জাতীয়
হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেনি : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘাত ও সহিংসতার প্রেক্ষাপটে আইন প্রয়োগকারী অভিযানের সময় হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেনি। মূলত নজরদারি, নির্দিষ্ট স্থানে আটকা পড়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মীদের উদ্ধার এবং জরুরি পরিস্থিতিতে অগ্নিনির্বাপক সুবিধা দেয়ার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার।
রোববার (২৮ জুলাই) রাতে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও সহিংসতার ঘটনায় নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ও কিছু আন্তর্জাতিক অংশীদারের উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়টি লক্ষ্য করেছে সরকার। বিশেষ করে প্রোপাগান্ডা, অপতথ্য ও গুজব প্রচারের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে অকুণ্ঠ সমর্থন ও পরিস্থিতি সম্পর্কে সম্যক ধারণার জন্য সরকার কৃতজ্ঞ। সরকার সব আন্তর্জাতিক অংশীদারদের আশ্বস্ত করতে চায় যে, সরকার এবং জনগণের সময়োপযোগী এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কারণে সামগ্রিকভাবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে।
নিহতদের পরিবারের জন্য সরকার সহায়তার হাত বাড়িয়েছে উল্লেখ করে বলা হয়, প্রাণহানির জন্য ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন প্রধানমন্ত্রী। নিহতদের পরিবারের সদস্যদের চাকরির নিশ্চয়তা দিয়েছেন তিনি। ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের যে ভোগান্তি হচ্ছে, তা সুরাহায় অঙ্গীকারবদ্ধ সরকার। এটা খুবই পরিষ্কার যে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের ছাত্র সংগঠনগুলো এ আন্দোলনের ওপর চেপে বসে সন্ত্রাসের রাজত্ব ছড়িয়েছে। পাশাপাশি তারা ব্যাপক প্রোপাগান্ডা ও অপতথ্য ছড়িয়েছে।
গেলো ৫ জুন কোটাপ্রথা পুনর্বহালে হাইকোর্টের রায়ের পর কয়েক সপ্তাহ ধরে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। তারা সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবি জানিয়ে এ আন্দোলন করে আসছিলেন। ২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটাপ্রথা সম্পূর্ণভাবে বাতিল করে দেয় সরকার। সরকারের সুস্পষ্ট নির্দেশনা পেয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো ছাত্রদের আশ্বস্ত করেছিল যে তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে পারবেন এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা উপভোগ করবেন। এ সময়ে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দিতে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করেছিল সরকার। একটি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনায় দায়ীদের জবাবদিহিতায় নিয়ে আসতে অঙ্গীকারবদ্ধ সরকার। এরই মধ্যে হাইকোর্টের এক বিচারকের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশনও গঠন করা হয়েছে।
অব্যাহত প্রোপাগান্ডার মুখে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সরকার কিছু বিষয়গুলো তুলে ধরতে চায় উল্লেখ করে এতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ ও সুনির্দিষ্ট আন্দোলনকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করার কোনো সুযোগ নেই। নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে হত্যা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পর নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে ‘দেখামাত্র গুলি’ করার একটি ঘটনাও ঘটেনি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের সময় হেলিকপ্টার থেকে গুলির ঘটনাও ঘটেনি। আইন প্রয়োগকারী অভিযানের সময় হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেনি। মূলত নজরদারি, নির্দিষ্ট স্থানে আটকা পড়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মীদের উদ্ধার এবং জরুরি পরিস্থিতিতে অগ্নিনির্বাপক সুবিধা দেওয়ার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়েছে। একটি সাঁজোয়া যান সাবধানতাবশত মোতায়েন করার পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। সেটিতে জাতিসংঘের লোগো ঢেকে দেওয়ার জন্য রঙের ব্যবহার হলেও তা দৃশ্যমান ছিল। যদিও প্রশ্নবিদ্ধ যানটি দ্রুত সেবা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
ব্রডব্যান্ড এবং মোবাইল ইন্টারনেট–সংযোগ এখন পুরোপুরি চালু হয়েছে। অস্থিরতা ও সহিংসতার পুরো সময়কালে ভূমিভিত্তিক এবং মোবাইল টেলিযোগাযোগসহ যোগাযোগের অন্যান্য মাধ্যমগুলো কার্যকর ছিল।
প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলো কারফিউ ঘণ্টার সময় অন্যান্য জরুরি পরিষেবা প্রদানকারীদের সঙ্গে মিডিয়া কর্মীদের জন্য ছাড়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সরকার যে কোনো মূল্যে জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকারকে সমুন্নত রেখেছে এবং অব্যাহত রাখবে।
জেএইচ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ