জাতীয়
টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পরিবার পরিকল্পনা গুরুত্বপূর্ণ : প্রধানমন্ত্রী
পরিবার পরিকল্পনা বিশ্বব্যাপী জীবনের মৌলিক অংশ হিসেবে স্বীকৃত। টেকসই উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে পরিবার পরিকল্পনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ (বৃহস্পতিবার) ১১ জুলাই ‘বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস-২০২৪। এ উপলক্ষ্যে দেয়া বাণীতে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, পরিবার পরিকল্পনা সেবাগ্রহীতার হার বৃদ্ধি পেলে মাতৃ ও শিশুমৃত্যু কমে, মায়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং অনাকাক্সিক্ষত গর্ভধারণ রোধ হয়। সন্তান কম থাকলে স্বল্প আয়েও আর্থিকভাবে সচ্ছল থাকা যায়। পরিকল্পিত পরিবার খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য মানবাধিকার পূরণের পাশাপাশি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে পরিবার পরিকল্পনার বিকল্প নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ১১ জুলাই ‘বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস-২০২৪’ উদযাপনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উপাত্ত ব্যবহার করি, সাম্যের ভিত্তিতে সহনশীল ভবিষ্যৎ গড়ি’ যা অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার একটি দক্ষ ও পরিকল্পিত জনকাঠামো বিনির্মাণে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহীতার হার বৃদ্ধি, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা, পরিকল্পিত পরিবার গঠন, মা ও শিশু ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, প্রসবকালীন এবং প্রসব পরবর্তী সেবা, বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপদ মাতৃত্ব, কিশোর-কিশোরীর স্বাস্থ্য, নারী শিক্ষা ও নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সারা দেশে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রসমূহে সার্বক্ষণিক প্রসূতি সেবা প্রদানের লক্ষ্যে মিডওয়াইফ নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মাঠকর্মীগণ ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের সেবাকেন্দ্রসমূহ এবং জাতীয় পর্যায়ের ৩টি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা, কৈশোরকালীন প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা এবং পুষ্টিসেবা ও পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছে। এর ফলে এক মাসের কম বয়সি শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ২০ জনে ও মাতৃমৃত্যু হার প্রতি লাখে ১৩৬ জনে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। তাই নারীদের বাদ দিয়ে এদেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্র এবং জনজীবনের সব ক্ষেত্রে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ ও জেন্ডার সমতা অর্থাৎ নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নারী উন্নয়নের প্রক্রিয়া শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা নারী ও কন্যা শিশুর অধিকার এবং উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। জেন্ডার সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য দূরীকরণ সনদ, বেইজিং প্ল্যাটফর্ম ফর অ্যাকশনসহ সব আন্তর্জাতিক সনদ ও পদক্ষেপ অনুসরণ করে আমাদের সরকার কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমাজের সকল পর্যায়ে নারী ও কন্যা শিশুর গঠনমূলক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি। বাল্যবিবাহ রোধ আমাদের একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে যথাযথ উপাত্ত সংগ্রহ করে বাল্যবিবাহ নিরোধ করার জন্য আমাদের সরকার বদ্ধপরিকর।’
তিনি বলেন, ‘আমি সুস্থ-সবল জাতি গড়ে তোলার জন্য পরিকল্পিত পরিবার গঠনে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, গণমাধ্যম, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আরও সক্রিয় ও আন্তরিকতার সঙ্গে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। আসুন, সকলে মিলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ তথা জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি।’
প্রধানমন্ত্রী ‘বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সফলতা কামনা করেন।
জেএইচ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ