ক্যাম্পাস
শিক্ষার্থীদের মুক্তি ও দ্রুত সব ক্যাম্পাস খুলে দেয়ার দাবি শিক্ষকদের
কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা-মামলা ও নির্বিচারে গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাজ’। সমাবেশ থেকে আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তি ও দ্রুত সব ক্যাম্পাস খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
সোমবার (২৯ জুলাই) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে শিক্ষকদের এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সাইদ ফেরদৌস।
ড. সাইদ ফেরদৌস বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রতিপক্ষ ভাবা হচ্ছে। সেই শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের খোলনলচে পাল্টে দিতে এসেছে। স্বাধীনতার পর থেকে গেলো পাঁচ দশকে বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রে যে লাগাতার নৈরাজ্য চলেছে, হলগুলোতে যে সুপরিকল্পিত নিপীড়ন চলেছে, সেসব পাল্টে নতুন ইতিহাস লেখার পথ তৈরি করেছেন শিক্ষার্থীরা। সেই শিক্ষার্থীদের প্রতিটি দাবির সঙ্গে আমরা সমর্থন জানাই।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের মৃত্যুতে জড়িতদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হোক। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে শিক্ষার্থীদের দাবিকে সমর্থন করি। কিন্তু সবার আগে হত্যা বন্ধ হোক।
সমাবেশে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল হাসিব চৌধুরী বলেন, ১৯৬৯ সালে অধ্যাপক শামসুজ্জোহা ছাত্রদের রক্ষা করতে গিয়ে শহীদ হয়েছিলেন। আমরা এখানে যারা জমায়েত হয়েছি আমরা শহীদ শামসুজ্জোহার উত্তরসূরি। আমাদের যে সন্তানরা যে ছাত্ররা অধিকারের জন্য বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে লড়াই করছে তারাই হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরসূরি। এ লড়াইয়ের ফলাফল কী হবে সেটা ইতিহাসই আমাদের নির্দেশ করছে। আর আমাদের করণীয় কী সেটা ইতিহাস আমাদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহমদ বলেন, ছাত্রদের ওপর হামলা-মামলা বন্ধ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় ফিরতে দিতে হবে।
এ সময় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুশাদ ফরিদী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক সায়মন রেজা, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ নাহিদ নেওয়াজ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মাসুদ ইমরান, ঢাবির আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিভাগের অধ্যাপক ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস, গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রীতু শরমিন, স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তামান্না মাকসুদ ও ঢাবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুনসহ প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে দেশাত্মবোধক গানে গানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত স্থানগুলোতে পদযাত্রা করেন শিক্ষকরা। এর আগে শাহবাগে জড়ো হয়ে সেখান থেকে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আসেন তারা। কর্মসূচির শুরুতে তারা এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
এসি//
ক্যাম্পাস
খুলছে জবি, প্রাথমিকভাবে ক্লাস চলবে অনলাইনে
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি)১৮ আগস্ট থেকে অনলাইন ক্লাস শুরু হবে।আজকেই ছাত্রীদের জন্য বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হল খুলে দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৮তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম।
জানা যায়, ১৮ আগস্ট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস চলবে। অনলাইন ক্লাস শুরুর আগে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, ছাত্র উপদেষ্টা ও অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ আলোচনায় বসবেন।
এক সিন্ডিকেট সদস্য গণমাধ্যমকে জানান,তারা ক্যাম্পাসে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। তাই প্রাথমিকভাবে অনলাইন ক্লাস চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরবর্তীতে ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হলে ক্যাম্পাসে এমনিই ছাত্র রাজনীতি থাকবে না বলে তার মনে হচ্ছে, তবে রাজনীতি নিষিদ্ধ হলে সেটা নতুন সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।
প্রসঙ্গত, সিন্ডিকেট সভায় আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা খরচসহ তাদের খোঁজ নেওয়ার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আই/এ
শিক্ষা
চুয়েটে নিষিদ্ধ হলো ছাত্ররাজনীতি
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) নিষিদ্ধ করা হয়েছে সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি।
বুধবার (০৭ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়টির ১৩৬তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ১৩৬/১(ঘ) অনুযায়ী অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক/কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সকল ধরনের রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ করা হলো। এ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় বিধান অনুযায়ী শাস্তি প্রদান করা হবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সে দাবি আরও জোরালো হয়। এমন প্রেক্ষাপটে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে চুয়েট।
এসি//
শিক্ষা
আজ থেকে শুরু একাদশ শ্রেণির ক্লাস
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস মঙ্গলবার (০৬ আগস্ট) হওয়ার কথা ছিল। কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিস্থিতিতে পিছিয়ে তা শুরু হচ্ছে আজ।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি বিভিন্ন কলেজ ও মাদ্রাসাগুলোকে বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) থেকে একাদশের ক্লাস শুরু করতে বলেছে। এরইমধ্যে অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকদের এ নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সব উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষককে পাঠানো চিঠিতে কমিটি বলছে, বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) থেকে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হবে।
এদিকে প্রথম থেকে তৃতীয় ধাপে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তির সময় বুধবার (০৭ আগস্ট) শেষ হয়েছে। তবে, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির চতুর্থ ধাপের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের। তিন ধাপে আবেদন গ্রহণ ও শিক্ষার্থী নির্বাচনের পরও কিছু কলেজ মাদ্রাসায় সিট খালি থাকায় ও কিছু শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য নির্বাচিত হতে না পারায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, যেসব শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তির আবেদন করেননি বা আবেদন করে কলেজ সিলেকশন পাননি তারা এবং যেসব শিক্ষার্থী চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েও কলেজে ভর্তি হতে পারেননি বা নিশ্চায়ন করতে পারেননি তারা চতুর্থ ধাপে ভর্তির আবেদন করতে পারবেন।
অনলাইনে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে (https://www.xiclassadmission.gov.bd) প্রবেশ করে নির্দেশিকা অনুসারে শিক্ষার্থীদের আবেদন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের কলেজের আসন সংখ্যা দেখে ৫টি থেকে ১০টি কলেজে আবেদনের চয়েজ দিতে পারবেন। আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ টাকা। ব্যাংক কার্ড ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এ ফি পরিশোধ করতে হবে।
জানা গেছে, ১১ থেকে ১৪ আগস্ট (বুধবার) রাত ১০টা পর্যন্ত চতুর্থ বা সর্বশেষ ধাপের আবেদন গ্রহণ করা হবে। ১৭ আগস্ট (শনিবার) রাত ৮টায় চতুর্থ ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে। ১৮ আগস্ট থেকে ১৯ আগস্ট (সোমবার) রাত ৮টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চায়ন করতে হবে। চতুর্থ ধাপে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা ২০ আগস্ট (মঙ্গলবার) কলেজে ভর্তি হতে পারবেন।
এসি//