বাংলাদেশ
পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের অভিযানে ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত
ইসরায়েলের অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে এ বছর দেশটির সেনাবাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন ১০০ ফিলিস্তিনি। সবশেষ গত শনিবার পূর্ব জেরুজালেমে একজন ১৮ বছর বয়সী তরুণকে গুলি করে হত্যা করা হয়। জেনিন শহরের একটি বাড়িতে মিসাইল ছুড়ে একজন সন্দেহভাজন বন্দুকধারীসহ আরও তিনজনকে হত্যা করা হয়।
শনিবার (১ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা বিবিসি’র এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এই বছরটিতে এখন পর্যন্ত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের জন্য ২০১৫ সালের পর থেকে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বেশিরভাগই ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী ও বেশ কয়েকজন সশস্ত্র ইসরায়েলি বেসামরিক লোকদের গুলিতে নিহত হয়।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো শঙ্কা প্রকাশ করছে এবং তাদের পরিসংখ্যান বলছে যে নিহত ফিলিস্তিনিদের প্রায় এক পঞ্চমাংশ শিশু, যাদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ হচ্ছে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোর। পশ্চিম তীরে নিহত সর্বকনিষ্ঠ ফিলিস্তিনি ছিলেন ১৪ বছর বয়সী মোহাম্মদ সালাহ। গত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হয় সালাহ।
এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ সপ্তাহে একটি সাত বছর বয়সী ছেলের হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হওয়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখার আহ্বান জানিয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনী শিশুটির ভাই পাথর ছোড়ার অভিযোগে ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়েছিল তার মৃত্যুর আগে। যদিও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, প্রাথমিক তদন্তে অভিযান ও ছেলেটির মৃত্যুর মধ্যে কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।
নিহতদের তালিকায় রয়েছে জঙ্গি গোষ্ঠীর বন্দুকধারী, কিশোর ও যুবক যারা কথিত পাথর বা পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের পরে গুলিবিদ্ধ হয়। নিরস্ত্র বেসামরিক লোক, পথচারী, বিক্ষোভকারী এবং ইসরায়েলি বসতিবিরোধী কর্মীরা। ইসরায়েলি সৈন্যদের ওপর ছুরি হামলা বা অন্য অস্ত্র নিয়ে সন্দেহভাজন হামলাকারী ব্যক্তিরাও রয়েছেন এ তালিকায়।
ফিলিস্তিনের কর্মকর্তারা অভিযোগ করছেন যে, ‘মৃত্যুদণ্ডের ক্ষেত্র’ বানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গত বসন্তে, আরব ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের হামলায় ১৬ জন ইসরায়েলি ও দুইজন বিদেশি নিহত হন। এরপর থেকেই পশ্চিম তীরে প্রায় প্রতিরাতে সেনা অভিযান
অব্যাহত রাখে ইসরায়েল। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছিলেন যে তারা ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসবাদের হুমকি মোকাবেলা করবে। জেনিন ও নাবলুসের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অভিযান চলাকালে প্রায়শই তরুণ, সদ্য সশস্ত্র বিদো্রহীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
যদিও উত্তর পশ্চিম তীরে নিরাপত্তাহীন পরিবেশের জন্য ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন একে অপরকে দোষারোপ করছে।
একটি বিবৃতিতে ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) বলেছে যে ‘সহিংস দাঙ্গা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ দমনে তারা গুলি চালায়। তাদের দাবি, একজন ফিলিস্তিনি নিহত হলেও সামরিক বাহিনীর তদন্ত টিম কাজ করে, যে আসলে প্রকৃত ঘটনা কি ছিল তা খুঁজে বের করার জন্য। যদি অভিযানে নিহত হতো তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে অপরাধ তদন্ত করে দেখা হতো না’।
গত আগস্টে, জাতিসংঘের তৎকালীন মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান মিশেল ব্যাচেলেট বলেছিলেন যে অনেক ক্ষেত্রে ‘জবাবদিহিতার অভাব’ রয়েছে। রয়েছে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগও।
১৯৬৭ সালে ৬ দিনের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় পশ্চিম তীর দখল করে নেয় ইসরায়েল। এরপর থেকে বিভিন্ন দফায় সেখানে বসতি স্থাপন করেছে দেশটি। পশ্চিম তীরে বর্তমানে প্রায় ছয় লাখ ইসরায়েলি ইহুদির বাস। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এটাকে অবৈধ বলে বিবেচনা করা হয়।
অনন্যা চৈতী
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ