বাংলাদেশ
গণতন্ত্র ব্যতীত ক্ষমতায় আসার অন্যকোনো উপায় নেই: প্রধানমন্ত্রী
কেউ যদি হত্যাযজ্ঞ, ক্যু বা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে চায়, তবে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে। প্রয়োজনে ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট হবে। গণতন্ত্র ব্যতীত ক্ষমতায় আসার অন্যকোনো উপায় নেই। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গেলো মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভয়েস অব আমেরিকার ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকারটি প্রচার করা হয়। জাতিসংঘের ৭৭তম অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থানকালে ভয়েস অব আমেরিকাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এস কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের প্রধান শতরূপা বড়ুয়া এই সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। এসময় বাংলাদেশের ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, মিডিয়ার স্বাধীনতা, আগামী নির্বাচন ও রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন শতরূপা বড়ুয়া। প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী এই সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ও নানা বিষয়ে কথা বলেন। আওয়ামী লীগের শাসনামলের নানা অর্জনও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামরিক শাসক হিসেবে এখন আর ক্ষমতায় আসার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার কয়েকবছর পর স্বৈরশাসকরা এসে ক্ষমতা দখল করে নেয়। জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডে যে গোষ্ঠী জড়িত ছিল তারা জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান বানিয়েছে। সেনাপ্রধানের পদে থেকে জিয়া নিজেকে রাষ্ট্রপ্রধানও ঘোষণা করেছে। এরপর এরশাদও সামরিক শাসক হিসেবে ক্ষমতায় এসেছে। এখন আর সেই সুযোগ নেই। আমরা গণতন্ত্রের সুরক্ষায় কঠোর আইন করেছি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জিয়া সেনাপ্রধানের পদে থেকে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে। পরবর্তীতে নিয়মকানুন পরিবর্তন করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। সেনাবাহিনীর রুলস অ্যান্ড রেগুলেশন ভায়োলেট করে। জিয়া নিহত হওয়ার পর এরশাদও একইভাবে ক্ষমতায় আসে। পরবর্তীতে আমরা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছি। তবে স্বৈরাচারের পতনের পরও সেবার সুষ্ঠু নির্বাচন হলো না। প্রশাসন, সেনা, গোয়েন্দা সংস্থাসহ সব দফতরে স্বৈরশাসকদের সময়কার লোকজন প্রভাব বিস্তার করে থাকায় নির্বাচনের ফলাফলে কোনো দলই মেজরিটি পায়নি। পরে জামাতে ইসলামীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় এলো। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের যথেষ্ট সংগ্রাম করতে হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ এর নির্বাচনের পর থেকে দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। সংবিধানের অনুচ্ছেদের ৭-এ লেখা আছে প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ। আমরা সেখানে আরেকটা ধারা যুক্ত করেছি। ক্ষমতায় থাকা নির্বাচিত কাউকে হটিয়ে যদি কেউ হত্যাযজ্ঞ, ক্যু বা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে চায়, তবে তার শাস্তি হবে।
ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-এর অপপ্রয়োগের ফলে বাংলাদেশে একধরণের ভয়ের সংস্কৃতি চালু হয়েছে যার ফলে মিডিয়াগুলো ব্যাপক সেলফ সেন্সরশিপ চর্চা করছে শতরূপা বড়ুয়ার এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে যখন আমি ক্ষমতায় আসি তখন দেশে একটিমাত্র টেলিভিশন, একটি রেডিও ও সামান্য কয়েকটি পত্রিকা ছিল। আমি সরকারে আসার পর গণমাধ্যমে বেসরকারি খাতের অন্তর্ভুক্তি উন্মুক্ত করে দিলাম। এখন দেশে ৪৪টি টেলিভিশনের অনুমোদন আছে এবং ৩২টি চালু আছে, এসব চ্যানেলে টক শো-তে বক্তারা সরকারের বিভিন্ন সমালোচনা করছেন। সত্য-মিথ্যা মিলিয়ে নানা কথা বলছেন তারা। সব কথা বলার পর কেউ যদি বলে যে আমাকে কথা বলতে দিলো না, তার কি জবাব আছে?
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ