বাংলাদেশ
ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষে কুবি রণক্ষেত্র
পূর্ব ঘটনার জের ধরে শুক্রবার মধ্যরাতের সংঘর্ষের পর দুপুর থেকে ফের উত্তপ্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও কাজী নজরুল ইসলাম হলের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে আবারও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় হয়েছে।
এসময় রামদা, রড, হকি স্টিক, দেশীয় অস্ত্র, প্লাস্টিকের পাইপ, ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ দু'পক্ষের মধ্যে কয়েক দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২ টার দিকে শুরু হওয়া দুই ঘন্টা ব্যাপী এই সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) মূল ফটক সংলগ্ন হোটেলে কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের এক কর্মী দুপুরের খাবার খেতে গেলে তার ওপর হামলা হয়। এতে কাজী নজরুল ইসলাম হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ফের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাদেৎ মো. সায়েম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) খাইরুল বাশার সাকিব, একই হলের সাংগঠনিক সম্পাদক পাপন মিয়াজী, ছাত্রলীগ কর্মী কাউছার , সেলিম, মীরহাম, রাশেদ, বিজয় ও কাজী নজরুল ইসলাম হলের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি নাজমুল হাসান পলাশ ও একই হলের ছাত্রলীগকর্মী বায়েজিদ আহমেদ বাপ্পী, ফয়সাল, কামরুল, সাগর দেবনাথ, এমরান, আশিক, জামান, জয়রাজ, তানভীর, নাহিয়ান, নাজিমসহ দুইপক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। আহতরা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রত্যাক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই দুই হলের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যায় নজরুল হলের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধর করে বঙ্গবন্ধু হলের এক ছাত্রলীগকর্মী। সে ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাত সাড়ে ১২টার দিকে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ায় দুই হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় লাঠি, রড, দেশীয় অস্ত্র হাতে দেখা দেখা যায় একাধিক ছাত্রলীগ কর্মীকে।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপস্থিত হয়ে দুই পক্ষকে শান্ত করা চেষ্টা করে এবং ঘটনা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন।
এ বিষয়ে কাজী নজরুল ইসলাম হলের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) নাজমুল হাসান পলাশ বলেন, গত কাল রাত থেকে এখন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু হলের পোলাপান আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালাচ্ছে। তারা সব কিছু পূর্ব পরিকল্পনা করে হামলা করছে। আমরা আজকে সন্ধ্যার ভেতরে প্রশাসনের নিকট একটি সমাধান চাই।
বঙ্গবন্ধু হলের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) খায়রুল বাশার সাকিব বলেন, আমাদের একজন জুনিয়রকে পেয়ে তারা হামলা করে বসে। পরবর্তী তারা সবাই এসে আমাদের কয়েকজনের উপর হামলা চালায়। তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। আমরা এটার বিচার চাই৷
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম বলেন, গতকাল রাতে সংঘর্ষের পর আমি সারারাত ধরে হলেই অবস্থান করি এবং পরিবেশ ঠাণ্ডা রাখতে চেষ্টা করি। কিন্তু দুপুরে ছেলেরা খাওয়ার জন্য বের হলে তারা হামলার শিকার হয়। যার ফলে পুনরায় দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ আমার হলের সবাইকে আমি হলে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হই। আর যারা আহত হয়েছে তাদেরকে হসপিটালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মিহির লাল ভৌমিককে ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, ছাত্রনেতারাসহ মিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। এখন পরিস্থিতি শান্ত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটা সমাধান করার চেষ্টা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সমাধান করতে না পারলে আমরা আইনিভাবে ব্যবস্থা নেবো।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ