চট্টগ্রাম
‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগানে উত্তাল চট্টগ্রাম আদালত পাড়া
‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগানের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৩১ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে আইনজীবী দোয়েল ভবন ও আশপাশের এলাকায় আন্দোলনকারীরা অবস্থান করছেন। এ সময় তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন আইনজীবীরাও।
এদিকে, আইনজীবী দোয়েল ভবনের আশেপাশের এলাকায় শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিলেও তার কিছু দূরে আইনজীবী ভবনের সামনে অবস্থান নেন আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা। বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। যেখানে আওয়ামীপন্থি জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা বক্তব্য রাখছেন।
এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার(৩০ জুলাই) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি ফেসবুক পোস্টে লেখেন, সারা দেশে ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা, গণপ্রেপ্তার, হামলা, মামলা, গুম-খুনের প্রতিবাদ, জাতিসংঘ কর্তৃক তদন্তপূর্বক বিচারের দাবিতে এবং ছাত্র সমাজের ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দেশের সব আদালত, ক্যাম্পাস এবং রাজপথে বুধবার ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালন করা হবে। আমরা সারা দেশের শিক্ষক, আইনজীবী, শিল্পী, মানবাধিকার কর্মী, পেশাজীবী, শ্রমজীবী ও সব নাগরিককে আমাদের কর্মসূচি পালনে সর্বাত্মক সহযোগিতা ও আমাদের দাবি আদায়ের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করতে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।
শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বুধবার সকাল থেকে কোর্ট হিল ও আশপাশের এলাকায় বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যরাও সেখানে অবস্থান নেন। কোর্ট হিল এলাকায় যাতায়াতকারীদের তল্লাশি ও নজরদারিতে রেখেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
কঠোর নিরাপত্তায়ও সকাল সাড়ে ১০টা থেকে কোর্ট হিলের নিচের সড়ক অর্থাৎ জেলা পরিষদ ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। পরবর্তী সময়ে আইনজীবীদের একটি মিছিল বেলা ১১টার দিকে আদালত পাড়া থেকে বেরিয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আদালতের ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর তারা দোয়েল ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
আন্দোলনে আসা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে কোটা সংস্কারের জন্য আন্দোলন করে আসছিলাম। প্রথমে আমরা ক্যাম্পাসের ভেতরেই কর্মসূচি পালন করেছি। কিন্তু সরকার আমাদের দাবি কানে নেয়নি। পরে অনেকের প্রাণহানির পর কোটা সংস্কার করে আদালত রায় দিয়েছেন। কিন্তু এখন শিক্ষার্থী পরিচয় পেলেই পুলিশ গ্রেপ্তার করছে। বাসায়-বাসায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। রিমান্ডে নিয়ে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। আমরা এসবের প্রতিবাদ জানিয়ে কর্মসূচি পালন করছি।
আইনজীবী ভবনের সোনালী ব্যাংকের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা অ্যাডভোকেট এস এম দিদার উদ্দিন বলেন, আদালতের রায়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ হয়েছে। কিন্তু তারা তারপরও কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। যেটি অযৌক্তিক। আজকে তারা আদালত এলাকায় কর্মসূচি পালন করছে। কিন্তু আমরা আদালত পাড়াকে সুরক্ষিত রাখতে কর্মসূচি পালন করছি।
এসি//
চট্টগ্রাম
কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন দুই সাইকেল আরোহী
কর্ণফুলীতে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দুই সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা একটার দিকে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর বাংলাবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নন্দনালী গ্রামের কামাল মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল মণ্ডল (১৮) ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট পাগলা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল জলিলের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (১৬)। তারা কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চরপাথরঘাটার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে তারা তিনজন সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
এএম/
চট্টগ্রাম
রাতেও ট্রাফিক সামলাচ্ছেন ছাত্রীরা
সরকার পতনের পরে চট্রগ্রামে নগরীর থানাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। এ অবস্থায় নগরীর রাস্তায় নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ। দিনভর রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন সরকার পতনের আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা। তবে দিন পেরিয়ে রাত হলেও, রাস্তায় ছাত্রদের পাশপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় ছাত্রীদেরও।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার অলী খা মসজিদ মোড় এলাকায় এমন চিত্র দেখতে পায় গণমাধ্যম।
নগরীর অলী খা মসজিদ মোড়ে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইজা তাবাসসুম বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এখানে আসা। সকালে শুনেছি সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই তারা কাজ করতে এসেছেন।
আসিফুর রহমান নামে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানান, শিফট সিস্টেম করে ছাত্ররা কাজ করছে। এখন তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের ইচ্ছায় তারা এখানে এসেছেন।
আই/এ
চট্টগ্রাম
‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিম ও তার ছেলে গণপিটুনিতে নিহত
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত ‘বালুখেকো’ খ্যাত চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তার ছেলে নায়ক শান্ত খান গনপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বালিয়া ইউনিয়নের ফরক্কাবাদ বাজারে এসে জনগণের তোপের মুখে পড়েন তারা। এরপর সেখানে নিজের পিস্তল থেকে গুলি করে উদ্ধার হয়ে আসতে পারলেও পার্শ্ববর্তী বাগাড়া বাজারে এসে জনতার মুখোমুখি হয়। তারপর সেখানে জনগণের পিটুনিতে নিহত হোন সেলিম খান ও তার ছেলে শান্ত খান।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম গণমাধ্যমে বলেন, তাদের মৃত্যুর বিষয় জেনেছি। তবে কেউ খবর দেয়নি। আর জানমালের নিরাপত্তার কারণে সেখানে কাউকে পাঠানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেলিম খান চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীতে শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। এসব ঘটনায় সে কারাভোগ করেন এবং দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। সেলিম খান একজন আলোচিত প্রযোজকও। তিনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার।
এছাড়া সেলিম খানকে পদ্মা-মেঘনার চর থেকে বিভিন্ন সময় বালু তোলাসহ নানা কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
এএম/