসিন্দারা। নাফ নদের তীরে টেকনাফ পৌরসভা, হ্নীলা, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ ও টেকনাফ সদর ইউনিয়নের বাসিন্দারা বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনতে পায়।
টেকনাফ সীমান্ত এলাকার লোকজন ও জনপ্রতিনিধিদের দেয়া তথ্যমতে, কিছুদিন বন্ধ থাকলেও গতকাল সকাল থেকে ওপার থেকে মর্টারশেল ও শক্তিশালী গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসতে শুরু করে। যা আজ পর্যন্ত থেমে থেমে অব্যাহত রয়েছে।
তারা আরও জানান, টেকনাফের নাফ নদের পূর্ব পাশে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের কাদিরবিল, মংনিপাড়া ও সুদাপাড়া গ্রাম। ওই সব এলাকায় মানুষের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এসব ঘরবাড়িতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। আগুন দেয়া বাড়িঘরের অধিকাংশের মালিক রোহিঙ্গা নাগরিকেরা। রোহিঙ্গাদের উল্লেখযোগ্য অংশ নাফ নদ অতিক্রম করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে খবর রয়েছে।
শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, মিয়ানমারে মর্টারশেল বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দে কাঁপছে টেকনাফ। বাড়ির বের হতে ভয়ে শরীর কেঁপে উঠে। এমন কি শিশু পর্যন্ত ঘুম থেকে চমকে উঠতেছে। মনে হচ্ছে আকাশ ভেঙে পড়ছে মাথার উপর।
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ছিদ্দিক আহমদ বলেন, কিছুদিন বিকট শব্দ শুনা না গেলেও গতকাল থেকে আবারও শুনা যাচ্ছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। গতকাল সারাদিন থেকে শুরু হয়ে আজ সকাল পর্যন্ত অনেক বেশি গোলাগুলির শব্দে কাঁপছে টেকনাফ। যার কারণে প্রতিনিয়ত জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এমন বিকট শব্দ আগে কখনো শুনিনি।
টেকনাফ ২ বিজিবির ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদ ও সীমান্তে কঠোর অবস্থানে বিজিবি। পাশাপাশি রাখাইন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী জানান, সপ্তাহ খানেক কোনো ধরনের বিকট শব্দ পাওয়া যায়নি। তবে গতকাল থেকে আবারও বিকট শব্দে কেঁপে উঠল টেকনাফ। তবে এটি মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ ব্যাপার হলেও এপারের মানুষগুলো শান্তিতে থাকতে পারছে না। তিনি বাংলাদেশ সীমান্তে বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে বলেও জানান।
চট্টগ্রাম
কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন দুই সাইকেল আরোহী
কর্ণফুলীতে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দুই সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা একটার দিকে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর বাংলাবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নন্দনালী গ্রামের কামাল মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল মণ্ডল (১৮) ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট পাগলা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল জলিলের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (১৬)। তারা কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চরপাথরঘাটার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে তারা তিনজন সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
এএম/
চট্টগ্রাম
রাতেও ট্রাফিক সামলাচ্ছেন ছাত্রীরা
সরকার পতনের পরে চট্রগ্রামে নগরীর থানাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। এ অবস্থায় নগরীর রাস্তায় নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ। দিনভর রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন সরকার পতনের আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা। তবে দিন পেরিয়ে রাত হলেও, রাস্তায় ছাত্রদের পাশপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় ছাত্রীদেরও।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার অলী খা মসজিদ মোড় এলাকায় এমন চিত্র দেখতে পায় গণমাধ্যম।
নগরীর অলী খা মসজিদ মোড়ে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইজা তাবাসসুম বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এখানে আসা। সকালে শুনেছি সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই তারা কাজ করতে এসেছেন।
আসিফুর রহমান নামে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানান, শিফট সিস্টেম করে ছাত্ররা কাজ করছে। এখন তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের ইচ্ছায় তারা এখানে এসেছেন।
আই/এ
চট্টগ্রাম
‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিম ও তার ছেলে গণপিটুনিতে নিহত
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত ‘বালুখেকো’ খ্যাত চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তার ছেলে নায়ক শান্ত খান গনপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বালিয়া ইউনিয়নের ফরক্কাবাদ বাজারে এসে জনগণের তোপের মুখে পড়েন তারা। এরপর সেখানে নিজের পিস্তল থেকে গুলি করে উদ্ধার হয়ে আসতে পারলেও পার্শ্ববর্তী বাগাড়া বাজারে এসে জনতার মুখোমুখি হয়। তারপর সেখানে জনগণের পিটুনিতে নিহত হোন সেলিম খান ও তার ছেলে শান্ত খান।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম গণমাধ্যমে বলেন, তাদের মৃত্যুর বিষয় জেনেছি। তবে কেউ খবর দেয়নি। আর জানমালের নিরাপত্তার কারণে সেখানে কাউকে পাঠানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেলিম খান চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীতে শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। এসব ঘটনায় সে কারাভোগ করেন এবং দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। সেলিম খান একজন আলোচিত প্রযোজকও। তিনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার।
এছাড়া সেলিম খানকে পদ্মা-মেঘনার চর থেকে বিভিন্ন সময় বালু তোলাসহ নানা কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
এএম/