অপরাধ
১৩ দিনে গ্রেপ্তার ১০ হাজারের বেশি
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আরও চারশত তিনজন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ২৮ জুলাই দুপুর থেকে ২৯ জুলাই দুপুর পর্যন্ত সময়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত গেলো ১৩ দিনে গোটা বাংলাদেশ থেকে১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বিএনপি-জামায়েত নেতাকর্মীরাই বেশি রয়েছে বলে জানা যায়।
সোমবার (২৯ জুলাই) পর্যন্ত গোটা দেশে মোট ১০ হাজার ২৮ জন গ্রেপ্তারের তথ্য পাওয়া গেছে। গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা ১৭ জুলাই থেকে দেশের মহানগর, জেলা ও থানা-পুলিশ সূত্র থেকে মামলা ও গ্রেপ্তারের তথ্য সংগ্রহ করছেন।
কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্রে করে ১ জুলাই থেকেই শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিক কর্মসূচি শুরু করেন। ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে ছত্রলীগের সংঘর্ষ বাধলে বিক্ষোপ গোটা দেশে ছড়িয়ে পরে। এর পরদিন থেকে এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা ও ঢাকার বাহিরে দেশের বিভন্ন জায়গায় ভাঙচুর, হামলা, অগ্নিসংযোগ ও হতাহতের ঘটনা ঘটে । দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এসব ঘটনায় মামলা করে গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এখন পর্যন্ত বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী এবং দল দুটির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদেরই একটি বড় অংশ গ্রেপ্তার হয়েছে। পাশাপাশি বিএনপির সঙ্গে সংযোগ করে আন্দোলনে থাকা অন্যান্য দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদেরও একটা বড় অংশ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।পুলিশের দাবিতাদেরই কেবল গ্রেপ্তার করা হচ্ছে যারা সহিংসতার ঘটনায় জড়িত ছিল।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সূত্র জানিয়েছে, রাজধানীতে রোববার দুপুর ১২টা থেকে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫৬ জনকে। এ নিয়ে রাজধানীতে মোট ২ হাজার ৮২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজধানীতে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত মোট মামলা হয়েছে ২৪৩টি।
মহানগরের বাইরে ঢাকার ধামরাই, সাভার, আশুলিয়া, কেরানীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ ও দোহার থানায় গতকাল পর্যন্ত মামলা হয়েছে ২৩টি। এসব স্থানে সোমবার সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে র্যাব জানিয়েছে, তারা এখন পর্যন্ত সারা দেশে ৩৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে ঢাকায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ৮৩ জন, ঢাকার বাইরে ২৫১ জন।
গেলো রোববার দুপুর থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নারায়ণগঞ্জে আরও ৫১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময়ে সেখানে আরও দুটি মামলা হয়েছে। এ নিয়ে ২৯টি মামলায় নারায়ণগঞ্জে মোট ৫৬৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গাজীপুরেও নতুন করে দুটি মামলা হয়েছে। গেলো ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২২ জনকে। এ নিয়ে গাজীপুরে মোট ৪২টি মামলায় ৪৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাদারীপুরেও নতুন করে দুটি মামলা হয়েছে। এই জেলায় এ পর্যন্ত ১৩টি মামলায় ১১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলায় ৩১ মামলায় রোববার আরও ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বেশিরভাগ বিএনপির নেতা-কর্মী। এ নিয়ে মহানগর ও জেলায় মোট ৯৫৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফেনীতে রোববার বিকেল থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত বিএনপির আরও সাতজন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে ফেনী সদর মডেল থানায় করা দুটি বিস্ফোরকদ্রব্য ও নাশকতার মামলায় গেলো ১১ দিনে মোট ৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আলাল উদ্দিন অভিযোগ করেন, তাদের দেড় শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরে মামলা ও গ্রেপ্তার তুলনামূলক বেশি হচ্ছে রাজশাহী, রংপুর ও বগুড়ায়। রাজশাহী মহানগর ও জেলা মিলিয়ে এ পর্যন্ত ১৭টি মামলা হয়েছে। সেখানে নতুন করে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজশাহীতে এ নিয়ে মোট গ্রেপ্তার ৩৮৩ জন। বগুড়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই জেলায় ১৫টি মামলায় সোমবার পর্যন্ত ১৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রংপুরে নতুন করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২৪ জনকে। রংপুর মহানগর ও জেলা মিলিয়ে সোমবার পর্যন্ত ২২টি মামলায় ২৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে রংপুর মহানগর এলাকায় ১৮৬ জন এবং জেলায় ৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
কোথাও কোথাও কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে মামলা না হলেও পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তার চলছে। যশোরে পুরোনো মামলায় গেলো ২৪ ঘণ্টায় ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১৭ জুলাই থেকে সোমবার (২৯ জুলাই) পর্যন্ত সেখানে গ্রেপ্তার হয়েছেন ১১৫ জন।
জেডএস/
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ