বাংলাদেশ
নভেম্বরে আসছে ১৫ কোচ, ২০২৩’এ হবে উদ্বোধন
চলতি বছরের (২০২২ সাল) ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর এবার দ্বিতল বিশিষ্ট এ সেতুর নিচ দিয়ে চলাচল করবে ট্রেন। এরই মধ্যে ট্রেন চলাচলের দিনক্ষণও ঠিক হয়েছে। ২০২৩ সালের জুনে উদ্বোধন হবে ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প’। ১৭২ কিলোমিটার এ রেলপথ ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যাবে যশোর।
প্রথম ধাপে চালু হবে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা পর্যন্ত। ৮২ কিলোমিটার এ রেলপথ ২০২৩ সালের জুনে খুলে দিতে পুরোদমে কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। দেশে একদিকে যেমন প্রস্তুত হচ্ছে রেলপথ, অন্যদিকে এই পথে ট্রেনে যাত্রী পরিবহনে চীনে প্রস্তুত হচ্ছে কোচ।
গণমাধ্যমকে বাংলাদেশ রেলওয়ে জানিয়েছে, এ প্রকল্পের আওতায় ১০০টি আধুনিক প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ (রেল কোচ) সংগ্রহ করা হবে। এগুলো নির্মিত হচ্ছে চীনে। একদিকে রেলপথ নির্মাণকাজ এগিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে চীনে তৈরি হচ্ছে রেল কোচ। ১০০টি প্যাসেঞ্জার ক্যারেজের মধ্যে প্রথম লটে ১৫টি চলতি বছরের নভেম্বরে চীন থেকে দেশে আসবে। সব আধুনিক সুযোগ সুবিধা থাকবে কোচে। এর মধ্যে অন্যতম স্লাইডিং ডোর। স্টেশনে যাত্রীর সংস্পর্শে স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে যাবে এটি। আবার সময় মতো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হবে। কোচে থাকবে মনিটর, গন্তব্যস্থলের জানতে এটা ব্যবহার করা হবে। এছাড়া সিসি ক্যামেরা থাকবে প্রতিটি কোচের মধ্যে, যাতে করে কোনো দুষ্কৃতিকারী অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটাতে পারে। আরও থাকছে বায়ো টয়লেট।
যে ১০০টি কোচ আনা হচ্ছে তার মধ্যে ২৫টি নন-এসি চেয়ার কোচ, ৩৫টি এসি চেয়ার কোচ, ১৫টি স্লিপার কোচ, ১৫টি ডাইনিং ও গার্ড রেক সংযুক্ত কোচ এবং ১০টি পাওয়ার কার রয়েছে। প্রতিটি কোচে আসন রয়েছে ১০০টি। এরমধ্যে একটা ট্রেন পরিচালনার জন্য ১৫টি কোচের প্রথম চালান আগামী নভেম্বর মাসের শেষ দিকে বা ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে। বাকিগুলো আসবে পরবর্তী চালানে।
কোচগুলো চীন থেকে বাংলাদেশে আনার পর কিছু কাজ করা হবে। বগি ও বডি সংযোজন করা হবে বাংলাদেশেই। এরপর সেগুলো ট্রায়াল রান করানো হবে। এসব কাজ করতে ২-৩ মাস সময় লাগবে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, প্রকল্পের আওতায় মোট ১০০টি কোচ সংগ্রহ করা হবে চীন থেকে। প্রথম লটে নভেম্বরে ১৫টি কোচ আসবে। এরপর ধাপে ধাপে বাকি ৮৫টি কোচ পৌঁছাবে দেশে। বর্তমানে যে সব আধুনিক কোচ দেশে এসেছে তার সব সুযোগ সুবিধা থাকবে। বাড়তি হিসেবে বায়ো টয়লেট, ওয়াইফাই, সিসি ক্যামেরা, মনিটর ও স্লাইডিং ডোর থাকবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে। নতুন করে রেল নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত হবে মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল। পাশাপাশি বাংলাদেশের মধ্যদিয়ে ঢাকা-যশোর-বেনাপোল-কলকাতা পর্যন্ত এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কের আরেকটি উপ-রুট স্থাপিত হবে। ফলে এ রুটে জাতীয়, আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক ফ্রেইট, ব্রডগেজ কনটেইনার ট্রেন চলাচল করতে পারবে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে চায়নার ঋণ ২১ হাজার ৩৬ কোটি ৬৯ লাখ এবং সরকারি অর্থায়ন ১৮ হাজার ২১০ কোটি টাকা।
অনন্যা চৈতী
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ