রেসিপি
লাউয়ের চারটি রকমারি রেসিপি
পেট ঠান্ডা রাখতে লাউয়ের জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু অনেকেই লাউ খেতে চান না। তাই একঘেয়ে লাউয়ের রান্না না করে এবার বরং কিছু অন্যরকম ট্রাই করুন। যদিও রন্ধন পটিয়সীদের ভালোই জানা যে ঠাকুমা-দিদিমাদের আমলে লাউয়ের কতরকম পদ দিয়ে খাওয়া হত। তাই ঝটপট জেনে নিন কিছু রেসিপি।
ছোলার ডাল দিয়ে লাউ ঘন্ট
উপকরণ
ঘণ্টর মতো কুচো করে কাটা লাউ ভাপিয়ে নেয়া
১ কাপ সেদ্ধ ছোলার ডাল
২ টেবিল চামচ সাদা তেল
২ টি তেজপাতা
২ টি শুকনো মরিচ
১ চা চামচ গোটা জিরা
১ টেবিল চামচ আদা, কাঁচা মরিচ বাটা
১ চা চামচ হলুদগুঁড়ো
গরমমশলা ১ চাচামচ
স্বাদ মত লবণ-চিনি
প্রণালী
একটা পাত্রে তেল গরম করে তেজপাতা, শুকনো মরিচ ও জিরে ফোড়ন দিয়ে নিতে হবে। এবার এতে ডাল দিয়ে আদা ও কাঁচা মরিচ বাটা, হলুদ, লবণ দিয়ে ভালো করে ভেজে নিন। এতে সামান্য পানি দিয়ে ফুটিয়ে নিতে হবে। এবার লাউ দিয়ে মিশিয়ে নিন। মাখো মাখো হয়ে এলে উপর দিয়ে গরম মশলা ছড়িয়ে নামিয়ে নিন।
লাউ কুমড়ো বড়ি ঘন্ট
উপকরণ
১ টি গোটা লাউ কুচি করা
একফালি বড় সাইজের কুমড়ো (ডুমো করে কাটা)
৬-৭ টা ডালের বড়ি
১ চা চামচ রাঁধুনি, জিরে
১ চা চামচ কাঁচা মরিচ কুচি
১ চা চামচ হলুদগুঁড়ো
৩-৪ টেবিল চামচ নারকেল কোরা
স্বাদ অনুযায়ী লবণ-চিনি
প্রয়োজন অনুযায়ী তেল
প্রণালী
কড়ায় তেল গরম করে ডালের বড়িগুলো ভেজে তুলে রাখুন। এবার ওই তেলেই রাধুনি ও জিরে, কাঁচা মরিচ ফোড়ন দিন। এতে কুচি করে কেটে রাখা লাউ দিয়ে ভালো করে নাড়ুন। এবার এতে ডুমো করে কাটা কুমড়ো দিয়ে লবণ ও হলুদ দিয়ে আবার নেড়ে ঢেকে দিন। বেশি ঘাটবেন না এতে লাউ-কুমড়ো দুটোই গলে যাবে। মিনিট পাঁচেক বাদে ঢাকা তুলে দেখুন জল ছাড়ছে কিনা। চেরা কাঁচা মরিচ দিয়ে আবার একবার নেড়ে ঢেকে দিয়ে ঢিমে আঁচে রান্না করুন। নামানোর আগে বড়িভাজা ছড়িয়ে ভালো করে মিশিয়ে করে ঘন্টর সঙ্গে মিশিয়ে নিন। এবার উপর থেকে নারকেল কোড়া ছড়িয়ে দিন। ব্যস, তৈরি লাউ-কুমড়োর ঘণ্ট।
চিংড়ি দিয়ে লাউশাক ভর্তা
উপকরণ
লাউ শাক ১ আঁটি
খোসা ছাড়ানো ছোট চিংড়ি এককাপের তিনভাগের একভাগ
পিঁয়াজ ১টি মাঝারি আকারের (মোটা করে কাটা)
রসুন ৩ কোয়া (মোটা করে কাটা)
কাঁচা মরিচ ৭-৮টি বা স্বাদ অনুযায়ী
লবণ স্বাদমতো
তেল অল্প
প্রণালী
আঁশ আর ডাটা বাদ দিয়ে লাউশাক বেছে নিতে হবে। চিংড়ি মাছ লবণ দিয়ে মাখিয়ে রাখুন। প্যানে বেশ কিছুটা পানি দিয়ে তাতে অল্প লবণ দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে শাকগুলো ছেড়ে দিতে হবে। মিনিট দুই তিনেক রেখেই গরম পানি থেকে উঠিয়ে ফেলুন। তারপর প্যানে তেল দিয়ে লবণ মাখানো চিংড়ি, পেঁয়াজ-রসুন, কাঁচা মরিচ দিয়ে ভেজে তুলে রেখে, সেই তেলেই বেশি আঁচে শাক আর প্রয়োজন মতো লবণ দিয়ে ভাজা ভাজা করতে হবে যাতে পানি না থাকে। এবার সব ভাজা উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে শিলপাটা বা মিক্সারে পিষে নিলেই ভর্তা একদম রেডি।
লাউয়ের হালুয়া
উপকরণ
কুচনো লাউ
কুচনো গাজর
মিল্কমেড
চিনির গুঁড়ো
ঘি
গোটা দারচিনি
সাদা তেল
এলাচ
দারচিনি গুঁড়ো
অল্প লবণ
প্রণালী
ননস্টিক কড়াইতে অল্প সাদা তেল দিয়ে, তাতে গোটা দারচিনি আর এলাচ ফোড়ন দিন। তারপর গাজর আর লাউ দিন। একটু ঘি, গুঁড়ো চিনি আর মিল্কমেড দিয়ে কম আঁচে নাড়তে থাকুন। নাড়তে নাড়তে যখন পানি একদম কমে যাবে ওপরে দারচিনির গুঁড়ো ও চেরির টুকরো দিয়ে পরিবেশন করুন। শেষপাতে দারুণ লাগবে খেতে।
কেএস/
রেসিপি
ম্যাংগো পুডিং তৈরির রেসিপি
আমের সিজনে অনেকেই আমের পাল্প ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করেন। সেই ম্যাংগো পাল্প দিয়েই ম্যাংগো পুডিং বানানো যাবে। আর আমের সিজনে তো ফ্রেশ আমই ব্যবহার করতে পারবেন। ছোট বাচ্চাদের জন্য এটি বেশ হেলদি একটি ডেজার্ট আইটেম। মাত্র ৪টি উপাদান দিয়েই ইয়াম্মি ইয়াম্মি ম্যাংগো পুডিং বানিয়ে নেয়া যায়। চলুন দেরি না করে রেসিপিটি জেনে নেই এখনই।
উপকরণ
ঘন দুধ- ১ কাপ
চিনি- স্বাদ অনুযায়ী ( আমি হাফ কাপ দেই )
আম- ২টি
ডিম- ২টি
ম্যাংগো পুডিং তৈরির পুরো প্রণালী
১. প্রথমে আম ছোট ছোট করে কেটে নিন। দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করুন এবং ঠাণ্ডা করে নিন।
২. এবার ব্লেন্ডার জগে আম, চিনি, দুধ ও ডিম সবকিছু দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন।
৩) মিশ্রণটি মোটামুটি ঘন ও থকথকে হবে। যদি বেশি ঘন হয়ে যায়, লিকুইড দুধ মিশিয়ে নিতে হবে।
৪. এবার একটি স্টিলের টিফিন বক্সে পুডিংয়ের মিশ্রণ ঢেলে নিতে হবে।
৫. বড় সসপ্যানে পানি ফুটতে দিন। এবার একটি স্ট্যান্ড প্যানে সেট করে তার উপর স্টিলের টিফিন বক্সটি রাখুন।
৬. বাটির ঢাকনা ভালোভাবে আটকাবেন এবং পানি যেন ভেতরে না যেতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
৭. চুলার আঁচ মিডিয়াম রাখুন, ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করে চেক করুন পুডিং জমেছে কি না।
৮. পুডিং জমে গেলে চুলা নিভিয়ে দিন। এরপর রুম টেম্পারেচারে ঠাণ্ডা করে নিতে হবে।
ব্যস, আমের পুডিং বানানো হয় গেলো! চাইলে ফ্রিজে রেখে ম্যাংগো পুডিং ভালোভাবে সেট করে নিতে পারেন। সেট হয়ে গেলে টিফিন বক্স থেকে পুডিংটি একটি প্লেটে সাবধানে উল্টিয়ে ঢেলে নিন। এবার ছুরি দিয়ে পিস পিস করে কেটে সার্ভ করুন। আর এটি ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা খেতে কিন্তু বেশি মজা লাগে। সব উপকরণগুলো বাসাতে থাকলে আজই বানিয়ে নিন দারুন মজাদার ডেজার্টটি।
জেএইচ
রেসিপি
নবাবী সেমাই রেসিপি
আমরা সবাই কম বেশি সেমাইয়ের সাথে পরিচিত। আমরা সবাই-ই সেমাই রান্না করতে জানি। কিন্তু আজ নিয়ে এলাম নবাবী সেমাই-এর রেসিপি। এটা এতটাই মজাদার যে, খেয়ে মনে হবে, আপনি যেন কোনো রাজাদের বাড়িতে রাজ ভোজনে আছেন! তাহলে চলুন যেনে নেই কী করে এই স্পেশাল নবাবীসেমাই-টি তৈরি করতে হয়।
উপকরণ
২ টেবিল চামচ ঘি
২ প্যাকেট লাচ্ছা সেমাই (প্রতি প্যাকেট ১৮০ গ্রাম করে)
১ কাপ চিনি
৩ টেবিল চামচ গুঁড়া দুধ
কাজু ও পেস্তা বাদাম ক্রাশ করা ১ টেবিল চামচ
ক্রিম তৈরির জন্য-
১ লিটার দুধ
১ কাপ কনডেন্স মিল্ক
১/২ কাপ গুঁড়া দুধ
১/২ কাপ ডানো অথবা নেসলে ক্রিম (সুপারশপে পেয়ে যাবেন)
৪ টেবিল চামচ কর্নফ্লাওয়ার
প্রণালী
১. একটি ফ্রাই প্যানে ঘি দিন। ঘি একটু গরম হয়ে এলে লাচ্ছা সেমাইটি নেড়েচেড়ে হালকা করে ভেঁজে নিন। কিছুটা ভাঁজা হয়ে গেলে চিনি দিয়ে দিন এবং ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
চিনি ভালো করে মিশে যাওয়ার পর গুঁড়া দুধ দিয়ে ৬-৭ মিনিট নাড়াচাড়া করে রান্না করতে হবে। সেমাইয়ের রঙটি হালকা বাদামি হয়ে এলে নামিয়ে রাখুন।
২. এরপর ক্রিম তৈরি করার পালা। ১ লিটার দুধকে জ্বালিয়ে ১/২ লিটার করে নিতে হবে। এখন চুলায় মিডিয়াম আঁচে এই দুধের মধ্যে দিয়ে দিন কনডেন্স মিল্ক এবং গুঁড়া দুধ।
ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর ক্রিম দিয়ে ভালোভাবে নাড়াচাড়া করে, কর্নফ্লাওয়ার দিয়ে হ্যান্ড বিটার দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে স্মুথ করে ফেলুন। ১০ মিনিট পর্যন্ত রান্না করতে থাকুন যা একটি ঘন ক্রিমে পরিনত হবে।
৩. এখন ভেঁজে রাখা সেমাইগুলো একটি সারভিং ডিসে ১/৪ ভাগ ছড়িয়ে তুলে নিন। এরপর পুরো সেমাইটির উপরে সব ক্রিমগুলো আলতোভাবে ঢেলে দিন। এখন ৪-৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
ঠাণ্ডা হয়ে আসলে বাকি সেমাইটুকু হাত দিয়ে উপরে ভালোভাবে ছড়িয়ে দিন। এখন এর উপরে কাজু ও পেস্তা বাদাম সুন্দর করে ছড়িয়ে দিন।তৈরি হয়ে গেল মজাদার নওয়াবি সেমাই। উপভোগ করুন সবাই মিলে।
জেএইচ
রেসিপি
রুই মাছের ডিমের কাবাব রেসিপি
মাছের কাবাব তো অনেকেই খেয়েছেন। মাছের ডিম দিয়ে তৈরি কাবাব কি খেয়েছেন? মাছের ডিমের কাবাব! আজ ভিন্ন স্বাদের রুই মাছের ডিমের কাবাব তৈরির পদ্ধতি জানাবো। খুবই সহজ ও সুস্বাদু! তো চলুন, জেনে নেই কীভাবে তৈরি করবেন মাছের ডিমের কাবাব।
উপকরণ
রুই মাছের ডিম- ৩ কাপ
পেঁয়াজ কুচি- ২ কাপ
কাঁচামরিচ কুচি- ৩ চা চামচ
চিলি ফ্লেকস- ১ চা চামচ
হলুদ গুঁড়া- ১ চা চামচ
জিরা গুঁড়া- ১/২ চা চামচ
কাবাব মসলা- ১/২ চা চামচ
লেবুর রস- সামান্য
লবণ- পরিমাণমতো
তেল– ভাজার জন্য
চালের গুঁড়া অথবা কর্ণফ্লাওয়ার- ১/২ কাপ
প্রস্তুত প্রণালী
১. প্রথমে একটি পাত্রে মাছের ডিমের সাথে একে একে সব উপকরণ মিশিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখবো।
২. তারপর মাখানো মাছের ডিম কাবাবের শেইপ করে নিতে হবে।
৩. এবার একটি প্যানে তেল গরম করে তাতে কাবাবগুলো দিয়ে অল্প আঁচে বাদামী করে ভেজে নিবো।
৪. এরপর নামিয়ে গরম ভাত কিংবা পোলাওয়ের সাথে পরিবেশন করুন রুই মাছের ডিমের কাবাব।
এই কাবাব খেতে যেমন মজাদার, বানানোও খুব সহজ। তো আজই তৈরি করুন এবং উপভোগ করুন ভিন্নধর্মী এই কাবাবটি।
জেএইচ