আন্তর্জাতিক
ইমরান খানের দল নিষিদ্ধ নিয়ে পাকিস্তানকে যে বার্তা দিলো যুক্তরাষ্ট্র
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে(পিটিআই) নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে দেশটির ক্ষমতাসীন সরকার। তবে শাহবাজ শরিফ সরকারের এই পরিকল্পনা ভালভাবে নিচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন সরকার। বরং এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে পাকিস্তান সরকারের এই পরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
স্থানীয় সময় সোমবার(১৬ জুলাই) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেন পাকিস্তানি সাংবাদিক জলিল আফ্রিদি। তার প্রশ্ন ছিলো–‘আমার প্রথম প্রশ্ন হল ইমরান খান গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালতের অধিকাংশ বিচারক তাকে সমর্থন করেছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক সহিংসতায় এক হাজার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তাদের মধ্যে ৬০০ জন নিজেদের দোষ স্বীকার করেছেন। ৪০০ জনকে অভিযুক্ত করে তাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানে রাজনৈতিক সহিংসতার এক বছরেরও বেশি সময় পর পাকিস্তানে একই ধরনের সহিংসতার জন্য আজ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং আজ তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।’
জলিল আফ্রিদি আরও জানতে চান, ‘ইমরান খানের রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হচ্ছে এবং পাকিস্তান সরকার সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মার্কিন কংগ্রেসের প্রায় সব সদস্যই পাকিস্তান সরকারের পক্ষে কথা বলছে। আপনাকে এই জিনিসগুলি দেড় বছর ধরে জিজ্ঞাসা করছি, এই একই প্রশ্নগুলি। কিন্তু সেখানে আপনি গণতন্ত্রের জন্য যে মন্তব্য করছেন, তা রাজনৈতিকভাবে করছেন না- কেন এমন হলো? প্রশ্ন হলো-পাকিস্তানের মতো মিত্র দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক সহিংসতা বা গণতন্ত্র বা আইনের শাসন সংক্রান্ত বিষয়ে আপনাদের একই ধরণের অনুভূতি নেই কেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমার মনে হয় আপনি এই জায়গা থেকে এই প্রশ্নটি অনেকবার করেছেন যেখানে আমি অবশ্যই বলেছি যে আমরা পাকিস্তানসহ যে কোনও দেশের রাজনৈতিক সহিংসতাকে ঘৃণা করি। আমরা এর বিরুদ্ধে কথা বলেছি এবং এর নিন্দা করেছি। আমরা পাকিস্তান এবং বিশ্বের প্রতিটি দেশে আইনের শাসনকে সমর্থন করি। আমরা গণতান্ত্রিক নীতি এবং জনগণের মৌলিক মানবাধিকার এবং গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি সম্মান দেখতে চাই। পাকিস্তানের বেলায়ও এটি সত্য, এটি বিশ্বের সর্বত্র সত্য। এটি এমন কিছু যা আমি একাধিক বার বলেছি।’
আমরা সরকারের দেওয়া প্রতিবেদন এবং বিবৃতি দেখেছি। আমরা বুঝতে পারি এটি একটি জটিল প্রক্রিয়ার সূচনা, তবে অবশ্যই একটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা আমাদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়।’
প্রেস ব্রিফিংয়ে জাহানজায়েব আলী নামে আরেক পাকিস্তানী সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল-পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের পর ব্যাপক কারচুপির অভিযোগে মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং অনিয়ম তদন্ত করার দাবি জানায়। এরই ধারাবাহিকতায় সুপ্রিম কোর্ট এখন ২০টি আসন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের হাতে তুলে দিয়েছে। কিন্তু এই ধরণের তদন্ত কী স্টেট ডিপার্টমেন্ট দেখছিল?
জবাবে মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা যেমনটি বলেছি, আমরা মানবাধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাসহ সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক নীতির শান্তিপূর্ণ সমুন্নত সমর্থন করি। আমরা আইনের শাসন এবং আইনের অধীনে সমান ন্যায়বিচার সহ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং বৃহত্তর নীতিগুলিকে সমর্থন করি। যেহেতু সেই অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়াগুলি চলতে থাকলে আমরা এই সিদ্ধান্ত এবং পরবর্তী সিদ্ধান্তসহ আদালতের পরবর্তী পদক্ষেপগুলো পর্যবেক্ষণ করবো।
প্রসঙ্গত, সোমবার(১৫ জুলাই) পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এক সংবাদ সম্মেলনে ইমরান খানের দল নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেন। তিনি জানান, দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলে পিটিআইয়ের অস্তিত্ব রাখা যাবে না।
এমআর//
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//